রাজশাহী: রাজশাহীর বাজারগুলোতে শীতের আগাম শাক-সবজি আসতে শুরু করেছে কয়েক সপ্তাহ ধরে। দিনে দিনে সবজির সরবরাহ বাড়লেও দাম কমছে না।
বরং লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সবজির দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে কেজি প্রতি সবজির দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, আপাতত দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। এ সপ্তাহ থেকে বাজারে শীতকালীন শাকসবজির সরবরাহ যেমন বেড়েছে তেমনি দামও বাড়ছে। শীত যত বাড়বে সবজির সরবরাহ আরও বাড়বে এবং তখন দাম কমতে পারে বলে জানান বিক্রেতারা।
রোববার (১১ অক্টোবর) রাজশাহীর সাহেব বাজার ঘুরে দেখা যায়, নানা ধরনের শীতের সবজির পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। বাজারে আগাম উঠেছে শীতের সবজি শিম। দাম প্রতি কেজি ১৬০ টাকা। প্রতি কেজি ফুল কপি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা দরে। এক সপ্তাহ আগেও ফুলকপির দাম ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা।
দুই সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হলেও দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচের। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। প্রতি কেজি সাদা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
অন্যান্য সবজির মধ্যে করলা ৬০ টাকায়, কাঁকরোল ৫০ টাকা, আলু ৩৫ টাকা, ঝিঙ্গা ৪৫ টাকা, শসা ৭০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, চালকুমড়া ৪০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০ টাকা, দেশি গাজর ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে, সেঞ্চুরিতে ঠেকা পেঁয়াজের দাম দুই সপ্তাহ ধরে স্থিতিশীল রয়েছে। দেশি পেঁয়াজ ৮৫ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজ ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে সবজির দাম বাড়লেও মাছ-মাংসের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি সোনালি মুরগি ১৯০ টাকা, দেশি মুরগি ৩৫০ টাকা এবং লেয়ার মুরগি ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫২০ থেকে ৫৩০ টাকায়, খাসির মাংস ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে সিলভার কার্প ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, পাঙ্গাশ ১০০ থেকে ১২০ টাকা, চিংড়ি ও গলদা চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, পাবদা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, কালবাউশ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
এছাড়াও রুই মাছ ওজন ভেদে প্রতি কেজি ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা, কাতল মাছ ২৫০ টাকা, শিং মাছ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৫০ টাকা এবং ট্যাংরা মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
সাহেব বাজারের সবজি বিক্রেতা মোল্লা মো. সাঈদ বাংলানিউজকে বলেন, রাজশাহীতে বন্যা ও অতিরিক্ত বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতায় নষ্ট হয়েছে সবজির আবাদ। ফলে চাহিদার তুলনায় বাজারে সরবরাহ কম। এতে সবজির দামও বাড়ছে। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে দাম কমতে দেরি হবে।
বাড়তি দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ক্রেতারা। সাহেব বাজারে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, সবজির দাম শুনে মাথা খারাপ হওয়ার মতো অবস্থা। ৪০ টাকার নিচে কোন সবজি বাজারে নেই। পালং শাক কিনলাম ৮০ টাকা কেজি। দামের কারণে সবজি ছোঁয়া যাচ্ছে না।
আরেক ক্রেতা আশরাফুল আলম ভুলু বলেন, আমি প্রতিদিনই বাজার করতে আসি। গত এক মাস ধরেই সব সবজির দাম অনেক বেশি। মাছ ও মাংসের দাম ঠিক থাকলেও সবজি কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রতি সপ্তাহে বাজারে পণ্যের দাম বাড়ে। ক্রমাগত বিভিন্ন পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২০
এসএস/এমজেএফ