ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

প্রার্থিতা ফিরে পেলেন আলম, ছেলের কাছে দায় প্রায় সোয়া কোটি টাকা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২৩
প্রার্থিতা ফিরে পেলেন আলম, ছেলের কাছে দায় প্রায় সোয়া কোটি টাকা

বরিশাল: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাছাইয়ে বাদ যাওয়া বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সদ্য অব্যাহতি নেওয়া বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শামসুল আলম আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।

পরপর দুবার বাকেরগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান হওয়া এই প্রার্থী প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ায় বাকেরগঞ্জে সংসদ নির্বাচনের হিসেব-নিকেশ পাল্টে গেছে।

অনেকেই বলছেন যে উপজেলার জনপ্রিয় চেয়ারম্যান তিনি, সেই উপজেলা নিয়েই সংসদীয় আসন। সেক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনসহ সব প্রার্থীর মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াবেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ শামসুল আলম।

তবে গেলো ৪ বছরেরও পরিশোধ না করতে পারায় এবারে ছেলের কাছ থেকে নেওয়া ১ কোটি ২০ লাখ টাকার ঋণের বোঝা নিয়ে নির্বাচন করতে হচ্ছে বিএসএস (সম্মান) পাশ এই প্রার্থীর।

হলফনামার তথ্য বলছে, ২০১৯ সালেও তিনি ছেলের কাছ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ঋণ নেওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন, এবারেও হলফনামায় সেই সংখ্যা বহাল আছে। যদিও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণের পরিমাণের ঘরে এবার ফাঁকা দেখা গেছে। তবে সেখানে গতবার (২০১৯ সাল) পাঁচটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ২৬৩ দশমিক ৮২ কোটি টাকা ঋণের কথা উল্লেখ করেছিলেন তিনি। আর এ ঋণও তিনি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, ম্যানেজিং ডিরেক্টর ব ডিরেক্টর হওয়ার সুবাদে নিয়েছিলেন।

এদিকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় মোহাম্মদ শামসুল আলম বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন ২৭ লাখ ৮০ হাজার টাকার বেশি, যেখানে গেলো ২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের হলফনামায় তিনি বাৎসরিক আয় দেখিয়েছিলেন ২৬ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। যদিও ২০১৯ সালে তার ভাড়া থেকে আয় হতো, তবে এবারে সে খাতে কোনো আয় দেখাননি। আবার ২০১৯ সালের হলফনামায় মুক্তিযোদ্ধা ভাতার কথা উল্লেখ না থাকলেও এবারে সেটি আছে।

অপরদিকে চলতি হলফনামায় পেশার বিবরণীতে তিনি ব্যবসা হিসেবে ‘শতভাগ রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস্ শিল্প ও রুপা শিপিং লাইন্স- অ্যাভ্যন্তরীন কার্গো পরিবহন’ এর কথা উল্লেখ করেছেন। সেখানে ২০১৯ সালের হলফনামায় ইটের ভাটা, শিপিং লাইন্সসহ গার্মেন্টস শিল্পের আটটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও দুটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কথা উল্লেখ করেছিলেন।

এছাড়া চলতি হলফনামায় ২০ হাজার টাকা মূল্যের ১০ তোলা স্বর্ণসহ ২৪ লাখ ১০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে তার এবং স্ত্রীর নামে ১ লাখ টাকা মূল্যের ৪০ তোলা স্বর্ণসহ ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ আছে। যেখানে ২০১৯ সালের হলফনামায় ১০ হাজার টাকা মূল্যের ১০ তোলা স্বর্ণসহ ৪ কোটি ২ লাখ ৩০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ ছিল এ প্রার্থীর এবং তার স্ত্রীর মূল্য অজানা ৫০ তোলা স্বর্ণ ব্যতীত, ৯৬ লাখ ১৭ হাজার টাকার বেশি অস্থাবর সম্পদের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।

আবার চলতি হলফনামা অনুযায়ী প্রার্থীর নিজের নামে ১০ লাখ টাকা মূল্যের ৪৭৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ অকৃষি জমি ও ৩০ লাখ টাকা মূল্যের একটি বাড়ি/ অ্যাপার্টমেন্ট আছে এবং তার স্ত্রীরও ৩৫ লাখ টাকা মূল্যের একটি বাড়ি/ অ্যাপার্টমেন্ট আছে। যেখানে ২০১৯ সালেও ৪৭৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ অকৃষি জমি ছিল এ প্রার্থীর। কিন্তু তার মূল্য দেখানো হয়েছিল মাত্র সাড়ে ৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ চলতি হলফনামার থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা মূল্য কম ছিল ২০১৯ সালে। এছাড়া ২০১৯ সালে প্রার্থীর ৩৪ লাখ টাকার অধিক মূল্যের দুটি বাড়ি/ অ্যাপার্টমেন্ট কথা হলফনামায় উল্লেখ ছিল এবং তার স্ত্রীরও ৪০ লাখ টাকা মূল্যের একটি বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট দেখানো হয়েছিল।

এছাড়া যৌথ মালিকানায় (প্রার্থীর ২৫ ভাগ) ৩০ লাখ টাকা মূল্যের ১২৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ অকৃষি জমি থাকার কথা চলতি হলফনামায় বলা হয়েছে। আগের হলফনামায় ১৫ লাখ ৫৩ হাজার টাকার অধিক মূল্যের একই পরিমাণের ভাগে ১ দশমিক ২৩৭৫ শতাংশ জমি দেখানো হয়েছিল। সেই হিসেবে দশমিক ঘর পাল্টে জমির পরিমাণ বেড়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২৩
এমএস/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।