ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি মঙ্গলবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৪
জবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি মঙ্গলবার

ঢাকা: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বেদখল হওয়া হল পুনরুদ্ধার ও আবাসন সমস্যা নিরসনসহ ৮দফা দাবিতে আগামী মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে আন্দোলনরত ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের শিক্ষার্থীরা।

সমাবেশে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, বেদখল হওয়া হল উদ্ধার করতে সরকার দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।



রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষার্থীদের হল প‍ুনরুদ্ধার কমিটির আহ্বায়ক ও জবি ছাত্রলীগের সভাপতি এফএম শরিফুল ইসলাম এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

এসময় পরিষদের সদস্য সচিব ও জবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে সাময়িক বহিষ্কার ও তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান শরিফুল ইসলাম।

হল প‍ুনরুদ্ধার কমিটির আহ্বায়ক এসএফ শরীফুল ইসলাম বলেন, এর আগেও বিভিন্ন কর্মসূচিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের ওপর নির্যাতন ও মামলা করেছে। রোববারের মহাসমাবেশে শিক্ষকরা যোগ না দিয়ে আমাদের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ হাজার শিক্ষার্থীর কথা চিন্তা করে আপনাদের রোবারের সমাবেশে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আপনারা এটা না করে আমাদের আন্দোলনের অগ্রসৈনিক হল উদ্ধার কমিটির সদস্য সচিব এসএস সিরাজুল ইসলামকে মিথ্যা মামলা ও তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছেন।

আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করলে সাধারণ ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে বুধবার থেকে লাগাতার ছাত্র ধর্মঘট ডাকা হবে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মহাসমাবেশে বলেন, আমরা যখন এই দাবিতে ২০০৯ সালে আন্দোলন শুরু করেছিলাম তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের দাবির প্রতি অনাস্থা জানিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল।

এছাড়া বিভিন্ন আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে সবসময় তৎপর ছিল।

মহাসমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি এমএম জসিম বলেন, সংসদ সদস্যের জন্য কোটি কোটি টাকা রাজস্ব বাদ দিয়ে গাড়ি কিনতে পারলে ২০ হাজার ছাত্র-ছাত্রীর জন্য কেন কয়েকটি হল করে দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, সরকারের মন্ত্রী বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করাসহ নানা সুযোগ সুবিধা দেয়ে ভোট পাওয়া আশায়, কিন্তু এখানে কোনো ভোটের রাজনীতি না থাকায় এ সমস্যা নিয়ে কথা বলারও কেউ নেই।

বাঙালি জাতি সহজে দাবি মেনে নেয় না জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু প্রেসক্লাব ও শহীদ মিনারে আন্দোলন করলে হবে না, প্রয়োজনে শিক্ষামন্ত্রীকে মাসের পর মাস অবরুদ্ধ করে রাখতে হবে।

এর আগে সকাল পৌনে দশটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে অবিলম্বে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বেদখল হওয়া
হলগুলো ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান গণসংগীত শিল্পী ফকির আলমগীর।

তিনি বলেন, এখানে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে এবং যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছে। বিসিএস পরীক্ষাসহ অধিকাংশ পাবলিক পরীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শীর্ষস্থান অধিকার করে তাদের যোগ্যতার প্রম‍াণ দিয়েছে।

তিনি সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে বলেন, মেধাবী শিক্ষার্থীদের ডাকা আন্দোলনে সাড়া দিয়ে বেদখল হলগুলো উদ্ধার করে দিন।

সকাল পৌনে ১০টার দিকে বেদখল হওয়া হল উদ্ধার, নতুন হল নির্মাণ ও অবকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে জবির হল পুনরুদ্ধার ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ শুরু হয়।

সমাবেশের শুরু থেকেই প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করে হাজারো শিক্ষার্থী হলের দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ কাঁপিয়ে তুলছেন। হল ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে চলে কবিতা আবৃত্তি, গণসংগীত, হল ও দেশাত্মবোধক গান।

মহাসমাবেশে বক্তব্য রাখেন-ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সদস্যসচিব বহিষ্কৃত ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম সিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক ও ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি আল আমিন মাহদী, জবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি কাজী মোবারক হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সুজাউল হক প্রমুখ।

এছাড়া আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য ও সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিভিন্ন বিভাগের ছাত্র-ছাত্রী, সাংষ্কৃতিক ও স্বেচ্চাসেবক সংগঠনসহ দেশের বিভিন্ন কলেজের ছাত্র সংগ্রাম কমিটি।

শিক্ষক সমিতির প্রত্যাখ্যান:  হল প‍ুনরুদ্ধার আন্দোলনে শিক্ষকদের থাকার কথা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব এবং শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম সিরাজুল ইসলামের ‘সন্ত্রাসী’ আচরণের কারণে শিক্ষক সমিতি ছাত্র মহাসমাবেশ বর্জন করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।