ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

সোয়া ৩ কোটি নিরক্ষরের জন্য সাক্ষরতা জ্ঞান কর্মসূচি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৮
সোয়া ৩ কোটি নিরক্ষরের জন্য সাক্ষরতা জ্ঞান কর্মসূচি সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন গণশিক্ষা মন্ত্রী

ঢাকা: দেশে বিদ্যমান তিন কোটি ২৫ লাখ নিরক্ষরকে সাক্ষরতা জ্ঞানের মাধ্যমে নিরক্ষরতা দূর করতে দীর্ঘমেয়াদী কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, বর্তমানে দেশে সাক্ষরতার হার ৭২ দশমিক ৯ শতাংশ, গত বছর ছিল ৭২ দশমিক ৩ শতাংশ।  
 
আগামী ৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।


 
মন্ত্রী বলেন, নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে সাক্ষরতা জ্ঞান প্রদান, অব্যাহত ও জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি, কর্মসংস্থান, আত্ম-কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং বিদ্যালয় বহির্ভূত শিশু-কিশোরদের শিক্ষার বিকল্প সুযোগ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সরকার উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন-২০১৪ প্রণয়ন করেছে। বর্তমান সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় দেশে বর্তমানে সাক্ষরতার হার ৭২ দশমিক ৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
 
‘দেশ থেকে নিরক্ষরতা সম্পূর্ণরূপে দূর করা ও দেশের প্রতিটি মানুষকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং এসডিজি-৪ এর লক্ষ্য অর্জনের জন্য সরকার ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মাধ্যমে দেশে থেকে নিরক্ষরতা দূরীকরণের উদ্দেশ্যে ১৫ ও তদুর্ধ্ব বয়সী ৪৫ লাখ নিরক্ষর নারী-পুরুষকে সাক্ষরতা জ্ঞান প্রদানের জন্য উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো ‘মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্প (৬৪ জেলা)’ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ’
 
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা সাব-সেক্টরে একটি দীর্ঘমেয়াদী সেক্টরওয়াইজ অ্যাপ্রোচ প্রোগ্রাম হিসেবে ‘উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (এনএফইডিপি)’ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। এ কর্মসূচির আওতায় দেশে বিদ্যমান তিন কোটি ২৫ লাখ নিরক্ষরকে সাক্ষরতা জ্ঞান প্রদানের মাধ্যমে দেশ থেকে নিরক্ষরতা দূর করা; বিদ্যালয় বহির্ভূত ৮-১৪ বছর বয়সী ১০ লাখ শিশুর উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা প্রদান; ৫০ লাখ নব্য-সাক্ষরকে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করে কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।
 
এছাড়াও মানুষের জ্ঞান ও দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ তৈরির জন্য জীবনব্যাপী শিক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়ন; জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি, সাক্ষরতা ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা, বিদ্যালয় বহির্ভূত শিশুদের উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে এবং কিছু শহর এলাকায় মোট ৫ হাজার ২৫টি আইসিটিভিত্তিক স্থায়ী কমিউনিটি লার্নিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা এবং প্রতিটি জেলায় একটি করে মোট ৬৪টি স্থায়ী ‘জীবিকায়ন দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠা করা হবে।
 
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ১৯৬৬ সাল থেকে এ দিবসটি উদযাপিত হয়ে আসছে। স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উদযাপনের উদ্যোগ নেন। এ বছর ইউনেস্কো নির্ধারিত প্রতিপাদ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এবারের স্লোগান ‘সাক্ষরতা অর্জন করি, দক্ষ হয়ে জীবন গড়ি’।
 
নিরক্ষরতা দূরীকরণের প্রতিবন্ধকতা বিষয়ে এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার কার্যক্রম মাঝখানে বন্ধই হয়েছিল, অধিদফতর বাতিল করে দিয়েছিল এ কর্মসূচি। এটার জন্য একটা গ্যাপ হয়ে গিয়েছে। এই সরকার ২০১৪ সালের আসার পর ৪৫২ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। উন্নয়ন সহযোগিদের সহযোগিতা পরিপূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে।
 
‘আমাদের লক্ষ্য যতক্ষণ নিরক্ষর মানুষ থাকবে একজনও, ততক্ষণ পর্যন্ত সরকার এটা চালিয়ে যাবে। আমাদের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে কাজ করে যাবো। ’
 
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সচিব আসিফ-উজ-জামান এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৮
এমআইএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।