ঢাকা: দেশব্যাপী বিস্তৃত ফোরজি কানেক্টিভিটির সুবিধা গ্রহণ, শিক্ষার্থীদের দোরগোড়ায় সিম কার্ড পৌঁছে দেওয়া এবং তাদের প্রয়োজনীয় বিষয়ের সঙ্গে সংযুক্ত রাখতে গ্রামীণফোনের সঙ্গে পার্টনারশিপ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ।
অন্তর্ভুক্তিমূলক কানেক্টিভিটি সুবিধার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সম্ভাবনাসমূহকে উন্মোচন করে তাদের সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অনেকগুলো পদক্ষেপের মধ্যে এ ধরনের উদ্যোগ এটিই প্রথম।
বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) গ্রামীণফোন বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এ পার্টনারশিপের মাধ্যমে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের নিবন্ধিত সব শিক্ষার্থীদের শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা মেটাতে সাশ্রয়ী ও গুণগতমানের ফোরজি ডাটা সুবিধা দেওয়া হবে। দেশের যেকোনো জায়গা থেকে শিক্ষকদের ডিজাইনকৃত শিক্ষা বিষয়ক কনটেন্টও এরমধ্যে অন্তর্ভুক্ত। গ্রামীণফোনের বিস্তৃত ফোরজি নেটওয়ার্ক কাভারেজ শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষের অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সল্যুশনটি ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের শিক্ষকদের কন্ট্রোল প্যানেল ও ড্যাশবোর্ড ব্যবহারের সুবিধা দেবে। শিক্ষকরা এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় এসএমএস দিতে পারবেন এবং যোগাযোগ করতে পারবেন।
সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের শিক্ষকরা গ্রামীণফোনের বিস্তৃত পরিসরের আইসিটি সমাধানগুলো ব্যবহারের সুযোগ পাবেন এবং এর মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রমে ডিজিটাইজেশনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী টেকসই সমাধান নিয়ে আসতে পারবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা শিক্ষা অনুষদ ‘ভবিষৎ বিনির্মাণে উচ্চ শিক্ষায় সম্ভাবনার দ্বার উম্মোচন’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারের মাধ্যমে এ সমঝোতা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ আব্দুল মঈনের সঞ্চলনায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন।
এ নিয়ে ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, কোভিড-১৯ আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করেছে। শিক্ষাখাতেও এর প্রভাব লক্ষণীয়। এ পরিস্থিতিতে আমাদের ডিজিটাল শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে, কেননা একটি দেশের উন্নতির জন্য শিক্ষাখাতের অগ্রগতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের নতুন জ্ঞান সৃষ্টি ও দক্ষতা অর্জন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রামীণফোনের এ উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই এবং আমরা প্রত্যাশা করি এ ধরনের উদ্যোগ তারা আরও বিস্তৃত পরিসরে ছড়িয়ে দেবে।
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (অ্যাকাডেমিক) ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে পুরো বিশ্ব স্থবির হয়ে পড়েছে। তা সত্ত্বেও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এ যুগে কানেক্টিভিটির মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় কাজ করতে পেরেছি। শিক্ষার্থীদের বিকাশের জন্য ইন্ডাস্ট্রি ও অ্যাকাডেমিয়ার মধ্যে সমন্বয় দরকার। এ ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কর্মসূচি গ্রহণের জন্য গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ। গ্রামীণফোনের এ ধরনের উদ্যোগ চলমান থাকবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ আব্দুল মঈন বলেন, অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম ও জরুরি দূর শিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে আমরা অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি। এরমধ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য সাশ্রয়ে ডাটা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা অন্যতম। গ্রামীণফোনের সঙ্গে অংশীদারিত্বের এ সমস্যা দূর হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, চলমান বৈশ্বিক মহামারির নতুন স্বাভাবিকতায় পুরো বিশ্ব নতুন ডিজিটাল বিপ্লব প্রত্যক্ষ করছে। এ বৈশ্বিক মহামারি আমাদের আর্থ-সামাজিক জীবনে নানা বিঘ্ন ঘটিয়েছে। অপ্রতিরোধ্য জাতি হিসেবে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এবং আমাদের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ্বাসী। শিক্ষার্থীরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। কিন্তু শিক্ষার্থীরা যদি তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয় তাহলে আমরা এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবো না। কানেক্টিভিটি ও সল্যুশন পার্টনার হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ প্রচেষ্টায় আমরা সম্মানিত বোধ করছি। গ্রামীণফোনের বিস্তৃত ফোরজি-এলটিই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের ক্ষমতায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আমাদের শিক্ষার্থীদের যোগাযোগ প্রযুক্তি ও ডিজিটালাইজেশনের পূর্ণ সুবিধা পাওয়া উচিত।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২০
এমআইএইচ/আরবি/