ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

মেসে ইবির ৪ ছাত্রীকে রাতভর হয়রানি

ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১
মেসে ইবির ৪ ছাত্রীকে রাতভর হয়রানি

ইবি: বখাটেদের দ্বারা রাতভর হয়রানির শিকার হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অর্থনীতি বিভাগের চার ছাত্রী।  

বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া এলাকার একটি ছাত্রী মেসে এ ঘটনা ঘটে।

বখাটেরা রাতে দুই দফায় মেসের বাইরে থেকে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করে ও ভয় দেখায় বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রীরা। পরে আতঙ্কিত ছাত্রীরা তাদের সহপাঠী ও শিক্ষকদের মাধ্যমে পুলিশকে জানালে রাত ৪টার দিকে টহল পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বখাটেরা পালিয়ে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।  

বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে অভিযোগ দিয়ে নিজেদের মালামাল আবাসিক হলে রেখে বাড়ি চলে যান ভুক্তভোগী ছাত্রীরা।

ভুক্তভোগী ছাত্রীরা জানান, তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থী। হল বন্ধ রেখে বিভাগের পক্ষ থেকে পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হলে তারা চারজন বান্ধবী মিলে শেখপাড়া এলাকার ওই মেসে উঠেন। মেস মালিকের স্ত্রী ও এক মেয়েও তাদের সঙ্গে থাকতেন। বাসায় কোনো পুরুষ মানুষ না থাকায় প্রায়ই পাড়ার বখাটেরা মেসের আশেপাশে ঘোরাফেরা করে তাদের বিভিন্নভাবে বিরক্ত করতো। বুধবার রাত ১২টার দিকে বখাটেদের দল মেসের পাশে এসে ছাত্রীদের হয়রানি করতে থাকে। এ সময় জানালার ফাঁকা অংশ দিয়ে ভেতরে তাকানো ও বিভিন্ন বাজে ভাষায় মন্তব্য করতে থাকে তারা।

এ ঘটনায় আতঙ্কিত ছাত্রীরা সহপাঠীদের মাধ্যমে ইবি থানা পুলিশকে ঘটনা জানালে তারা শৈলকুপা থানা পুলিশের ফোন নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলে। তবে শৈলকুপা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এ সময় কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ছাত্রীরা। তারা জানান, প্রায় দেড় ঘণ্টা পর রাত দেড়টার দিকে বখাটেরা চলে গেলেও রাত তিনটার দিকে আবারো ফিরে আসে। এতে ছাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে মেস মালিকের কক্ষে আশ্রয় নিলেও বখাটেরা হয়রানি চালিয়ে যায়।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির মাধ্যমে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে শৈলকুপা থানা পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেলে বখাটেরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ মেস মালিকের স্ত্রী ও ভুক্তভোগী ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে চলে যায়।

ভুক্তভোগী এক ছাত্রী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রায়ই এমন হাঁটাহাটির শব্দ শুনতাম। কিন্তু গত রাতে খুব বাজে ভাষায় কথা বলতেছিল। আমাদের বর্ণনা দিয়ে এমনভাবে বলছিল মনে হচ্ছিল ওরা আমাদের দেখতে পাচ্ছে। এজন্য আমরা খুব ভয় পেয়েছিলাম তাই আমাদের বন্ধু ও স্যারদের জানিয়েছি। গতকাল খুবই দুর্বিসহ একটি রাত কেটেছে আমাদের।

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাত সাড়ে ৩টার দিকে আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, রাতেই সহকারী প্রক্টর ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সকালে প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা মেসে গিয়েছিলেন। ছাত্রীরা বাড়ি যেতে চাওয়ায় তাদের মালামাল হলে রেখে ছাত্রীদের বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা মেস মালিকের সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্তদের নাম জানার চেষ্টা করছি। যেহেতু এটা ক্যাম্পাসের বাইরে তাই কারো নাম জানা গেলে আমরা সে অনুযায়ী অভিযোগ দাখিল করব।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রক্টর ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি যেন বিষয়টি নিয়ে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়। পাশাপাশি অন্য শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।