এ ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাবের মাধ্যমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ইংরেজি বলা ও লেখার দক্ষতা অর্জনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এসব শিক্ষক আবার স্কুলের শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে দক্ষ করে তুলবেন।
ময়মনসিংহে নেপ ক্যাম্পাসে যুক্তরাজ্য সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত ইংরেজি শিক্ষার কার্যক্রম ইংলিশ ইন অ্যাকশনের (ইআইএ) সহযোগিতায় এই ল্যাঙ্গুয়েজ প্রতিষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
কর্মকতারা বলছেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা চাকরির জন্য বিদেশে যায়। কিন্তু ইংরেজি না জানা বা কম জানার কারণে অন্যান্যদের তুলনায় অর্ধেক বেতন পায়। এই অসমতা দূর করতে প্রাথমিক স্তর থেকেই শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে দক্ষ করে তোলা হবে।
জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির মহাপরিচালক ফজলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সারা দেশে ২০ হাজার শিক্ষককে ইংরেজি বলা ও লেখার দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রশিক্ষণের টার্গেট ধরা হয়েছে। এজন্য কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
নেপ’র ভাষা অনুষদের সহকারী বিশেষজ্ঞ ও ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাবের ফোকাল পার্সন নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাবে ল্যাপটপ, ইন্টারনেট, হেডফোনের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আর নেপ দেবে প্রশিক্ষণের স্থান এবং অন্যান্য অবকাঠামোগত সুবিধা।
তিনি বলেন, রিটেন এবং স্পোকেন মেথড তৈরি করে পিটিআই ইন্সট্রাকটর, ডিপিও, এটিওদের প্রশিক্ষণ দেওয়া। তারা পরবর্তীতে প্রত্যেক স্কুলের দু’জন করে শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেবেন। ওই শিক্ষকরা স্কুলের শিক্ষার্থীদের ইংরেজি শেখা ও বলার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবেন।
“আমাদের ছেলে-মেয়েরা বিদেশে যায়, ইংরেজি জানা না থাকায় তারা অন্যদের তুলনায় অর্ধেক বেতন পায়। এই বিষয়টি মাথায় রেখে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ। ”
তবে ল্যাপটপ, ইন্টারনেট, হেডফোন, প্রশিক্ষণের বই-পুস্তকের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বরাদ্দ নাই জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের কাছে টাকা-পয়সা চাওয়া হয়নি। ইংলিশ ইন অ্যাকশন প্রশিক্ষণের বিষয়ে সাপোর্ট দেবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, গত মার্চে এ ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাব চালুর কথা থাকলেও এপ্রিলেও শুরু হয়নি। নেপ’র নজরুল ইসলাম বলেন, ইংলিশ ইন অ্যাকশনের সঙ্গে মিটিং করেও দ্রুত ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাব স্থাপনের জন্য বলা হয়েছে।
নেপ এর অধীন পরিচালিত বাংলাদেশ সার্টিফিকেট ইন এডুকেশন বোর্ডের সচিব মো. শাহজাহান কবির বাংলানিউজকে বলেন, ইংলিশ ইন অ্যাকশনের সঙ্গে শুধুই মিটিং হচ্ছে। তারা এখন পর্যন্ত কোনো টেকনিক্যাল সাপোর্ট করেনি। চালু করার জন্য আমাদের নিজস্ব ফান্ডও নাই।
তবে ফ্যাকাল্টি মেম্বারদের দু’বার ও পিটিআই প্রশিক্ষকদের ৬টি ট্রেনিং দিয়েছে বলে জানান শাহজাহান কবির।
ইংলিশ ইন অ্যাকশনের ডেপুটি টিম লিডার জহির বাংলানিউজকে বলেন, ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জনের জন্য আমরা তাদের কিছু লেসন সরবরাহ করব। একটি সেন্টার অব এক্সিলেন্স গড়ে তোলা হবে। এজন্য প্রাথমিক কাজগুলো শুরু হয়েছে।
নেপ থেকে রুম বরাদ্দ পাওয়া গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ মাসের শেষ বা আগামী মাসের শুরুর দিকে চালু করা হবে। দক্ষতা অর্জনের জন্য ইতোমধ্যে বেশকিছু প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে ইংরেজিতে দক্ষতার অর্জনের জন্য আরও পরিকল্পনা নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নজরুল ইসলাম খান বাংলানিউজকে বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষকদের ইংরেজি দক্ষতার জন্য একটা প্ল্যান অব অ্যাকশনের ডিজাইন তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও খুলনায় কার্যক্রম শুরু হবে।
এতে শিক্ষকদের রিডিং স্কিলস বাড়বে এবং শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে বলে জানান নজরুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৭
এমআইএইচ/এসএইচ