ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

পার্থসহ বিরোধী ৩৮ নেতার বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত ইসির

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৪ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১৯
পার্থসহ বিরোধী ৩৮ নেতার বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত ইসির আন্দালিব রহমান পার্থ ও নির্বাচন কমিশনের লোগো

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের যেসব প্রার্থী নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব জমা দেননি, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থসহ ৩৮ জন নেতা রয়েছেন। আর তালিকায় থাকা বেশিরভাগই বিএনপির নেতা।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, নির্বাচিত প্রার্থীদের গেজেট প্রকাশের ৩০দিনের মধ্যে ব্যয়ের হিসাব প্রতিদ্বন্দ্বী সব প্রার্থীকে দিতে হয়। কোনো প্রার্থী নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব নির্ধারিত সময়ে মধ্যে জমা না দিলে, তার বিরুদ্ধে মামলা করার বিধান রয়েছে।

গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিজয়ী প্রার্থীদের গেজেট ১ জানুয়ারি প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। সে অনুযায়ী নির্ধারিত সময় শেষ হয়েছে পাঁচ মাস আগেই।

আইন অনুযায়ী, যথাসময়ে হিসাব না দিলে দুই থেকে সাত বছর কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩৯টি নিবন্ধিত দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলিয়ে নির্বাচনে মোট ১ হাজার ৮৬১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এদের মধ্যে দলীয় প্রার্থী ১ হাজার ৭৩৩ জন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী ১২৮ জন। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, প্রতিদ্বন্দ্বী সব প্রার্থীকেই নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ ও শরিকদের মিলিয়ে নৌকা মার্কায় ২৭২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর বিপরীতে ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপি ও শরিকদের প্রার্থী ছিলেন ২৮২ জন। সবচেয়ে বেশি প্রার্থী ছিলো হাতপাখা প্রতীকের ইসলামী আন্দোলনের। দলটি নির্বাচনে ২৯৯টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে।

ভোলা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আন্দালিব রহমান পার্থ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোলা-১ ও ঢাকা-১৭ আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বৈধ প্রার্থী হয়েছিলেন। পরে তিনি ভোলা-১ থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। আর ঢাকা-১৭ আসনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ আসনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী, চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) নির্বাচিত হন।

এবার সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর জন্য ভোটার প্রতি গড় ব্যয় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল ১০টাকা। তবে সর্বোচ্চ ব্যয় ২৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল ইসি।

৩৮ প্রার্থীর বিষয়ে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বাংলানিউজকে বলেন, যথাসময়ে হিসাব জমা না দেওয়ায় মামলা করার সিদ্ধান্ত দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এদের বেশিরভাগই ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাদের দ্রুতই নির্দেশনা পাঠানো হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই ৩৮ প্রার্থীদের মধ্যে আন্দালিব রহমান পার্থ সম্প্রতি সময় চেয়ে আবেদন করেছেন। কিন্তু তার আগেই মামলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখনো কমিশন তার আবেদন আমলে নেয়নি।

২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যথাসময়ে ব্যয়ের হিসাব না দেওয়ায়, তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল ইসি। সে সময় ভোটার প্রতি ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮টাকা। যদিও সেবারও সর্বোচ্চ ব্যয় ছিল ২৫ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪১ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১৯
ইইউডি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।