ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২, ১০ জুলাই ২০২৫, ১৪ মহররম ১৪৪৭

নির্বাচন ও ইসি

ভোটের অনিয়মে সাজা ৫ বছর, প্রতীক রাখা হচ্ছে হুক্কা-মোড়া

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:৪০, জুলাই ৯, ২০২৫
ভোটের অনিয়মে সাজা ৫ বছর, প্রতীক রাখা হচ্ছে হুক্কা-মোড়া নির্বাচন ভবন

নির্বাচনে অনিয়ম রোধে দোষীদের সাজা পাঁচ বছর করা হচ্ছে। বাড়ানো হচ্ছে জরিমানাও।

এছাড়া নির্বাচনের প্রতীক হিসেবে রাখা হচ্ছে হুক্কা, কুমির ও মোড়া।

ইসি সূত্রগুলো বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

জানা গেছে, নির্বাচন কর্মকর্তা বিশেষ আইন-১৯৯১ অনুযায়ী ভোটে অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাজার আদেশ দিয়ে থাকে সংস্থাটি৷ এক্ষেত্রে তা কার্যকর করে সংশ্লিষ্ট নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ৷ কিন্তু সেটি পরবর্তীতে আর কার্যকর হয় না। কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বিগত কমিশনের সময় গাইবান্ধার এক উপ-নির্বাচনে অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া দিয়েছিল এবং তা জানাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সে নির্দেশনা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। সে সময় ১৪০ জনের মতো বিভিন্ন সংস্থা, দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছিল ইসি।

কর্মকর্তারা বলছেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে আইনে কিছু পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে ইসির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হচ্ছে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের জন্য৷

এছাড়া পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, ভোট কর্মকর্তাসহ কারো বিরুদ্ধে অনিয়মের প্রমাণ হলে এক বছর থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছরের সাজার বিধান করার কথা ভাবা হচ্ছে৷ অর্থদণ্ডও পাঁচ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হচ্ছে এক লাখ টাকা।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) অষ্টম কমিশন সভায় এমন সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

এদিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা সংশোধন করে ১১৫টি প্রতীক সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। বর্তমানে ৬৯টি প্রতীক রয়েছে৷ যার মধ্যের নিবন্ধিত দলের ৫০টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য ১৯টি প্রতীক রয়েছে৷

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, দলের সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া নতুন দলগুলোকে নিবন্ধন দেওয়ার কার্যক্রমও হাতে নেওয়া হয়েছে। নিবন্ধন পেতে ইতোমধ্যে ১৪৭টি নতুন দল আবেদন করেছে। তাই ভবিষ্যতে দলের সংখ্যা বাড়লে যাতে প্রতীক কম না পড়ে তাই উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে।

তবে আইন মন্ত্রণালয়ে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা সংশোধন করতে যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে এতে "শাপলা" প্রতীক রাখা হয়নি বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ। তিনি বলেন, তফসিলে জাতীয় প্রতীক হওয়ায় শাপলা রাখা হয়নি।

এই প্রতীকটি চেয়ে ইতোমধ্যে নাগরিক ঐক্য ও জাতীয় নাগরিক পার্টির মধ্যে কাড়াকাড়ি বেধেছে। দু'টি দলই জোর দাবি জানিয়েছে শাপলা প্রতীক দেওয়ার জন্য। নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার তফসিলে শাপলা না রাখায় কোনো দলই শেষ পর্যন্ত প্রতীকটি পাবে না।

এদিকে শাপলা না রাখা হলেও হুক্কা, কুমির, মোড়া-এর মতো প্রতীকগুলো রাখা হচ্ছে৷

তফসিলে যে প্রতীকগুলো রাখা হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে- আপেল, আনারস, আম, আলমিরা, ঈগল, উটপাখি, উদীয়মান সূর্য, একতারা, কাঁচি, কবুতর, কলম, কলস, কলার ছড়ি, কাঁঠাল, কাপ-পিরিচ, কাস্তে, কেটলি, কুমির, কম্পিউটার, কলা, কুড়াল, কুলা, কুড়ে ঘর, কোঁদাল, খাট, খেঁজুর গাছ, গরুর গাড়ি, গাভী, গামছা, গোলাপ ফুল, ঘণ্টা, ঘুড়ি, ঘোড়া, চাকা, চার্জার লাইট, চাবি, চিংড়ি, চেয়ার, চশমা, ছড়ি, ছাতা, জগ, জাহাজ, টিউবওয়েল, টিফিন ক্যারিয়ার, টেবিল, টেবিল ঘড়ি, ট্রাক, টেলিফোন, টেলিভিশন, ডাব, ঢেঁকি, তবলা, তরমুজ, তারা, থালা, দাঁড়িপাল্লা, দালান, দেওয়াল ঘড়ি, দোয়াত-কলম, দোলনা, ধানের শীষ, নোঙ্গর, নৌকা, প্রজাপতি, ফুটবল, ফুলকপি, ফুলের টব, ফুলের মালা, ফ্রিজ, বক ও বাঘ।

এছাড়াও রয়েছে, বই, বটগাছ, বাঁশি, বেঞ্চ, বেগুন, বাইসাইকেল, বালতি, বেলুন, বৈদ্যুতিক পাখা, মই, মগ, মাইক, মটরগাড়ি, মশাল, ময়ূর, মাছ, মাথাল, মিনার, মোমবাতি, মোবাইল ফোন, মোড়া, মোরগ, রকেট, রিকশা, লাউ, লিচু, লাঙল, শঙ্খ, সোনালী আঁশ, সেলাই মেশিন, সোফা, সিংহ, স্যুটকেস, হরিণ, হাত (পাঞ্জা), হাতঘড়ি, হাতপাখা, হাঁস, হাতি, হারিকেন, হেলিকপ্টার, হুক্কা ও হাতুড়ি।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত দল রয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ মোট ৫১টি। ১১৫ টি প্রতীকের মধ্যে ৫১টি থাকবে নিবন্ধিত দলগুলোর জন্য। আর অন্য প্রতীকগুলো থাকবে ভবিষ্যতে নিবন্ধিত দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য।

ইইউডি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।