ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জুবায়ের হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে জাবিতে কর্মসূচি

জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৪
জুবায়ের হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে জাবিতে কর্মসূচি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি): শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা রক্ষা ও জুবায়ের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচির আয়োজন করে।



কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সংহতি সমাবেশ, প্রতিবাদী গান, আলোকচিত্র প্রদর্শনী।

‍এদিকে, জুবায়ের হত্যা মামলার আসামিদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হলেও তারা উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করে ক্যাম্পাসে অবাধে বিচরণ করছে। নিয়মিত ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।

এ কারণে জুবায়ের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে এবং নৈতিক অবস্থান থেকে জুবায়েরের বন্ধুরা হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে ইতোমধ্যে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করেন।

২০১২ সালে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে জুবায়ের হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিভিন্ন মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তৎকালীন ডেপুটি রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা) মো. হামিদুর রহমান বাদী হয়ে প্রথমে তিনজন ও পরে আরো ১০ জনসহ মোট ১৩ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন- খন্দকার আশিকুল ইসলাম (প্রাণিবিদ্যা বিভাগ), রাশেদুল ইসলাম রাজু (দর্শন বিভাগ), খান মো. রইছ (প্রাণিবিদ্যা বিভাগ), জাহিদ হাসান (প্রাণিবিদ্যা বিভাগ), ইসতিয়াক মেহবুব অরূপ (দর্শন বিভাগ), মাহবুব আকরাম (সরকার ও রাজনীতি বিভাগ), নাজমুস সাকিব তপু (প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ), মাজহারুল ইসলাম (ইতিহাস বিভাগ), কামরুজ্জামান সোহাগ (দর্শন বিভাগ), নাজমুল হোসেন প্লাবন (লোক প্রশাসন বিভাগ), শফিউল আলম সেতু (পরিসংখ্যান বিভাগ), অভিনন্দন কুণ্ডু (পরিসংখ্যান বিভাগ), মো. মাহমুদুল হাসান মাসুদ (ইতিহাস বিভাগ)।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রথম সাতজনকে আজীবন ও পরের ছয়জনকে দুই বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে। পরে তাদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে পোস্টারিং করে প্রশাসন।

প্রথমদিকে, মামলাটি ঢাকা মুখ্য হাকিম আদালতে বিচারাধীন থাকলেও আন্দোলনের মুখে পরে মামলাটি বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার সঙ্গে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে মামলাটি সেখানেই বিচারাধীন।

কিন্তু, সম্প্রতি বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার বিচারক রায় দেওয়া  হলেও জুবায়ের হত্যার মামলার শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণের কাজ এখনও শেষ হয়নি।

জুবায়েরের বন্ধুরা জানান, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন অনুযায়ী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে যে কোনো মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। তাই, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে মামলাটির বিচার কাজ শেষ করে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ আসামিরা যাতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না পারে, তারও দাবি জানান তারা।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি জুবায়ের আহমেদের ওপর  বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। আহতাবস্থায় জুবায়েরকে সাভারের এনাম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ৯ জানুয়ারি ভোরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

জুবায়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ৩৭তম ব্যাচের ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৪
সম্পাদনা: মিলিতা বাড়ৈ, নিউজরুম এডিটর/এবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।