বৃহস্পতিবার (৩ মে) আন্দোলনের মুখে জবির বাংলা বিভাগের ১০ ব্যাচের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিত করে প্রশাসন। এ সময় অন্য যেসব বিভাগের পরীক্ষায় ৭০শতাংশ উপস্থিত নেই।
সরজমিনে দেখা যায়, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে তাদের দাবির পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা বাংলা বিভাগের ১০ ব্যাচের ও ইতিহাস বিভাগের অষ্টম ব্যাচের পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে বলে খবর পান। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ভাষা শহীদ রফিক ভবনের সেই বিভাগ দু’টিতে যান এবং পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
তবে পরীক্ষা কমিটি থেকে কোনো সাড়া না আসায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নুর মোহাম্মদ প্রক্টরিয়াল বডিকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে উপস্থিত প্রক্টরসহ বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস ও সহকারী প্রক্টরেরা। পরীক্ষা বাতিল না করা পর্যন্ত কোনো কথাই কর্ণপাত করতে রাজি হননি শিক্ষার্থীরা।
ঘটনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থালে আসেন জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেল। তিনিও বাংলা বিভাগের পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশ করেন। এ সময় দেখা যায়, বাংলা বিভাগের দশম ব্যাচের সেই পরীক্ষায় কেবল পাঁচজন শিক্ষার্থী উপস্থিত রয়েছেন।
অন্যদিকে ইতিহাস বিভাগের পরীক্ষায় প্রায় ৮০শতাংশের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। পরে সাধরণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে জবি ছাত্রলীগের সমর্থন ঘোষণা করে এই কয়েকজন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল করার জোর দাবি জানান শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক। একইসঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্লোগান আর দাবির মুখে পরীক্ষা বাতিল করতে বাধ্য হয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পরে উপাচার্যের বরাদ দিয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস বলেন, ‘উপাচার্যের নির্দেশ মতে বাংলাবিভাগের পরীক্ষা বাতিল করছি ও একইসঙ্গে আগামী দিনের পরীক্ষাগুলো সময়মতো চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান এবং একমাত্র ফটক আটকে রাখায় ক্যাম্পাসে আসেননি উপাচার্য ড. মিজানুর রহমান। ক্যাম্পাসের মূল ফটকের রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডির কয়েক দফায় বাগবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। যা শিক্ষার্থীদের আরো কঠিন হতে বাধ্য করে বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. নুর মোহাম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি শিক্ষক। আমি তাদের একজন অভিভাবকও বটে। তাই তাদেরকে শাসন করার অধিকার আমি রাখি। ’
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রক্টর বলেন, ‘আপনাদের দাবির যৌক্তিকতা আছে। আপনাদের শিক্ষকের অপসারণ প্রত্যাহার চান। বিষয়টি নিয়ে নিয়মের মধ্যে দিয়ে যান। শুরুতেই এমন উগ্র আচরণ করলে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবো। নাসির স্যারের বিষয়ে ভিসি স্যার বেশ আন্তরিক। উনি চিঠি পাওয়ার পরে, বিচারের পুনঃবিবেচনার জন্য আবেদন করলে হয়তো শিথিল হতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১৮
কেডি/এএটি