ঢাকা: বিএনপি জোটের হরতাল-অবরোধে ধুকছে শিক্ষাব্যবস্থা। সব চেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে উচ্চশিক্ষা।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তথ্যমতে, একদিন হরতালে প্রায় ৩০ লাখ শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
জামায়াতের হরতাল দিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বছর। আর ৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় বিএনপি জোটের টানা অবরোধ। অবরোধের মধ্যে কয়েক দফায় টানা হরতাল পালন করেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দল।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সকাল ছয়টা থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত টানা হরতাল পালন করে ২০ দলীয় জোট। এরপর ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা ৭২ ঘণ্টার হরতাল ডেকে মঙ্গলবার তার সঙ্গে আরো ৪৮ ঘণ্টার হরতাল জুড়ে ১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টা পর্যন্ত নেওয়া হলো।
অবরোধে কম শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতির মধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস হলেও হরতালে বন্ধ থাকছে পুরোপুরি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের একই অবস্থা। আর এতে ক্ষতির মুখে পড়েছে উচ্চশিক্ষা স্তরের লাখ লাখ শিক্ষার্থী।
ইউজিসির সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন (২০১৩) অনুযায়ী, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ২৩ লাখ ৫০ হাজার ৮৯৭ শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করছে। তবে বর্তমানে এই সংখ্যা আরও বেড়েছে।
ইউজিসি চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী) এ কে আজাদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, সারা দেশে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং অধিভূক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ৩০ লাখ শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষায় রয়েছে। হরতাল-অবরোধে এক দিন করে নষ্ট হলে ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর ৩০ লাখ দিন নষ্ট হচ্ছে।
ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, হরতাল-অবরোধ-বোমাবাজিতে শিক্ষাজীবন ধ্বংস হচ্ছে। এখনই এগুলো থামাতে হবে। কারণ শিক্ষা ধ্বংস হলে কিসের গণতন্ত্র?
উচ্চ শিক্ষাসহ শিক্ষার সকল স্তরের এই ক্ষতিতে উদ্বেগ জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
প্রথম শ্রেণি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত যারা লেখাপড়া করছে তারা আগামী ২৫/৩০ বছর রাজনীতি-অর্থনীতি-সমাজ-বিজ্ঞানী সকল ক্ষেত্রে দেশের নেতৃত্ব দেবে।
আতঙ্ক, ভয়-ভীতির মধ্যে এই প্রজন্ম যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তার জন্য আগামী ২৫/৩০ বছর আমাদের খেসারত দিতে হবে বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী।
মঙ্গলবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, এটা উপলব্ধি করার মত আমাদের অনেক রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যেও নেই, তারা ভাবতেও পারেন না।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৫