ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সতর্কবার্তা

মাজেদুল নয়ন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১২
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সতর্কবার্তা

ঢাকা: আইন মেনে চলতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সতর্ক করে দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বারবার সতর্ক করে দেয়ার পর কিছু বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব ক্যাম্পাসে গিয়েছে।



বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরীর জন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ বাস্তবায়নের জন্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সতর্ক করে দেয় মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, পরিমাণমত নিজস্ব জমিতে মাত্র ১১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস স্থাপন করেছে। নির্ধারিত পরিমাণ জমিতে নিজস্ব ক্যাম্পাস স্থাপনের কাজ নির্মাণাধীন রয়েছে ৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের । এছাড়াও নির্ধারিত পরিমাণ জমিতে ৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নকশা অনুমোদন করেছে- কিন্তু নির্মাণ কাজ শুরু করেনি। গত মঙ্গলবার ১টি বিশ্ববিদ্যালয় মাত্র নির্মাণ কাজ শুরু করেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ১৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনানুযায়ী নির্ধারিত পরিমাণ জমি ক্রয় করেছে কিন্তু ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে নকশা অনুমোদিত হয়নি।

তিনি বলেন, এছাড়াও ইবাইস, অতীশ দীপংকর ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মালিকানা নিয়ে যে দ্বন্দ রয়েছে তা তিন মাসের মধ্যে নিরসন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মঞ্জুরী কমিশনকে অবহিত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে মন্ত্রণালয় থেকে।

অন্যথায় জনস্বার্থে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার জন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ এর ৩৫(৭) ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

সূত্র আরো জানায়, নর্দার্ন, ইউআইটিএস এবং লিডিং বিশ্ববিদ্যালয়সহ যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সরকার ও মঞ্জুরি কমিশনের মামলা রয়েছে সেগুলো দ্রুত আদালতের মাধ্যমে নিরসন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে তদন্তক্রমে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের আপীল বিভাগের সাবেক বিচারক বিচারপতি কাজী এবাদুল হক-এর সম্বন্বয়ে এক সদস্যবিশিষ্ট বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে।

তদন্ত কমিশনের কার্যক্রম চলমান থাকায় এ বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। তিনি বলেন, তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

এছাড়া যেসব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে কম জমি ক্রয় করেছে অথবা নির্ধারিত পরিমাণ জমি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে হস্তান্তর করেনি তাদেরকে আগামী ৬ মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে নির্ধারিত পরিমাণ জমি ক্রয় বা হস্তান্তরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে জমির নামজারী করে আগামী ১ বছরের মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যেই নিজস্ব ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে অবহিত করার জন্য বলা হয়েছে।

অন্যথায় ওই সময়ের পর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বাংলানিউজকে বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এদেশের উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করলেও শিক্ষার মান ও শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে জনমনে অসন্তোষ ছিলই।

দু’একটি ছাড়া অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা অনিয়ম ও জটিলতা ছিল নিত্যসঙ্গী। সরকার সবার সঙ্গে আলোচনা করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ করেছে। আইন মেনে চলার জন্যে সকলকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, যেসব বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব দ্বন্দ্ব ও অনিয়মের কারণে এখনো নিজস্ব ক্যাম্পাসের জন্য জমি ক্রয়সহ অন্যান্য উদ্যোগ গ্রহণ করেননি তাদেরকে আইন অনুযায়ী উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। অন্যথায় সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবে।

কোন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মূল ক্যাম্পাসে নিজস্ব জমিতে যথাযথভাবে স্থানান্তর না হওয়া পর্যন্ত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কোন কোর্স, প্রোগ্রাম, ইনস্টিটিউট বা অনুষদ খোলা কিংবা নতুন কোনস্থানে ক্যাম্পাস সম্প্রসারণের অনুমতি দেয়া হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২১ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১২

এমএন/এআর
সম্পাদনা : সুকুমার সরকার, কো-অর্ডিনেশন এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।