ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বড়াইগ্রামে ১১ মাস বেতন পান না ১৪ শিক্ষক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৭
বড়াইগ্রামে ১১ মাস বেতন পান না ১৪ শিক্ষক

নাটোর: নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৪ জন সরকারি শিক্ষক ১১ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। দীর্ঘদিন বেতন বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবন-যাপন করলেও কর্মকর্তাদের রোষানলে পরার ভয়ে এ বিষয়ে কোথাও অভিযোগ পর্যন্ত করতে সাহস পাচ্ছেন না তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষা অফিস থেকে ভুল তথ্য পাঠানোর কারণে তাদের এ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে ওই ১৪ শিক্ষক তাদের বেতন ছাড়ের জন্য আবেদন জানাতে এলে কথা হয় স্থানীয় সাংবাদিকের সঙ্গে।

কিন্তু তারা নাম প্রকাশে অপারগতা প্রকাশ করেন জানান, পুল শিক্ষক হিসেবে উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তারা বিভিন্ন সময় যোগদান করে মাসিক ৬ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করছিলেন।

পরে উচ্চ আদালতের নিদের্শের ভিত্তিতে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সরকারি শিক্ষক হিসেবে নতুন করে যোগদান পান।

এর আগে ২০১৬ সালের মে মাস থেকে জানুয়ারি-২০১৭ পর্যন্ত ৯ মাস তাদের বেতন দেওয়া হয়নি। আবার ১ ফেব্রুয়ারি সরকারি শিক্ষক হিসেবে যোগদান করলেও ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত কোনো বেতন পাননি। নতুন-পুরাতন মিলে মোট সাড়ে ৯ মাস তারা চাকরি করছেন কিন্তু কোনো বেতন-ভাতা পাননি।

এসময় তারা আরও জানান, নানা সময় শিক্ষা অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বেতনের পরিবর্তে অশোভন আচরণ পেয়েছেন। নতুন ভাবে সরকারি হওয়ার পর বেতন ফিক্সেশানের সময় মিষ্টি খাওয়ার নামে প্রত্যেকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অংকের টাকা নেওয়া হয়েছে। এখন হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা জানাচ্ছেন ফিক্সেশানে নানান ধরনের ভুল রয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসের প্রধান হিসাবরক্ষক হাবিবুর রহমান জানান, যথা সময়ে চাহিদা পাঠাতে গিয়ে ভুলে ১৪ জন পুল শিক্ষকের চাহিদা বাদ পড়েছিল। কিন্তু ভুল ধরা পড়ার পর থেকে নিয়মিত চাহিদা পাঠানো এবং ঢাকায় যোগাযোগ করা হচ্ছে। খুব শিগগিরই বরাদ্দ চলে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অপর অফিস সহকারী মনছুর রহমান জানান, প্রথম বেতন ফিক্সেশানের সময় কিছু ভুল হতে পারে। তারা কোনো শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা দাবি করেননি। তারা খুশি হয়ে কিছু দিলে তা তারা নিয়েছেন।

বড়াইগ্রাম উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, শিক্ষা অফিসের করা ফিক্সেশান যাচাই করতে গিয়ে প্রথমেই ভুল ধরা পড়ায় সর্তকতার সঙ্গে সবগুলো যাচাই করতে সময় লাগছে। তিনি বলেন, যোগে ভুল, আবার বড়াইগ্রামের পরিবর্তে বাগাতিপাড়া উপজেলায় ফিক্সেশান পোস্টিংসহ বিভিন্ন ভুল ধরা পড়ায় বেতন ছাড় করতে দেরি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষা অফিস অযথাই প্রায় আড়াই মাস সময় নিয়েছে। এরপরেও ভুলে ভরা। তবু যাচাইয়ের কাজ শেষ পর্যায়ে হয়তো অল্প সময়ের মধ্যেই ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের বেতন ছাড় করা সম্ভব হবে। আর নতুন বরাদ্দ না এলে বকেয়া ৯ মাসের বেতন দেওয়া সম্ভব হবে না।

বড়াইগ্রাম উপজেলা শিক্ষা অফিসার আকলিমা খানম বাংলানিউজকে জানান, তিনি নতুন যোগদান করেছেন। এ বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। তবে  খোঁজ নিয়ে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, ১৮ এপ্রিল, ২০১৭
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।