বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তো বটেই সঙ্গে প্রাকৃতিক শোভা টেনে আনছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকেও ঘুরতে আসা বিভিন্ন বয়সের মানুষদের।
এবার বসন্তের প্রথম দিন আর ভালোবাসা দিবস একই দিনে, ১৪ ফেব্রুয়ারি হওয়ায় ক্যাম্পাসে ফুলপ্রেমীদের ঢল নামবে বলে আশা করছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আশিক বিশ্বাস বলেন, ফুলে ফুলে ভরে গেছে খুবি ক্যম্পাস। গাছ ঠাঁসা ফোটা এসব ফুলের মিষ্টি সুবাসে পাগল পারা মৌমাছি আর প্রজাপতিরা। যা দেখে মুগ্ধ সবাই। পয়লা ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবস প্রতিবছর পিঠাপিঠি দিন হলেও এবার একই দিনে। তাই এক সঙ্গে দুই দিবস পালন করবে তরুণ প্রজন্মসহ নানা বয়সী মানুষ। যে কারণে ক্যাম্পাসে রয়েছে ওই দিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন।
একই ডিসিপ্লিনের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, বসন্তের আগমনে প্রকৃতিকে যেমন আসে সজিবতা বা পরিবর্তন। ঠিক তেমনটি নানা রকমের ফুলে আমাদের ক্যাম্পাস ভরে উঠেছে। ফাল্গুনের হাত ধরেই বসন্তের আগমন। পয়লা ফাল্গুন বা পহেলা ফাল্গুন বাংলা পঞ্জিকার একাদশতম মাস ফাল্গুনের প্রথম দিন ও বসন্তের প্রথম দিন। এবার সেই দিনই ভালোবাসা দিবস। যে কারণে ওইদিন খুবি ক্যাম্পাসে ফুলপ্রেমীদের জনস্রোত থাকবে। ফুল বাগানের মালি মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, ফুল চাষের আগে যেসব প্রস্তুতি নেওয়া দরকার তার সবই করা হয়েছিলো। যে কারণে ফুলে ফুলে ভরে গেছে ক্যাম্পাস। এবার বেশি ফুটেছে ইনকা গাঁদা, জাম্বু গাঁদা, ডালিয়া, সিলভিয়া ফুল, স্টার, পিটুনিয়া ফুল। এক স্থানে এত বেশি ফুল ফোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনে মৌমাছি বাসা বেঁধেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট (সম্পত্তি) শাখার উপ-রেজিস্ট্রার কৃষ্ণপদ দাশ জানান, আমরা অনেক আগেই এই ফুলের বাগার গড়ার উদ্যোগ গ্রহণ করি। এখানে অনেক দর্শনার্থী প্রতিদিন ভিড় করেন। বিশেষ করে বিশেষ দিনগুলোতে এখানের ফুলের সৌন্দর্য দেখতে জনস্রোত তৈরি হয়।
খুবির জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এসএম আতিয়ার রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ক্যাম্পাসের নানা রঙের ফুলের আবির আর মৌ মৌ গন্ধে কেড়ে নিচ্ছে বিষাদ। ভালোবাসার প্লাবনে ভাসিয়ে দিচ্ছে মন। সব আবেদন, অনুরাগ, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা বহি:প্রকাশের বড় মাধ্যম ফুল। যে কারণে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসছে ক্যাম্পাসে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান ক্যাম্পাসে ফুলচাষে বিশেষভাবে আগ্রহী। তার আগ্রহে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পরিকল্পিতভাবে শীতকালীন ফুলচাষ হয়েছে। খুলনা শহরের কোথাও এত ফুল আর নেই। এ ব্যাপারে উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুলের চাষে বিশেষভাবে নজর দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় তো সৌন্দর্যের জায়গা। বিশ্ববিদ্যালয় তো সৌন্দর্যচর্চার একটি অংশ। সত্য, সুন্দর এবং কল্যাণ এই বিষয়গুলো বিশ্ববিদ্যালয় লালন করে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকলে যদি শিক্ষার্থীদের মন ভালো হয়ে যায় সেটাইতো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাজ। আমরা তারই অংশ হিসেবে প্রতিবছর ফুলচাষে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিই। এ বছর অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি ফুলের চাষ করা হয়েছে। এর পেছনে বিনিয়োগ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালযয়ের ভেতরে যে ফুলের সমারোহ এটা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের না বাইরে যারা রয়েছেন তারাও কিন্তু বিশ্ববিদ্যালের এই সৌন্দর্য দেখতে আসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩ , ২০২০
এমআরএম/এএটি