এছাড়া পরীক্ষার সময়ে ইন্টারনেট ও ফেসবুক বন্ধ রাখার বিষয়ে আলোচনা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পেলেই কেবল পরীক্ষার দিনে কিছু সময় ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হবে।
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্ত ও ইতিবাচক পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সোমবার (০৮ জানুয়ারি) সচিবালয়ে জাতীয় মনিটরিং কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত ও আলোচনা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সভায় সভাপতিত্ব করেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পরীক্ষা সুষ্ঠু, নির্বিঘ্ন ও নকলমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানের জন্য আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ছড়ানোরোধ, ফেসবুকে প্রশ্ন সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয় এবং কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, আসন্ন এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদেরকে পরীক্ষা শুরুর আধাঘণ্টা আগে অবশ্যই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করে স্ব স্ব আসনে বসতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের অজুহাত গ্রহণযোগ্য হবে না এবং এর ব্যত্যয়ে পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না।
‘কোনো পরীক্ষার্থীর হাতে কোনো মোবাইল ফোন পাওয়া গেলে তাকে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার করা হবে। নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ’
সভায় আরো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরুর তিনদিন আগে থেকে শুরু করে সব পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত দেশে সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। এ সময়ের মধ্যে কোনো কোচিং সেন্টার খোলা রাখা যাবে না।
সভায় জানানো হয়, পরীক্ষাকেন্দ্রে কেউ স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবে না। শুধুমাত্র কেন্দ্র সচিব একটি সাধারণ ফোন ব্যবহার করতে পারবেন।
সভায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আসন্ন এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা সম্পূর্ণ নকলমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা নকল প্রতিরোধে আক্রমণাত্মক থাকবে। কোনো শিক্ষক-কর্মকর্তা এর সঙ্গে জড়িত থাকলে তাকে সঙ্গে সঙ্গে বহিষ্কারসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনাও দেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সভায় পরীক্ষা শুরুর আগে থেকে পরীক্ষা চলাকালীন দেশে ইন্টারনেট ও ফেসবুক বন্ধ রাখার ব্যাপারেও আলোচনা হয়।
ইন্টারনেট ও ফেসবুক বন্ধের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, প্রস্তুতিমূলক সভায় প্রশ্ন ফাঁস এড়াতে বিভিন্ন অপশন রাখা হয়েছে।
‘কোনোভাবে প্রশ্ন ফাঁস করে ফেসবুকে দিতে না পারে সেজন্য কনসার্ন মিনিস্ট্রিকে জানানোর আলোচনা হয়েছে ওই সময় বন্ধ রাখা যায় কিনা, তবে বন্ধ রাখার মালিক আমরা না, এটা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত না। ’
তবে কয়েকদিনের মধ্যে এ বিষয়ে সার্কুলার দিয়ে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান সভায় উপস্থিত থাকা এ অতিরিক্ত সচিব।
আরেক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন ইন্টারনেট ও ফেসবুক বন্ধ রাখার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মতামত দিয়েছেন। বন্ধ রাখার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে বলা হবে।
সভায় কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাহাবুবুর রহমান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. অরুনা বিশ্বাস ও জাবেদ আহমেদ, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস, বিজি প্রেসের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৮
এমআইএইচ/জেডএস