ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

প্রেম ধর্মান্তরিত করেছে যে বলিউড তারকাদের

মহিবুর রহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩৮ ঘণ্টা, মে ৬, ২০১৬
প্রেম ধর্মান্তরিত করেছে যে বলিউড তারকাদের

প্রেম কোন ধর্ম মানে না। প্রেম মানে না জাত, কুল, ধনী, দরিদ্র।

প্রেমের নেই কোন স্থান, কাল ও পাত্র। প্রেম এমনই এক বিমুর্ত স্বর্গীয় অনুভুতি যা পার্থিব জগতের সব কিছুকেই ছাপিয়ে যায়। প্রেমের স্বর্গীয় আহবানে সাড়া দিতে গিয়ে লাইলীকে এক নজর দেখতে তাঁর বাড়ীতে অন্ধ ভিখারির বেশ ধরে গিয়ে দেখা করতেন প্রেমিক মজনু। হেলেনের প্রেমের দুর্বার আকর্ষণে নিজেকে স‍ঁপে দিতে গিয়ে পুরো ট্রয় নগরীকেই পুড়ে খাক হতে দেখেছিলেন রাজকুমার প্যারিস। আর মুঘল সম্রাজ্যের রাজপুত্র হয়েও রাজ্যের নর্তকী আনারকলীর প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছিলেন সম্রাট আকবর পুত্র সেলিম। প্রেম এভাবেই যুগে যুগে কালে কালে বিচরণ করেছে মানুষের অবচেতন মনে। এতো গেল প্রেমের প্রাচীন যুগের কথা।
 
আধুনিক কালে এসেও প্রেমের গভীরতা দেখা গেছে, যে গভীরতার অতলে তলিয়ে গেছে ধর্মের মত মহাগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও। প্রেমের কারণেই ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছেন বলিউড সুপারস্টাররা। আসুন দেখে নেই তারা কারা-
 
আয়েশা টাকিয়া: বাবা ছিলেন হিন্দু আর মা ছিলেন ব্রিটিশ-ইন্ডিয়ান। হিন্দু হয়েও আয়েশা টাকিয়া দীর্ঘ সময় প্রেম করেছেন মুসলিম প্রেমিক ফারহান আজমির সঙ্গে। এরপর ২০০৯ সালে এই জুটি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের আগেই আয়েশা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। যদিও তিনি প্রকাশ্যে কখনওই ধর্মান্তরের বিষয়টি প্রকাশ করেননি। তবে গণমাধ্যম সুত্রমতে খবরটি সত্য। মিকাইল আজমি নামে তাদের একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে।
 
মমতা কুলকার্নি: ৯০’র দশকে বেশ কয়েকটি হিন্দি সুপার হিট ছবির নায়িকা তিনি। ‘আশিক আওয়ারা’ (১৯৯৩), ‘ক্রান্তিবীর’ (১৯৯৪), ‘সবচে বাড়া খিলাড়ি’ (১৯৯৫) এবং একই বছর মুক্তিপ্রাপ্ত ব্লকবাস্টার ‘কারন আরজুন’ ছবির সাড়া জাগানো নায়িকা মমতা। অভিনয়ের পাশাপাশি তাঁর সৌন্দর্যেও দ্যুতি ছড়িয়েছে। আর সেক্স-সিম্বল হিসেবে নাম কুঁড়িয়েছেন। সেই মমতা কুলকার্নি হঠাত করেই পর্দা থেকেই উধাও! কারণটি হল ২০১৩ সালে মমতা মুসলিম প্রেমিক ভিকি গোস্বামীকে বিয়ে করেন এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন। বর্তমানে এই প্রেমিক যুগল নাইরোবিতে বাস করছেন।
 
অমৃতা সিং: ৮০ ও ৯০’র দশকের হিট নায়িকা অমৃতা সিংয়ের জন্ম একটি শিখ-মুসলিম পরিবারে। ১৯৮৩ সালে সানি দেওলের সঙ্গে ‘বেতাব’ ছবি দিয়ে বলিউডে ক্যারিয়ার শুরু করা এই নায়িকার সঙ্গে সাইফ আলী খানের প্রেমের কথা অনেকেরই জানা। যা হোক দুজনের প্রেমের রসায়ন এতটাই প্রখর ছিল যে প্রেমিক সাইফকে জীবন সঙ্গী হিসেবে পেতে ১৯৯১ সালে বিয়ের আগেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন অমৃতা। ২০০৪ অবশ্য এই বলিউড দম্পতির ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। সারাহ ও ইবরাহিম নামে এই দম্পতির এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তান রয়েছে।
 
ধর্মেন্দ্র-হেমা মালিনি: ৭০’র দশকের সব চাইতে কাঙ্খিত ও বলিউড তারকা। হেমার জন্ম একটি হিন্দু তামিল পরিবারে। প্রেমিক ধর্মেন্দ্রও হিন্দু ছিলেন কিন্তু তাদের সম্পর্ক বিবাহে রুপ নিতে পারছিলো না। কেননা ধর্মেন্দ্র ছিলেন বিবাহিত। ‘প্রকাশ কর’ তাঁর প্রথম বিয়ে করা স্ত্রী। হিন্দু শাস্ত্রমতে প্রথম স্ত্রী জীবিত থাকতে স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবে না। তাই বিয়ের জন্য তাঁদের সামনে একটি পথই খোলা ছিল আর সেটি হলো ধর্মান্তরিত হওয়া। করলেন ও তাই। দুজনই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে বিবাহ বন্দনে আবদ্ধ হলেন। ১৯৭৯ সালের ২১ আগস্ট ১ লাখ ১১ হাজার রুপি মোহরানা দিয়ে ইসলাম ধর্ম মতে বিয়ে করেন হেমা ধর্মেন্দ্র। বিয়ের পর হেমার নাম বদলে রাখা হয় আয়েশা আর ধর্মেন্দ্রর নাম রাখা হয় দেলওয়ার খান।
 
শর্মিলা ঠাকুর: নন্দিত বাঙ্গালী হিন্দু তারকা শর্মিলা ঠাকুর ও নবাব মনসুর আলী খান পতৌদির প্রেম বহুল আলোচিত। দুজনের ভালবাসার গভীরতা এতটাই বেশি ছিল যে মনসুর আলী খানের প্রেমে পড়েই হিন্দু থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মুসলমান ধর্মে রুপান্তরিত হন শর্মিলা ঠাকুর। ধর্মান্তরিত হবার পর তাঁর নাম করণ করা হয় আয়েশা। বলিউডের হালের জনপ্রিয় অভিনেতা সাইফ আলী খান, সাবা আলী খান ও সোহা আলী খান তাদের সন্তান।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৫৩০ ঘণ্টা, ৬ এপ্রিল, ২০১৬
এইচএল/এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।