প্রথমে হলে এসে পরিবারের সদস্যদের ছাড়াই একটা ভিন্ন পরিবেশে বন্ধুদের সঙ্গে মিলেমিশে ইফতার করেছেন। পরিবার ছেড়ে আসার বেদনায় তখন মনে মধ্যে একরকম খারাপ লাগা কাজ করলেও পরবর্তীতে বন্ধুরাই হয়ে ওঠেন ক্যাম্পাস জীবনের আনন্দ-বেদনার সার্বক্ষণিক অংশীদার।
নিজের এমন অনুভূতি ব্যক্ত করে খাইরুল বাংলানিউজকে বলেন, প্রথম বর্ষে ক্যাম্পাসে এসে গণরুম থেকে শুরু করে ডাকসু, টিএসসি, উদ্যান, সিনেট ভবনসহ কোন জায়গা বাদ রাখিনি। একেকদিন একেক জায়গায় ইফতার করেছি। বন্ধুরা মিলে পুরান ঢাকা থেকে বৃষ্টির দিনে কষ্ট হলেও ইফতার এনেছি। এখন সব স্মৃতি। তবে এবারের ইফতারের আয়োজনটা একই সঙ্গে আনন্দ এবং বেদনার। হল ছেড়ে দেওয়ার এই সময়েও বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে ইফতার করতে পারছি এটা যেমন আনন্দের তেমনি আর কখনো এভাবে তাদের সঙ্গে বসা হবে না এভাবনাটি অত্যন্ত বেদনার।
প্রতি বছর যারা হল ছেড়ে চলে যান তাদের অনুভূতি খাইরুলের মতোই। রমজানের উৎসবমুখর ইফতার তারা মিস করেন। শেষ হয় আনন্দ-বেদনার স্মৃতিগুলো ভাগাভাগি করার ক্যাম্পাস (হল) জীবন।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ে রমজানের ছুটি শুরু হলেও পরীক্ষার জন্য অনেক শিক্ষার্থী বাসায় যেতে পরেননি। আর চাকরি প্রত্যাশীরাতো আছেনই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পোসে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন হল ক্যান্টিন, দোকানগুলো থেকে ইফতারি তৈরির বিভিন্ন আইটেম সংগ্রহ করে। বিকেল হতেই দোকানগুলো ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চার-পাঁচটি দোকান তাদের ইফতারির আইটেমগুলো সাজিয়ে রেখেছে। এর মধ্যে রয়েছে ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ, জিলাপি। শসা, পেঁয়াজ, ধনিয়া পাতা, কাঁচা-মারিচ সব কেটে প্যাকেট করে রেখেছেন বিক্রেতারা। শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দমতো কিনছেন। পরেই সব উপাদান মিক্স করে হলের মাঠ, কক্ষ, মেস কক্ষে ইফতারিতে অংশ নেয়।
কথা হয় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র শামীম রাজা মাহিনের সঙ্গে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এবারই প্রথম ভিন্ন পরিবেশে ইফতার করছি। পরিবারের সদস্যদের মনে পড়লেও বন্ধুদের হৃদ্যতা সেটি অনেকটা কেটে গেছে। গতবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রতিটি হলে একদিন ইফতার পরিবেশন করা হবে বলে বিভিন্ন হলের আবাসিক শিক্ষকরা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৮
এসকেবি/এসএইচ