ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ভর্তির জন্য দৌড়ঝাপ, অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন শূন্য!

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৬
ভর্তির জন্য দৌড়ঝাপ, অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন শূন্য!

চলছে ভর্তি পরীক্ষার মৌসুম। দেশের একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্তে ছুটছেন ভর্তিচ্ছুরা। এ সপ্তাহে ঢাকা তো পরের সপ্তাহে সিলেট, সকালে পরীক্ষা দিয়ে আরেক পরীক্ষার জন্য রাতেই শত মাইল পাড়ি!

ঢাকা: চলছে ভর্তি পরীক্ষার মৌসুম। দেশের একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্তে ছুটছেন ভর্তিচ্ছুরা।

এ সপ্তাহে ঢাকা তো পরের সপ্তাহে সিলেট, সকালে পরীক্ষা দিয়ে আরেক পরীক্ষার জন্য রাতেই শত মাইল পাড়ি!
 
এইচএসসি শেষে অবসরের সময়টুকুতে স্ট্যাডি, কোচিং-প্রাইভেট-মডেল টেস্ট। ফরম পূরণ করে শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষার জন্য এখন ছুটছেন সারাদেশে। ভর্তিচ্ছুদের সঙ্গে ছুটছেন তার অভিভাবক, বাবা-মা।  
 
উচ্চশিক্ষার আশায় ভর্তিচ্ছুদের এমন দৌড়ঝাপ থাকলেও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে শূন্য থাকছে আসন। আবার কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আসনের বিপরীতে ভর্তি করানো হয় অতিরিক্ত শিক্ষার্থী।
 
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সবশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু ২০১৫ সালে সরকারি ১৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন শূন্য ছিল ৫৪২টি। পাশাপাশি ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিরিক্ত শিক্ষার্থীও ভর্তি করানো হয়েছিল ১ হাজার ১৯৫ জন।
 
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বলছে, শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় বছর ভালো জায়গায় চান্স পেয়ে চলে গেলে আর কিছু করার থাকে না।
 
শূন্য আসন
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ৩০ আসনে ভর্তি হয়েছিল ১ হাজার ১৮ জন, শূন্য আসন ১২টি। চট্টগ্রামে ৪ হাজার ৫৮৮টি আসনের বিপরীতে ভর্তি হয় ৪ হাজার ৪১৫ জন, শূন্য ১৭৩টি।
 
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭৬০ আসন থাকলেও শূন্য ১৬টি, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৯০ আসনে ৯৩টি, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) ৮১০ আসনে ১০২টি, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৭০ আসনে ৫৭টি, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৬০ আসনে ১০টি, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯০২ আসনের ৩টি শূন্য ছিল।
 
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬১০ আসনের মধ্যে ৭টি, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০০ আসনের মধ্যে ১৪টি শূন্য।
 
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯৭৫ আসনের মধ্যে ৩৯টি, বিইউপি’তে ৫৬২ আসনের মধ্যে ৬টি, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ৩৬৫ আসনের মধ্যে শূন্য ১০ আসন।
 
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ লাখ ৬১ হাজার ৮১৯ আসনের মধ্যে ৬ লাখ ১৬ হাজার ৭৭৪ জন ভর্তি হয়েছিল, এখানে শূন্য আসন ৪৫ হাজার ৪৫টি। আর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৮ হাজার ৩১ আসনের মধ্যে ৩৭ হাজার ৮১৩ জন ভর্তি হয়, শূন্য ছিল ২১৮ আসন।
 
জাতীয় ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট আসন সংখ্যা ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৮৫০টি আসনের মধ্যে ৬ লাখ ৫৪ হাজার ৫৮৭ জন ভর্তি করানো হয়। শূন্য আসন ছিল ৪৫ হাজার ২৬৩টি।
 
আসন শূন্য থাকা প্রসঙ্গে রুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, কোনো ছাত্র ভর্তি হয়ে দ্বিতীয়বার মেডিকেলের চান্স পেয়ে চলে গেলে আসন শূন্য হয়। দ্বিতীয় বছর চলে গেলে আর আসন পূর্ণ করা সম্ভব হয় না।
 
অতিরিক্ত ভর্তি
২০১৫ সালে ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ১৯৫ জন অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ হাজার ৮৮৮ আসনের বিপরীতে ৭ হাজার ২৯৯ জন, অতিরিক্ত ৪১১; রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ হাজার ৮৩৮ আসনের বিপরীতে ৪ হাজার ৪২ জন, অতিরিক্ত ভর্তি ২০৪ জন।
 
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ২০০’র বিপরীতে ১ হাজার ২০১ জন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ৪৬৫ আসনের বিপরীতে ১ হাজার ৬২৭ জন, অতিরিক্ত ১৬২ জন ভর্তি করানো হয়।
 
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ৪৪৮ আসনের বিপরীতে ১ হাজার ৫৬৭ জন, অতিরিক্ত ভর্তি ১১৯ জন।
 
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ২৫ আসনের বিপরীতে অতিরিক্ত ভর্তি ২৪ জন, মাওলানা ভাষানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭৭২ আসনের বিপরীতে অতিরিক্ত ৭৬ জন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ হাজার ৮৪৫ আসনের বিপরীতে অতিরিক্ত ১২১ জন ভর্তি করানো হয়।

জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮২৫ আসনে অতিরিক্ত ৪৫ জন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ আসনে অতিরিক্ত ২৪ জন এবং টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৪০ আসনের বিপরীতে অতিরিক্ত ৮ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়।
 
বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি এবং মাওলানা ভাষানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক মো. আলাউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, প্রথমবর্ষে ভর্তি হয়ে অনেকে অন্য কোথাও সুযোগ পেয়ে চলে যায়। ফলে আসন পূর্ণ করা সম্ভব হয় না।
 
কোনো শিক্ষার্থী চান্স পেয়েও ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হোক, এটা আমরা চাই না; বলেন ভিসি আলাউদ্দিন।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৬
এমআইএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।