সময়ের পরিক্রমায় সমাজের গোঁড়ামির বাঁধা ডিঙিয়ে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত এ প্রতিষ্ঠানে বাড়ছে ছাত্রী সংখ্যা। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগ্রহ করা ছাত্র-ছাত্রীদের তিন বছরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে অধ্যয়নরত ছাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে এক হাজারেরও বেশি।
২০১৫ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কলা অনুষদে ছাত্রী সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৪৬৬ জন, বিজ্ঞান অনুষদে ৭৮৯ জন, আইন অনুষদে ১৮১ জন, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদে ১ হাজার ৮২৫ জন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে ১ হাজার ৭১৭ জন, জীব বিজ্ঞান অনুষদে ১ হাজার ২০৯ জন,ফার্মেসি অনুষদে ১০১ জন, আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদে ৩০৭ জন, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদে ৩৩৪ জন, চারুকলা অনুষদে ৪৫২ জন। এছাড়া ইনস্টিটিউটসমূহে ২ হাজার ৩৬২ জন। সবমিলিয়ে ওই বছর মোট ছাত্রী সংখ্যা ছিল ১১ হাজার ৭৭৪ জন।
২০১৬ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কলা অনুষদে ছাত্রী সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৬৩৪ জন, বিজ্ঞান অনুষদে ৮৩৮, আইন অনুষদে ১৫২, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদে ২ হাজার ২৯২, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে ১ হাজার ৯৬৯, জীব বিজ্ঞান অনুষদে ১ হাজার ২৪১, ফার্মেসি অনুষদে ৮৮, আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদে ৪১০, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদে ২৯৪ এবং চারুকলা অনুষদে ৩১৮ জন। এছাড়া ইনস্টিটিউটসমূহে ছাত্রী ছিল ১ হাজার ৭৮৫ জন। সবমিলিয়ে সে বছর ঢাবিতে ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ২৪।
২০১৭ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, কলা অনুষদে ছাত্রীর সংখ্যা ২ হাজার ৭৮১জন, বিজ্ঞান অনুষদে ৯৮৯, আইন অনুষদে ১৬৭, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদে ২ হাজার ৫৬৩, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে ১ হাজার ৮৯৬, জীব বিজ্ঞান অনুষদে ১ হাজার ২৭৮, ফার্মেসি অনুষদে ১৩৯, আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদে ৪০৩, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদে ৩৩২ এবং চারুকলা অনুষদে ৩৬৩ জন। আর ইনস্টিটিউট সমূহে ২ হাজার ২ জনসহ সব মিলিয়ে এ বছর ছাত্রীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১২ হাজার ৮৩২ জনে।
হিসাবে ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে ছাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে ১ হাজার ৫৮ জন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বাংলানিউজকে বলেন, মেয়েদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক ধরনের প্রতিবন্ধকতাকে মোকাবেলা করতে হয়। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে ছাত্রীদের সংখ্যা বৃদ্ধি আমাদেরকে আশান্বিত করে। বর্তমানে বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে রোল মডেল হয়ে উঠছে।
ছাত্রীদের সংখ্যা বৃদ্ধিকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান সময়ে বিশ্বদ্যালয়ের জন্য খুবই আনন্দের সংবাদ। এটি হঠাৎ করে হয়েছে, এ রকমটা নয়। দীর্ঘ দিন ধরে স্কুল-কলেজ লেভেলে মোটিভেশনের ফলে সমাজের লোকজনের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করেছে।
ড. নাসরীন আহমাদ আরও বলেন, নারীরা শিক্ষিত হলে পরিবার ও নিজের জন্য ভালো- সেটা সবাই অনুধাবন করার চেষ্টা করছে। সরকারও বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। বিশেষ করে যোগ্যতা থাকলে লিঙ্গ ভেদাভেদ না করে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটিও একটি বার্তা। সবচেয়ে বড় কথা হল নারীদের উচ্চশিক্ষাকে সমাজ গ্রহণ করতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২৮
এসকেবি/এইচএ/