ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জাবির হলে ছাত্রী হেনস্তার প্রতিবাদে প্রভোস্টের পদত্যাগ

জাবি করেসপডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২৩
জাবির হলে ছাত্রী হেনস্তার প্রতিবাদে প্রভোস্টের পদত্যাগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, (জাবি): বেগম সুফিয়া কামাল হলে চুরি ও ছাত্রীদের হেনস্তার প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন হল প্রভোস্ট অধ্যাপক মোতাহার হোসেন। সোমবার (১৩ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ বরাবর পদত্যাগ পত্র জমা দেন তিনি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে অধ্যাপক মোতাহার হোসেন বলেন, ২০১৯ ও ২০২১ সালে আমি নিরাপত্তার স্বার্থে হলের পূর্ব পাশের সীমানা প্রাচীরের উচ্চতা বৃদ্ধি, পর্যাপ্ত লাইটের ব্যবস্থা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে কয়েকবার চিঠি দিয়েছি। প্রশাসন এতে কোনো ভ্রুক্ষেপ করেনি। এমনকি ২০২১ সালে হ্যালজেন লাইটের জন্য বারবার আবেদন করার পরও প্রশাসন কোনো কিছুই বাস্তবায়ন করেনি। ফলে চুরি ও ছাত্রী হেনস্থার ঘটনাগুলো ঘটছে। এসব ঘটনায় মর্মাহত হয়ে প্রতিবাদস্বরূপ আমি পদত্যাগ করেছি।

এদিকে অধ্যাপক মোতাহার হোসেনের পদত্যাগের পর বেগম সুফিয়া কামাল হলের নতুন প্রভোস্ট হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলোজির (আইআইটি) অধ্যাপক কেএম আক্কাছ আলীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

অফিস আদেশে বলা হয়, কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে বেগম সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট ও আইবিএ-জেইউ’র অধ্যাপক ড. মো. মোতাহার হোসেন দায়িত্ব থেকে পদত্যাগপত্র গ্রহণপূর্বক ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির অধ্যাপক কে এম আক্কাছ আলীকে যোগদানের তারিখ হতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উক্ত হলের প্রভোস্ট নিয়োগ করা হলো। তিনি প্রচলিত নিয়মে সুবিধাদি ভোগ করবেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজকে কয়েকবার ফোন করা হয়। কিন্তু তার নম্বর বন্ধ ছিল।

জানা গেছে, গত ১২ মার্চ ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সুফিয়া কামাল, বেগম খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা হলে ঢুকে মেয়েদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও হেনস্তা করে অজ্ঞাত এক যুবক। এর আগে গত ৭ মার্চ ভোরেও শেখ হাসিনা হলে এমন ঘটনা ঘটে। সেদিন হল থেকে ১১০০ টাকা চুরি করে পালায় এক যুবক।

এ ঘটনায় রোববার রাতে চুরি, হেনস্তা ও নিরাপত্তাহীনতার প্রতিবাদে বেগম সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীরা মিছিল ও বিক্ষোভ করেন। এসময় তারা হলের সীমানা প্রাচীরের উচ্চতা কমপক্ষে ১০ ফুট বৃদ্ধি; পর্যাপ্ত সিসিটিভি স্থাপন ও সব সময় মনিটরিংয়ের জন্য দুয়েকজন কর্মী নিয়োগ; হলের চারপাশের মাটি ভরাট ও ফ্লাড লাইট স্থাপন; নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকাদের সঠিকভাবে কর্তব্য পালন; হলের পেছন দিকে অ্যাটেনডেন্ট রাখা; দুজন হল সুপারের উপস্থিতি নিশ্চিত; নিচতলার ডাইনিং ও গণরুমের জানালার পর্দা নিশ্চিতের দাবি উপস্থাপন করেন।

চুরির ঘটনায় প্রশাসনের পদক্ষেপের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি নাজমুল হাসান তালুকদার বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে অতি দ্রুত অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া তিনটি হলের জন্য গঠিত তিনটি কমিটি আগামী তিনদিনের মধ্যে উত্থাপিত সমস্যাগুলো সমাধান করে রিপোর্ট দেবে। এ ছাড়া প্রতিটি হলের প্রাচীর তারকাটাসহ উঁচু করা, হলে সার্চ লাইট স্থাপনসহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা দ্রুততর সময়ের মধ্যে কার্যকর করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২৩
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।