এ সময় চলতি প্রস্তাবিত বাজেটে অনার্স-মাস্টার্স শাখা এমপিও ভুক্তিকরণের দাবি জানান। বুধবার (২৪ জুন) দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে শতভাগ বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক। ১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যাবধি সরকারি-বেসরকারি কলেজে নয় শতাধিক কলেজে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্সে পাঠদান করা হচ্ছে। যার মধ্যে সরকারি কলেজ ২৯৯টি, সদ্য জাতীয়করণ করা ৩০২টি কলেজের অধিকাংশগুলোতে এবং বাকি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি এমপিওভুক্ত কলেজগুলোতেও অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে। যেখানে পড়াশোনা করছে প্রায় চার লক্ষাধিক ছাত্র-ছাত্রী। সদ্য জাতীয়করণ করা কলেজ বাদে বর্তমানে যশোরে ২৫টি বেসরকারি এমপিওভুক্ত কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু আছে। সরকারি কলেজের বেশিরভাগ শিক্ষকরাই বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক, আর জাতীয়করণকৃত কলেজ এবং বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের সবাই নিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক। বেসরকারি এমপিওভুক্ত কলেজগুলোতে অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে পাঠদানকারী এসব শিক্ষকরা জনবলকাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত না। নিয়মানুযায়ী, জনবলকাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত নয় বা প্যাটার্ন বহির্ভুত শিক্ষকদের শতভাগ বেতন ও ভাতা করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দুঃখের বিষয়, শিক্ষকদের সম্মানির কথা বলে পাঠদানরত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কলেজভেদে, অন্যান্য খরচবাদে মাসিক ৩০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা নিলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ কখনই এসব শিক্ষকদের সঙ্গে সুবিচার করেনি। যশোরের ক্ষেত্রে, কলেজভেদে এসব শিক্ষকদের সম্মানি সর্বনিম্ন দুই হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার টাকা দেওয়া হয়। অনেক কলেজ দীর্ঘদিন বেতন দেয় না, অনেক কলেজ নানাভাবে ফান্ড শূন্য দেখিয়ে বেতন বন্ধ করে দেয়, বেতনের দাবি করলে চাকরিচ্যুত করার হুমকিও দেয়। আবার অনেক কলেজ কর্তৃপক্ষ অনার্স-মাস্টার্স কোর্স খোলা হয়ে গেলে এসব শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে তাড়িয়ে দেয়। যশোরসহ সারাদেশের অবস্থা একই, যা করোনা প্রাদুর্ভাবে আরও প্রকট হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমরা শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতির কাছে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) মাধ্যমে স্মারকলিপি দিয়েছি ও তাদের সঙ্গে বৈঠক করে যখন সবকিছু গুছিয়ে আনি, তখনই ভিসির বিরোধিতায় সব ভেস্তে যায়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি করার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তার মূল লক্ষ্য হলো উচ্চশিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য করা। টাকার বিনিময়ে তিনি অযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু করার অনুমোদন দিচ্ছেন। যিনি শিক্ষকদের রুটি-রুজির বিপক্ষে অবস্থান নেন তিনি শিক্ষাবান্ধন উপাচার্য হতে পারেন না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি বৃহৎ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাবান্ধন উপাচার্য প্রয়োজন। তাহলেই কলেজগুলো গতি ফিরে পাবে। সেকারণে সংবাদ সম্মেলনে দ্রুত উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন অর রশিদের পদত্যাগের দাবি করে প্রস্তাবিত বাজেটে তাদের এমপিওভুক্ত করার দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফোরাম যশোর জেলা কমিটির সদস্য শরিফুল ইসলাম, কামরুল ইনাম আহম্মেদ, ইকবাল হোসেন, প্রভাষক শরিফুল, বিপ্লব কুন্ডু, আব্দুল কুদ্দুস প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২০
ইউজি/আরআইএস/