শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দশম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে নানা এসব স্মৃতি তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
জাতীয় নেতা শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হেনাকে স্মরণ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘রাজশাহীর সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি।
‘একটি ছোট কক্ষে সিঙ্গেল বেডে দু’জনকে আড়াআড়ি করে থাকতে হতো। আমি কিছুটা চিকন-চাকন ছিলাম, হেনা ভাই মোটাসোটা ছিলেন। আমরা ঘুমালেই ২-৩ মিনিট পর হেনা ভাই এমন নাক ডাকা শুরু করতেন তখন আর ঘুমের কাছে যাওয়া সম্ভব হতো না। আর তিনি ঘুমে নড়াচড়া করলে প্রায়ই বিছানা থেকে ফ্লোরে পড়ে যেতাম। আজ তা মনে পড়ে...। ’
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, আমি যখন ক্লাস এইট থেকে নাইনে (নবম শ্রেণী) উঠি তখন পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ হয়। এতে আমার বাবা খুব বকাঝকা করেছিলেন। পরে রাগ করে টিকেট ছাড়া ট্রেনে করে সারা বাংলাদেশ ঘুরে বেড়িয়েছি। ওই সময় আমি রাজশাহীতেও এসেছিলাম। তখন রাজশাহীতে ঘোড়ার গাড়িকে টমটম বলতো। ওই টমটমে চড়ে আমি রাজশাহী এসে দু’দিন ঘোরাঘুরি করেছি।
সামরিক শাসনামলে রাজবন্দি হিসেবে রাজশাহী জেলে বন্দি থাকার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, রাজশাহীতে আরেকবার আসা হয়েছিলো ১৯৭৬ সালে আমি যখন জেলে ছিলাম। আমাকে ময়মনসিংহ জেল থেকে ট্রান্সফার করে কুষ্টিয়া ও সেখান থেকে রাজশাহী জেলে ট্রান্সফার করা হয়। তখন আমি সাত মাস জেলে ছিলাম। রাজশাহীর পদ্মার পাড়ের যতো বালি আছে তার অর্ধেক জেল খানার বিছানায় পড়তো। ঘুমানোর সময় বিছানা পরিষ্কার করে ঘুমাতে হতো।
এদিকে, একদিনের সরকারি সফরে এসে শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) স্মৃতিবিজড়িত রাজশাহীর পদ্মাপাড়ে যাওয়ার কথা ছিল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের। এজন্য সব কিছু আগে থেকেই প্রস্তুত রাখা হয়। কিন্তু সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসায় রাষ্ট্রপতি সেখানে যেতে পারেননি।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক এস এম আব্দুল কাদের বাংলানিউজকে বলেন, এর আগে ২০১৭ সালের পহেলা নভেম্বর রাষ্ট্রপতি রাজশাহী সফরে আসেন। ওই সময় নির্ধারিত কর্মসূচির বাইরে তিনি রাজশাহীর পদ্মার পাড়ে কিছুটা সময় কাটান। নৌ ভ্রমণেও বের হন। এছাড়া রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শনে যান। তাই আগাম প্রস্তুতি হিসেবে পদ্মার টি- গ্রোয়েন এলাকা ও কারাগারের খাপড়া ওয়ার্ডটি পরিদর্শনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল। কিন্তু সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসায় তা পরিদর্শনে যেতে পারেননি রাষ্ট্রপতি।
বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৮
এসএস/এএইচ