ঈদ উপলক্ষে সারাদেশে মুক্তি পেয়েছে দুই নায়কের মোট চারটি ছবি। এর মধ্যে শাকিব খানেরই তিনটি।
শাকিবের তিনটি ছবি হলো ‘শিকারী’, ‘সম্রাট’ ও ‘রানা পাগলা-দি মেন্টাল’। আর জিতের ছবিটির নাম ‘বাদশা-দ্য ডন’। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যে ছবি যতোসংখ্যক প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে, তার ওপর নির্ভর করে বলা যায় শাকিব রয়েছেন প্রথম তিনে, আর জিৎ চার নম্বরে।
জানা গেছে, শামীম আহমেদ রনি পরিচালিত ‘রানা পাগলা-দি মেন্টাল’ সারাদেশের ১৫২টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। এ হিসাবে অন্য তিনটি ছবির চেয়ে এটি এগিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘শিকারি’ প্রেক্ষাগৃহে (৯৮টি) মুক্তির হিসাবে আছে দ্বিতীয় স্থানে। ৭৬টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির হিসাবে তৃতীয় স্থানে আছে মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ পরিচালিত ‘সম্রাট’। আর জিৎ অভিনীত ‘বাদশা-দ্য ডন’ মুক্তি পেয়েছে ৪৬টি প্রেক্ষাগৃহে।
ফেসবুকে শাকিব খানের ফ্যানপেজে আরাফান হোসেন অনিক শনিবার (৯ জুলাই) মন্তব্য করেছেন, ‘দুজনের দৌড়ে জিৎ চতুর্থ! প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানটি একজনের দখলে। তার নাম শাকিব খান। আর দ্বিতীয়জন দখল করেছেন চতুর্থ স্থানটি। তিনি ভারতের জিৎ। ’
হৃদয় নামের এক ভক্ত চাঁদরাতেই লিখে দিয়েছেন, ‘‘আবার শাকিব খানের কাছে হারলেন কলকাতার সুপারস্টার জিৎ। ইউটিউবে শাকিবের ‘শিকারি’ ছবির গান ও ট্রেলার প্রায় ৮০ লাখের ওপর দেখা হয়েছে। অন্যদিকে জিতের ‘বাদশা-দ্য ডন’-এর গান ও ট্রেলার সব মিলিয়ে ৪০ লাখ বার দেখা হয়েছে। তাছাড়া শাকিবের এক গানই (হারাবো তোকে) দেখা হয়েছে ৫০ লাখ বার। ’’
জোনাকি সিনেমা হলের ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন বলেছেন, ‘শাকিবের সিনেমায় নায়িকা লাগে না, শাকিব শাকিবই। যত যা-ই বলেন, ভারতীয় বা অন্য দেশের নায়ক তার সামনে কিছুই না। ’
জাকির হোসেন নামের এক অন্ধভক্ত ৮ জুলাই লিখেছেন, ‘‘জিৎ কেনো, সালমান খানের ‘সুলতান’ বাংলাদেশে মুক্তি পেলেও শাকিব খানকে থামানো যেতো না!’’ একই দিন বিশাল আহমেদ ছবি দেখার অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছেন, ‘জিতের তুলনায় শাকিব খান অনেক এগিয়ে। তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হয়নি। এখন শাকিবই শাকিবের প্রতিযোগী। ’
বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের দিন শাকিবের তিনটি ছবিই ভালো চলেছে। এর মধ্যে দর্শকসংখ্যায় ‘শিকারী’ এগিয়ে। তারপরেই ভালো ব্যবসা করছে ‘সম্রাট’। তিন নম্বরে আছে ‘রানা পাগলা-দি মেন্টাল’। সব মিলিয়ে সারাদেশে চলছে শাকিব-ম্যানিয়া! প্রত্যক্ষদর্শী যতিন বাবু রোববার (১০ জুলাই) জানালেন, প্রেক্ষাগৃহের সামনে বেশ ক’জনকে দেখা গেলো শাকিবের স্টাইলে চুল ছেঁটেছেন।
ফ্যানপেজে বায়েজিদ হোসেন ৭ জুলাই মন্তব্য করেছেন, ‘আবার প্রমাণ হলো শাকিব খানের প্রতিদ্বন্দ্বী শাকিব খান নিজেই। তাকে নিয়ে প্রযোজকরা কোটি কোটি টাকার বাজি ধরেন। চলচ্চিত্রের এই দূরবস্থার মধ্যেও একসঙ্গে তার তিনটি ছবি মুক্তি দেওয়ার সাহস দেখিয়েছেন প্রযোজকরা। কারণ একমাত্র শাকিব খানের সুবাদে নিশ্চিত হওয়া যায় লাভ না হলেও অন্তত লগ্নিকৃত টাকা ফেরত আসবে। ’
তবে বিপক্ষ মতামতও এসেছে। যেমন বেলাল হাসান শনিবার লিখেছেন, ‘মানছি ঈদে শাকিবের তিনটি ছবিই ব্যাপক হারে চলছে। আমার মতে, একসঙ্গে তিনটি ছবি এ ঈদে মুক্তি দেওয়া উচিত হয়নি। সামনের ঈদে ২-১টা রেখে দিলে নির্মাতারা আরও বেশি লাভ করতে পারতেন। ’ আমান আহমেদেরও মন্তব্য, একই ঈদে শাকিব খানের তিন ছবি তার ক্যারিয়ারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তার আশা, আগামীতে শাকিব প্রতি ঈদে একটি বা দুটির বেশি ছবি করবেন না।
আবার কারও কারও মন্তব্য, দলবলে সবাইকে নিয়ে ছবি দেখলে সব ছবির প্রযোজকের মুখেই হাসি ফুটবে। ফলে শাকিবও আগামীতে আরও ভালো ভালো ছবি করার অনুপ্রেরণা পাবেন। আর তিনি তো দর্শকদের বলেই রেখেছেন, ‘আমাদের দেশের চলচ্চিত্র এখন অনেক ভালো হচ্ছে, আপনারা সিনেমা হলে আসুন, তাহলে আরও ভালো ছবি আমরা উপহার দিতে পারবো। ’
ভক্তরা একে অপরকে প্রিয় তারকার ছবিগুলো দেখার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করছেন। সামিউর রহমান রাজু নামের এক ভক্ত ৮ জুলাই ফেসবুকে প্রত্যাশা করেছেন, এভাবেই জয় হোক বাংলা চলচ্চিত্রের।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৬
জেএইচ