বুধবার(২২ জানুয়ারি) উপজেলার কুমড়ীরহাট এসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির গণপিটিশন বিভিন্ন দফতরে পাঠিয়েছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার কমলাবাড়ি ইউনিয়নের কুমড়ীরহাট এসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম কাজল দাবিকরা ঘুষের ৮লাখ টাকা না পেয়ে ক্ষমতার অপব্যাবহার করে সহকারী শিক্ষক (গণিত) মনোয়ারুল ইসলামের বেতন বন্ধ করেন।
বুধবার(২২ জানুয়ারি) বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে অভিভাবক ও স্থানীয়রা গণস্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে পাঠান। যার অনুলিপি জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘুষ না দেওয়ায় শিক্ষকের বেতন বন্ধ করলেন প্রধান শিক্ষক
এ দিকে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম কাজল তার বিরুদ্ধে প্রকাশিত নিউজের প্রতিবাদ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে বেতন বন্ধের প্রতিবাদে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দায়ের করা শিক্ষক মনোয়ারুল ইসলামকে সপরিবারে এলাকা ছাড়ার হুমকী দিচ্ছেন বলে ওই শিক্ষক দাবি করেন। পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে শিক্ষক মনোয়ারুলের দায়ের করা জিডিও নথিভুক্ত করেনি থানা পুলিশ। জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে চরম শঙ্কায় ওই শিক্ষকের পরিবার।
অভিযোগে বলা হয়, কুমড়ীরহাট এসসি উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০১৩ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন কামরুল ইসলাম কাজল। তিনি যোগদানের পর নির্বাচন ছাড়াই মনগড়া পরিচালনা কমিটি গঠন করে একের পর এক সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়ম করে প্রতিষ্ঠানটিকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। বিদ্যালয়ের জমিতে থাকা অতিপ্রাচীন কিছু গাছ কেটে এবং বিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণের বিনিময়ে পাওয়া কয়েক লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম কাজল। অনিয়মই তার কাছে নিয়মে পরিণত হয়েছে। ফলে প্রতিষ্ঠানে দিন দিন শিক্ষার মান নিম্নমুখী হচ্ছে।
আরও পড়ুন: একই ব্যক্তি পাচ্ছেন দুই পদের বেতন!
মনগড়া কমিটির মাধ্যমে ভুয়া শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন সরকারি অর্থ। যোগদান না করেও ওয়াহেদ আলী নামে একজন শিক্ষকের নামে প্রতি মাসে দেওয়া হচ্ছে বেতন ভাতা। ওই অদৃশ্য শিক্ষক ওয়াহেদ আলী কালীগঞ্জ উপজেলার আমার বাড়ি আমার খামাড় প্রকল্পে মাঠ সহকারী পদে কর্মরত থেকে ২০১৪ সাল থেকে সরকারিভাবে বেতন-ভাতা ভোগ করছেন। প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম কাজল এ ভুয়া শিক্ষকের নামে আসা বেতন নিজে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করার পায়তাড়া করছেন বলে অভিভাবকদের দাবি।
প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম দাবি করা ৮ লাখ টাকা ঘুষ না পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পাস মেধাবি শিক্ষক মনোয়ারুল ইসলামের বেতন বন্ধ করে গলাধাক্কা দিয়ে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেন। সাম্প্রতিক সময় ওই শিক্ষকের করা অভিযোগে এ বিষয়ে শিক্ষা বিভাগ তদন্তে নামলে ভুয়া অব্যাহতি পত্র দেখান প্রধান শিক্ষক।
অভিভাবক বজলুল করিম ও শিব্বির আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, প্রধান শিক্ষক কামরুল নির্বাচন ছাড়াই মনগড়া কমিটি গঠন করে বিদ্যালয়কে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। প্রতিবাদ করলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করেন। ঘুষের প্রতিবাদ করায় শিক্ষক মনোয়ারুলের বেতন বন্ধ করে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দিয়েছেন। প্রধান শিক্ষকের সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২০
এসএইচ