খুলনা: খুলনা মহানগরীর আহসান আহমেদ রোডের আরএস কোচিং সেন্টারে এস এম সাদমান খান নামে তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। স্কেল দিয়ে পেটানোর কারণে ওই শিশু শিক্ষার্থীর ডান হাতের বাহুতে রক্ত জমাট বেঁধে গেছে।
বৃহস্পতিবার (২ জুন) কোচিংয়ে শান্তনু নামে এক শিক্ষক সেন্ট যোসেফ স্কুলের ওই শিক্ষার্থীকে এভাবে বেধড়ক পেটান। শুক্রবার (৩ জুন) পর্যন্ত ব্যথায় কাঁতরাচ্ছে শিশুটি।
এ ঘটনা জানাজানির পর শুক্রবার সাপ্তাহিক পরীক্ষা থাকলেও অভিযুক্ত শিক্ষক ও কোচিংয়ের পরিচালক সেন্টার বন্ধ রেখে গা ঢাকা দিয়েছেন।
সাদমানের সহপাঠীরা জানায়, শিক্ষক শান্তনু কোচিংয়ের ব্লাক বোর্ডে ৩০টি প্রশ্ন লিখে দেন। সেগুলো লিখে নিতে দেরি হওয়ায় সাদমানকে স্কেল দিয়ে পিটিয়ে জখম করেন শান্তনু।
সাদমানের বাবা মো. আল-আমিন খান বাংলানিউজকে জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে সাদমান কোচিং সেন্টার যায়। এ সময় শিক্ষক শান্তনু তাকে স্কেল দিয়ে পেটালে তার ডান হাতের বাহুতে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। মারপিটের পর থেকে ভয়ে এখনও শিশুটি অস্বাভাবিক আচরণ করছে।
তিনি আরও জানান, ঘটনার পর কোচিং কর্তৃপক্ষ বারবার ক্ষমা চাইছে।
শুক্রবার আরএস কোচিং সেন্টারে গিয়ে ভবনের প্রধান ফটকে তালাবদ্ধ দেখা যায়। সে কারণে সাপ্তাহিক পরীক্ষার্থী শিশুদের এনেও ফিরে যান অভিভাবকরা।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে আরএস কোচিং সেন্টারের প্রধান পরিচালক রতন সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে মোবাইল ফোনে বাংলানিউজকে বলেন, আপনারা যা করতে পারেন করেন। সরকার চেষ্টা করেও কোচিং বন্ধ করতে পারেনি। স্কুল কলেজে ক্লাস হয় না। ছেলে-মেয়েরা সেখানে কিছু শিখতে পারে না। যে কারণে সচিব, পুলিশসহ সবার ছেলে-মেয়ে আমাদের কাছে পড়ে।
স্যারদের কাছে শিখতে গেলে মার খেতে হয়- বলেও কথা শুনিয়ে দেন আরএস কোচিং সেন্টারের পরিচালক রতন।
তবে, অভিযুক্ত শিক্ষক শান্তনুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
এদিকে শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় ওই কোচিংয়ের অভিভাবকদের মাঝেও চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির জোর দাবি জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জানান, কোচিংয়ে প্রায় ৫শ’ ছেলে-মেয়ে পড়ে। বেশ কয়েকবার এ ধরণের ঘটনা ঘটিয়েছে এ কোচিংয়ের শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চলের পরিচালক টিএম জাকির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। কোচিং বাণিজ্যের নামে ছাত্র নির্যাতন কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। এদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, অভিযুক্ত কোচিং ও শিক্ষকের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০১৬
এমআরএম/এইচএ/