ঢাকা, রবিবার, ৮ ভাদ্র ১৪৩২, ২৪ আগস্ট ২০২৫, ০০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

বিনোদন

ফিরলো কোক স্টুডিও বাংলা

আদিবাসী ঐতিহ্য ও শহুরে লোকসঙ্গীতের মিশ্রণে এলো ‘বাজি’ 

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:১৭, আগস্ট ২৩, ২০২৫
আদিবাসী ঐতিহ্য ও শহুরে লোকসঙ্গীতের মিশ্রণে এলো ‘বাজি’ 

মুক্তি পেল কোক স্টুডিও বাংলার নতুন মাস্টারপিস ‘বাজি’। গানটিতে ফুটে উঠেছে আদিবাসী সঙ্গীত ঐতিহ্য ও শহুরে লোক সঙ্গীতের মনোমুগ্ধকর মিশ্রণ।

এই গান প্রকাশের মধ্য দিয়ে আরও একবার সঙ্গীত ও সুরের মাধ্যমে বাংলাদেশের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতিকে উদযাপন করল কোক স্টুডিও বাংলা।

গানটির কম্পোজিশন, পরিচালনার পাশাপাশি গেয়েছেনও এই সময়ের অন্যতম প্রতিভাবান শিল্পী ইমন চৌধুরী এবং তার সঙ্গে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে রয়েছেন হাশিম মাহমুদ। কোক স্টুডিও বাংলার বহুল প্রতীক্ষিত তৃতীয় মৌসুমের চতুর্থ গান হিসেবে বাজি গানটি মুক্তি পেল।  

স্বনামধন্য শহুরে কবি ও সঙ্গীতশিল্পী হাশিম মাহমুদের লেখা ‘বাজি’ গানটিতে ফুটে উঠেছে সাধারণ এক রমনীর অপার্থিব মোহময়ী নিষ্পাপ ও কোমল প্রেমের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া গল্প। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উঠে আসা কণ্ঠ ও সুরের মেলবন্ধন লক্ষ্য করা গেছে গানটিতে, যা প্রেমে পড়ার চিরন্তন ও সার্বজনীন অনুভূতিকে জাগিয়ে তোলে।

ইমন চৌধুরীর সঙ্গীতায়জনে এই গানে আরও ফুটে উঠেছে বৈচিত্র্যময় লোকজ সঙ্গীত, উপজাতীয় বাদ্যযন্ত্রের মাধুর্য্য এবং প্রাণশক্তিতে ভরপুর লোকশিল্প। ‘সরোদ’-এর মতো ঐতিহ্যবাহী যন্ত্রে তার সূক্ষ্ম হাতের কাজ সৃষ্টি করেছে এক আধুনিক ও সিনেম্যাটিক সুর যা ঘটিয়েছে লোকস্মৃতির সঙ্গে বর্তমানের গল্পের এক দারুণ সংমিশ্রণ।  

বৃত্তাকার আকারে ঘুরে ঘুরে নাচের সঙ্গে গান করার জন্য বিখ্যাত টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী ‘ধুয়া গানের দল’কেও দেখা গেছে গানটিতে। এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে লালন করা এক অপরূপ সাংস্কৃতিক নিদর্শন বহন করে চলছে তারা।

‘বাজি’র ধ্বনি আরও সমৃদ্ধ করেছেন বংশীবাদক কিয়ো উ প্রু মারমা এবং তার দাদি, ম্রাকোইচিং মারমা। বান্দরবান পাহাড়ের বাসিন্দা ম্রাকোইচিং গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন মারমা ভাষায়। বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে থাকা পূর্বপুরুষের গানে প্রাণ সঞ্চার করে সংস্কৃতি সংরক্ষণে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি।

পার্বত্য চট্টগ্রামের বাওম উপজাতিরাও তাদের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরেছে কোক স্টুডিও বাংলার এই গানে। ধ্রুপদী উপজাতীয় নৃত্য পরিবেশনা করেছে তারা। মনোমুগ্ধকর নৃত্য এবং জটিল ছন্দময় পায়ের কাজের জন্য বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পীরা বাঁশের লাঠি ব্যবহার করে দারুণ ভঙ্গিমায় নেচে বাড়িয়েছেন গানের সৌন্দর্য।

পিছিয়ে ছিল না মণিপুরী সম্প্রদায়ের পুং ড্রামাররাও, ‘পুং চোলমের’ অসধারণ অ্যাক্রোব্যাটিক্স পরিবেশন করেছেন তারা, যা গানের গল্পকে করেছে ছন্দময় ও গতিশীল। তাদের অবদান কেবল ‘বাজি’র শিকড় প্রশস্ত করেনি বরং বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রাণবন্ত, বৈচিত্রময় ও ক্রমবর্ধমান পালে হাওয়া দিয়েছে।

গানটি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ইমন চৌধুরী বলেন, কোক স্টুডিও বাংলার ফিরে আসাটা সত্যিই আনন্দের। সেই সঙ্গে আমরা দারুণ উচ্ছ্বসিত আমাদের শ্রোতাদের জন্য ‘বাজি’ গানটি নিয়ে আসতে পেরে। গানটি আমাদের কাছে খুবই বিশেষ, কারণ এতে শিল্পীরা তাদের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছেন। গানটির কথা, সুর, নাচ, ভিজ্যুয়াল- সবকিছু মিলিয়ে এটি এমন এক সুরেলা সমন্বয়, যেখানে একসঙ্গে ধরা পড়েছে বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।

বাংলাদেশের বৈচিত্রময় সংস্কৃতিকে সর্বদাই শ্রদ্ধার সঙ্গে উদযাপন করে আসা কোক স্টুডিও বাংলার প্রয়াসকেই যেন সম্মান জানায় প্রকৃতি, সংস্কৃতি ও মানবতার মিশ্রণে সৃষ্টি ‘বাজি’। গানটি এখন শোনা যাচ্ছে স্পটিফাই ও কোক স্টুডিও বাংলার অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে।

এনএটি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।