ফলে ‘খ’ সেট প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়ে ফলাফল বিপর্যয়ের আশঙ্কায় পড়েছে ২৫১ পরীক্ষার্থী। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র সচিবের অদক্ষতা ও অবহেলার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পরীক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের।
এসএসসি পরীক্ষার শেষ দিন ছিল শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি)। শেষ পরীক্ষা দিয়ে অনেকটা স্বস্তির আশায় ছিল শিক্ষার্থীরা। কিন্তু সেই স্বস্তির পরিবর্তে হতাশা আর দুশ্চিন্তায় পড়েছে সাদুল্যাপুর উপজেলার ২৫১ জন পরীক্ষার্থী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাদুল্যাপুর উপজেলায় চলতি এসএসসি পরীক্ষার জন্য একটি দাখিল কেন্দ্রসহ মোট ৬টি পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে সাদুল্যাপুর উপজেলা শহরেই দু’টি কেন্দ্র অবস্থিত। পরীক্ষার দিনে পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে ‘ক’ সেটের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হয়। কিন্তু ব্যতিক্রম ঘটে সাদুল্যাপুর উপজেলা শহরের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত সাদুল্যাপুর বহুমূখী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। সেখানে ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ে অংশ নেয় উপজেলার ১০টি বিদ্যালয়ের ২৫১ জন পরীক্ষার্থী। শিক্ষক ও পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, দিনাজপুর বোর্ডের আওতাধীন সব কেন্দ্রে ‘ক’ সেটের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য বোর্ড নির্দেশনা দেয়। কিন্তু কেন্দ্রে সচিবের দায়িত্বে থাকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনশাদ আলী সরকারের অবেহেলা ও অদক্ষতার কারণে ‘ক’ সেটের পরিবর্তে হল রুমের শিক্ষকদের হাতে দেন ‘খ’ সেটের প্রশ্নপত্র। যথা সময়ে শিক্ষকরা প্রশ্নপত্র পরীক্ষার্থীদের হাতে দেয়। এরপর পরীক্ষার্থীরা ‘খ’ সেটের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়েই বের হয়ে আসে। পরে পরীক্ষার্থীরা শিক্ষকসহ অন্য কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার সময়ে এ ভুলটি ধরা পড়ে। বিষয়টি জানাজানি পর ফলাফল কি হবে এ নিয়ে হতাশ হয়ে পড়ে পরীক্ষার্থীরা। এ খবর পৌঁছালে সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা দেয় অভিভাবকসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে।
সাদুল্যাপুর কেএম পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোস্তাফিজার রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘কেন্দ্রে দায়িত্বরত সচিব, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহেলা ও অদক্ষতার কারণে ‘ক’ সেটের পরিবর্তে ‘খ’ সেটের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এমন ভুলের সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। সে সঙ্গে বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে দেখে উত্তরপত্র বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের প্রতি দাবি জানান।
কেন্দ্রে সচিবের দায়িত্বে থাকা ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনশাদ ভুলক্রমে ভিন্ন সেটের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার কথা স্বীকার করলেও বোর্ড কর্তৃপক্ষের পাঠানো এসএমএস’র (মোবাইল ম্যাসেজ) অস্পষ্টতাকেই দায়ী করে বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিষয়টি বোর্ডকে অবগত করা হয়েছে। বোর্ডের সিদ্ধান্তে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে একটি পত্রসহ খাতাগুলো বোর্ডে পৌঁছাতে হবে। তাছাড়া এ নিয়ে ফলাফল বিপর্যয়ের কোনো কারণ নেই। তাই পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই’।
সাদুল্যাপুর উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) মোছা. রহিমা খাতুনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ভুল তো হয়েছে, সেটার সমাধানও করা হবে। ইতোমধ্যে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বোর্ড কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। এছাড়া কেন এমন ভুল হলো তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৮
আরবি/