কক্সবাজার: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার এসএসসি পরীক্ষার চকরিয়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৮৬টি উত্তরপত্র ছিঁড়ে ফেলেছে কিছু শিক্ষার্থী এবং বহিরাগত দুর্বৃত্তরা।
রোববার পরীক্ষার প্রথমদিন দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ কেন্দ্রের সচিব ও চকরিয়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, পরীক্ষার শেষ পর্যায়ে কেন্দ্রের বাইরে বাইরে গুজব ছড়িয়ে পড়ে পরীক্ষার্থীদের পুরো সময় পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি। পরীক্ষা শেষে উত্তরপত্র নিয়ে পরিদর্শকরা অফিসে ফেরার সময় বাহিরাগত কিছু লোক বাইরে থেকে ভেতরে ঢুকে অফিস কক্ষে হামলা চালায়। এ সময় তারা ও কিছু শিক্ষার্থী পরিদর্শকদের কাছ থেকে উত্তরপত্র কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে।
এ ঘটনায় তিনি চকরিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করেছেন বলে জানান।
তিনি আরো জানান, উচ্ছৃঙ্খল পরীক্ষার্থীরা হল পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা কয়েকজন শিক্ষককে প্রহার করা ছাড়াও দরজা, বেঞ্চ, সাইনবোর্ডসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন জানান, একটি মহল গুজব ছড়িয়ে বহিরাগতদের দিয়ে এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। তিনি পরিদর্শক, পরীক্ষার্থী, অভিভাবক, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার বিস্তারিত জেনে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এছাড়া এ ঘটনায় তিনি তাৎক্ষণিকভাবে এডিসি (শিক্ষা) এস এম আলাউদ্দিনকে তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান।
চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক নুরুল কবির জানান, রোববার এসএসসির বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষার দিন চকরিয়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় মাদ্রাসা শিক্ষকদের। ওই কেন্দ্রে কোরক বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীরাও পরীক্ষা দিচ্ছে। বাংলা প্রথমপত্রের লিখিত পরীক্ষা শেষে ১২টা ২০ মিনিটে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্র দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোনো কোনো কক্ষে ১২টা ৩০ মিনিটে ও ১২টা ৩৫ মিনিটে দেওয়া হয়। এছাড়া পরীক্ষা শেষে হওয়ার ৫ মিনিট ও ১০ মিনিট আগে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্র উঠিয়ে নেওয়া হয়।
তিনি আরো জানান, নিয়ম বহির্ভূতভাবে পাশাপাশি পরীক্ষার্থীদের মাঝে একই নৈর্ব্যক্তিক একই সেট বিতরণ, পরে ভুল বুঝতে পেরে আবার উঠিয়ে নিয়ে পুনরায় যথাযথ সেট বিতরণ করতে গিয়ে সময় নষ্ট করার কারণে এ ঘটনা ঘটে। দায়িত্বপ্রাপ্ত মাদ্রাসা শিক্ষকরা পরীক্ষার্থীদের প্রায় ২০ মিনিট সময় নষ্ট করে দেয়। বিষয়টি শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে বাইরে প্রচারিত হলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার জের ধরে ওখানে বহিরাগত এবং কিছু শিক্ষার্থী হামলা চালায়।
কোরক বিদ্যাপীঠের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাজী বশিরুল আলম জানান, পুরো হলের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা পুনরায় নিতে হবে। তাছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষকদের পরিদর্শকদের পদ থেকে প্রত্যাহার ও হল সুপারকে অব্যাহতি দিতে হবে।
এ ব্যাপারে চট্রগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আলী চৌধুরী জানান, ঘটনাটি শুনেছেন। এ ব্যাপারে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জানান, মন্ত্রনালয়ে কথা বলে ক্ষতিগ্রস্ত পরীক্ষার্থীদের আবার নতুন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২২১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৪