ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৭ আগস্ট ২০২৫, ১২ সফর ১৪৪৭

বিনোদন

মায়ের ছোড়া গুলিতে বাবাকে খুন হতে দেখেছেন এই অভিনেত্রী

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৫৫, আগস্ট ৭, ২০২৫
মায়ের ছোড়া গুলিতে বাবাকে খুন হতে দেখেছেন এই অভিনেত্রী

নাচ নিয়ে ক্যারিয়ার গড়ার ইচ্ছে থাকলেও অভিনয়ে খ্যাতি পেয়েছেন শার্লিজ থেরন। জিতে নিয়েছেন অস্কারের মতো পুরস্কার।

তবে শৈশবে একটি ঘটনা তাকে প্রায়ই ট্রমার মধ্যে নিয়ে যায়। বিভিন্ন সময় সাক্ষাৎকারে তিনি সে ঘটনা সম্পর্কে জানিয়েছেন। তখন তার বয়স মাত্র ১৫ বছর। থাকতেন দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে।

ওই সময় থেরনের বাবা একদিন মাতাল হয়ে বাসায় আসেন। তার হাতে ছিল বন্দুক, একসময় স্ত্রী ও মেয়েকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। নিজেদের রক্ষা করতে একসময় হাতে পিস্তল তুলে নেন থেরনের মা, বাঁচার জন্য পাল্টা গুলি ছোড়েন। গুলিতে থেরনের বাবা মারা যান।

আত্মরক্ষার্থে গুলি করায় বেকসুর খালাস পেয়ে যান থেরনের মা। কিশোরী বয়সের সেই দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে তিনি মডেলিংয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন।  

থেরনের জন্ম ১৯৭৫ সালের ৭ আগস্ট। শৈশব কাটে দক্ষিণ আফ্রিকায়। মাত্র ১৩ বছর বয়সে তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বোর্ডিং স্কুলে। সেখানেই তার প্রথম শিল্পচর্চার প্রতি ভালোবাসা জন্মে। চেয়েছিলেন নাচ নিয়ে থাকতে। পরে মডেলিং শুরু করে বেশ কিছু বিজ্ঞাপনে ডাক পান। থেরন তখনো মডেলিং, নাকি অভিনয় এ নিয়ে দোটানায় ছিলেন।

প্রথম মডেলিংয়ের কাজে ইউরোপে আসেন থেরন। ইতালির একটি প্রতিযোগিতায় নাম লেখান। পরে এক বছর মাকে নিয়ে ঘুরতে থাকেন ইউরোপের বিভিন্ন শহরে। সেখান থেকে চলে আসেন নিউ ইয়র্কে। সেখানে ব্যালে নৃত্যশিল্পী হিসেবে নাম লেখান।  

তিনি ১৯৯৪ সালে মায়ের সঙ্গে জন্মভূমিতে না গিয়ে মায়ের দেওয়া ৩০০ ডলার নিয়ে নিউ ইয়র্ক থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসে চলে আসেন। ফেরার মতো কোনো টাকা ছিল না। হাতে থাকা ৩০০ ডলার অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। এমনও দিন গেছে, তিনি রেস্তোরাঁ থেকে রুটি চুরি করে খেয়েছেন।

থেরনের সঙ্গে মায়ের পাঠানো চেক ছিল। সেগুলো ভাঙানোর জন্য একদিন হলিউড বুলেভার্ড এলাকার ব্যাংকে যান। কিন্তু চেকগুলো ভাঙাতে ঝামেলা পোহাতে হয়। কারণ, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন। এ নিয়ে ব্যাংকেই ঝগড়া শুরু করে দেন। এ সময় হঠাৎই তার পেছনে থাকা জন ক্রসবি নামের একজন গ্রাহক তাকে একটি ব্যবসায়িক কার্ড হাতে ধরিয়ে দেন ও চেকটিও ভাঙিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এই ক্রসবি মূলত তরুণ অভিনয়শিল্পী, পরিচালক, গায়ক-গায়িকাদের কাজ খুঁজে দিতেন।

ক্রসবিই তাকে প্রথম ফিল্ম স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। এরপর ক্রসবির সহায়তায় তিনি প্রথম একটি ভৌতিক সিনেমায় নাম লেখানোর সুযোগ পান। সিনেমার নাম ‘চিলড্রেন অব দ্য কর্ন ৩: আরবান হার্ভেস্ট’। এরপর ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে অনেকের চোখে পড়েন।

এক বছর পরেই ‘ডেভিলস অ্যাডভোকেট’ সিনেমায় আল পাচিনোর সঙ্গে পর্দা ভাগের সুযোগ তাকে হলিউডে ক্যারিয়ার গড়তে অবদান রাখে। পরবর্তী সময়ে তাকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। ‘মনস্টার’ সিনেমার জন্য ২০০৪ সালে অস্কারে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়ে যান। একসময় থেরন হয়ে ওঠেন হলিউডের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া তারকার একজন।

এনএটি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।