এভাবেই যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগের কারণে অস্বস্তিকর অবস্থার কথা বলছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আবদুল বাসিত।
শুধু জগন্নাথ হলের সীমানা প্রাচীর ধরে শামসুন্নাহার হল পর্যন্ত রাস্তা নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার অন্তত আটটি স্পট আছে যেখানে এভাবেই মলমূত্র ত্যাগ করা হচ্ছে।
স্পটগুলো হচ্ছে স্মৃতি চিরন্তনের উল্টো পাশে ফুলার রোড়, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের সীমানা প্রাচীর, কার্জন হলের বিপরীতে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের পূর্ব পাশের দেয়াল, তিন নেতার মাজারের বিপরীত পাশ, টিএসসি থেকে বিএনসিসির অফিস (তুলনামূলক কম), সড়কদ্বীপের পশ্চিম পাশ, বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের বিপরীত পাশ, টিএসসি থেকে শাহবাগ পর্যন্ত রাস্তার পূর্ব পাশ, এফ রহমান হলের পূর্ব পাশের দেয়াল।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকায় মলমুত্র ত্যাগের ফলে সবসময় স্যাঁতস্যাতে অবস্থা বিরাজ করে। এখানে মলমূত্রত্যাগকারীদের অধিকাংশই রিকশাচালক, সিএনজি চালক বা ভ্যানচালক। অনেকে গাড়ি থামিয়ে প্রস্রাব করেন এসব স্থানে। এতো বেশি সংখ্যক লোক এখানে মূত্র ত্যাগ করে যে, তা ড্রেন গড়িয়ে রাস্তায় চলে আসে। এতে পথচারীদের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। একটু বৃষ্টি হলে সড়কদ্বীপের নালায় জমা হওয়া প্রস্রাবের উৎকট দুর্গন্ধে হাঁটা যায় না। বৃষ্টির পানি ও নালার পানি একত্রে মিশে অস্বস্তিকর অবস্থা তৈরি করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী মুনিরা দিলশাদ ইলা বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ হবে মনোরম। ঢাবি ক্যাম্পাসে ঠিক তার উল্টো। এ ধরনের পরিবেশ কাম্য নয়। যারা এসব কাজ করে তারা সবাই বহিরাগত। কর্তৃপক্ষ কয়েকটি স্পটে পাবলিক টয়লেট স্থাপন করলেই এই সমস্যাটা কমবে।
এদিকে স্যার এ এফ রহমান হলের দেয়ালে প্রস্রাব করলে ২০০ টাকা জরিমানা করার কথা লেখা আছে। কিন্তু এখানে প্রস্রাব যারা করে, তাদের ওপর জরিমানার কোনো প্রয়োগ নেই। ফলে সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করা হচ্ছে অবাধে।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, রাস্তার ধারে মানুষের এভাবে মলমূত্র ত্যাগের সময় পাশ দিয়ে যারা হেঁটে যান তাদের পড়তে হয় চরম বিব্রতকর অবস্থায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টিএসসির পরিচালক মহিউজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, এভাবে যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগের কারণে আশপাশের পরিবেশ দুষিত হয়ে পড়ছে। এই কাজ বন্ধ করার জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিশেষ কোনো অনুষ্ঠান থাকলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলি পরিষ্কার করার জন্য।
এছাড়া নালা পরিষ্কার করার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগ দেখে থাকে বলে জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল কালাম সিকদারকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, রাস্তা পরিষ্কার করার কাজ সিটি কর্পোরেশন করে। আমরা করি না।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, এই অপকর্ম বন্ধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
এসব জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয় ফুলের চারা রোপণ করার পরিকল্পনা করছে বলে জানান তিনি।
** ঢাবিতে বাড়ছে ভবন, কমছে সবুজ
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৭
এসকেবি/জেএম