পাইকার ব্যবসায়ীরা জানান, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম ঘিরে নদী ও সাগরে ইলিশ শিকারে টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা ছিল। যে নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে ৩০ অক্টোবর রাত ১২টায়।
চরদুয়ানী থেকে মাছ বিক্রি করতে আসা শহীদুল বাংলানিউজকে বলেন, বলেশ্বরে জেলেদের জালে ধারা পড়ছে প্রচুর ইলিশ। তারা এসব মাছ বিক্রি করতে আসছেন এখানে। এসব মাছের মধ্যে ডিমওয়ালা ইলিশ বেশি।
তবে, বলেশ্বর ছাড়াও দুবলার চর, রায়েন্দা, ভোলা ও বরিশালের বিভিন্ন নদ-নদীর ইলিশও এ বাজারে আসছে বলে জানান কেসিসি রূপসা পাইকারি মৎস্য আড়তের মেসার্স মদিনা ফিস ট্রেডার্স পরিচালক মো. আবু মুসা।
তিনি জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে পুরোদমে মাছ ধরা শুরু করেছেন জেলেরা। জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকেঝাঁকে রূপালি ইলিশ। পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়ায় জেলে ও পাইকারদের মুখে হাসি ফুটেছে।
আড়তদার ফারুক বলেন, সাগরের মাছ এখনো তেমন আসা শুরু করেনি। নদীর ইলিশেই সকাল থেকে বাজার দখল করে ফেলছে। এককেজি ওজনের ইলিশের দাম ৭০০-৮০০ টাকা। ৮০০-৯০০ গ্রাম সাইজের ইলিশের দাম ৬৫০-৭০০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) ভোরে সরেজমিনে দেখা গেছে কেসিসি পাইকারি বাজার ইলিশে সরগরম হয়ে উঠেছে। ইলিশে সয়লাব হয়ে গেছে মাছের পাইকারি এ বাজার। বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্ষুদ্রব্যবসায়ী ও জেলেরা পাইকারি বাজারে ইলিশ নিয়ে আসতে শুরু করেন। ফলে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসায়ীদের হাঁকডাক, শ্রমিকদের কর্মব্যস্তায় মুখরিত হয়ে ওঠে পাইকারি এ বাজারটি। আর একসঙ্গে প্রচুর মাছের দেখা পেয়ে মহাখুশি জেলে থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। ইলিশের সরবরাহ অনেক বেশি থাকায় দামও মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। আর দাম কম হওয়ায় খুশি সব শ্রেণীর ক্রেতারা।
শেখ মো. আলী রেজা নামে এক ক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, ইলিশের দাম তুলনামূলক কম তাই এককেজি সাইজের ২৬ কেজি মাছ কিনেছি। তিন বন্ধু মিলে মাছগুলো ভাগ করে নেবো। মাছের কেজি পড়েছে ৭৪০ টাকা। এ বছর ইলিশের মৌসুমেও ১২০০-১৫০০ টাকার নিচে এককেজি ওজনের ইলিশ কেনা যায়নি। সেখানে এখন ৭৪০ টাকা কেজি।
আব্দুর রহিম নামে অপর এক ক্রেতা বলেন, ৫শ গ্রামের ইলিশ কিনেছি সাড়ে ৪শ টাকা কেজি দরে। ডিপফ্রিজে রেখে দেওয়ার জন্য বেশি করে মাছ কিনেছি।
কেসিসি রূপসা সাদামাছ আড়তদার বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুর রহমান জন্টু বাংলানিউজকে বলেন, নদ-নদীতে প্রচুর ইলিশ মাছ থাকার কারণে জেলেদের জালে মাছ উঠছে। যে কারণে অল্প সময়ের মধ্যে তারা মাছ ধরে বাজারে নিয়ে আসতে পারছেন।
ইলিশের পেটে ডিম রয়েছে এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, সঠিক সময়ে ইলিশের প্রজনন মৌসুম নির্ধারণ করা হয় না। যে কারণে পেটে ডিম রয়েছে।
তিনি বলেন, খুলনার সাত নম্বর ঘাট এলাকার মোকামে প্রচুর ইলিশ আসছে। ইলিশ মৌসুমের চেয়েও দাম কম হওয়ায় সাধারণ ক্রেতারাও ইলিশ কিনতে পারছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৯
এমআরএম/এএটি


