‘ওয়েব সিরিজ’ কি? খুব সরলভাবে বলতে গেলে ইউটিউবে প্রচার করা ধারাবাহিকের আরেক নাম ‘ওয়েব সিরিজ’। তবে শুধুমাত্র ইউটিউবেই নয়, ‘ওয়েব সিরিজ’-এর জন্য আলাদা সাইট বানিয়েও প্রচার করছে বিভিন্ন মিডিয়া ।
ভারতে এরই মধ্যে ওয়েব সিরিজ বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। পাশাপাশি অশ্লীলতার কারণে বিতর্কিতও হচ্ছে এই মাধ্যমটি। ইউটিউবে এমন অনেক চ্যানেল রয়েছে যাদের কাজই হচ্ছে বয়োজৈষ্ঠ্যদের দেখার উপযোগী ওয়েব সিরিজ তৈরি ও প্রচার করা। এতে চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বাড়ে দ্রুত। কেউ কেউ বলছেন, একই পথে হাঁটছে দেশীয় কয়েকটি চ্যানেল। গল্পের মাধ্যমে ইতিবাচক বার্তা দিতে গিয়ে নেতিবাচক বিষয়গুলোকেই গুরুত্বপূর্ণভাবে তুলে ধরা হচ্ছে ওয়েব সিরিজগুলোতে।
অনেকেই বলছেন, আগামী দিনে ‘ওয়েব সিরিজ’ হতে যাচ্ছে বিনোদনের প্রধান মাধ্যম। এরই যাত্রা শুরু হয়েছে বাংলাদেশেও। তবে এ নিয়ে ভবিষ্যদ্বানী করেছেন বলিউড অভিনেতা ইরফান খান। তার মতে, ‘ভারতে নেটফ্লিক্সের মতো জনপ্রিয় স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের ভবিষ্যত খুব একটা উজ্জ্বল নয়। আমাদের কাছে ওয়েব সিরিজ করার মতো প্রতিভা নেই। এটিই সত্য। ’
নেটফ্লিক্সের মিনি সিরিজ ‘টোকিও ট্রায়াল’-এর এই অভিনেতা আরও বলেন, ‘প্রোডাকশন হাউসগুলো সব ব্যবসায়ীরা চালাচ্ছেন। তারা ভালো কোনো গল্প শুনতে চান না। যতদিন না আমাদের এই কাজের প্রতি ভালোবাসা আসছে ততদিন ভালো ওয়েব সিরিজ তৈরি হবেনা। ’
ইরফান খানের বক্তব্যেরই প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের কিছু ওয়েব সিরিজে। ঈদুল আযহায় প্রচারিত ‘পালাবি কোথায়’ দেখে অনেকে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। ঈদের ‘লিস্ট’, ‘বাঘবন্দি’ প্রভৃতি ওয়েব সিরিজে যৌনতা, অশালীন সংলাপ ও অঙ্গভঙ্গি, মাদকগ্রহণের বিষয়গুলো সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, টেলিভিশনের জনপ্রিয় তরুণ অভিনয়শিল্পীরা এসব ওয়েব সিরিজে হাজির হচ্ছেন অচেনা অবতারে। টয়া, জোভান, তামিম মৃধা, শামীম হাসান সরকার, তৌসিফ মাহবুব, স্পর্শিয়া, সাফা কবির প্রমুখ শিল্পীরাই ঘুরে ফিরে থাকছেন এসব ওয়েব সিরিজে। সম্প্রতি যুক্ত হয়েছেন বিতর্কিত মডেল নায়লা নাঈম। ‘লিস্ট’-এ তিনি অভিনয় করেছেন সেবিকার ভূমিকায়। সিএমভি, ধ্রুব টিভি প্রভৃতি চ্যানেল তৈরি করছে বিভিন্ন ওয়েব সিরিজ। ওয়েব সিরিজ না করলেও থার্ড বেল-এ প্রচারিত কিছু কনটেন্ট (নাটক) নিয়ে আরও আগেই সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
এদিকে ‘আবাসিক হোটেল’ ওয়েব সিরিজটি যেন একধাপ এগিয়ে! কয়েক সেকেন্ডের প্রমো দেখেই বিস্মিত হয়েছিলেন অনেক দর্শক। প্রমোর শুরুতে লেখা ছিলো ‘সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ : হেডফোন কানে দিয়ে ভিডিওটি দেখুন’! বিতর্কের জেরে পরে এটি মুছে ফেলা হয়েছে ইউটিউব থেকে।
যে সময়ে টিভি নাটকের চাহিদা আবারও বাড়তে শুরু করেছে, যখন ঈদকে কেন্দ্র করে নাটক-টেলিছবি রীতিমত ভাইরাল হচ্ছে, সে সময়ে মানহীন ওয়েব সিরিজ দর্শককে বিভ্রান্ত করছে না তো? বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টরা ভাববেন, এমনটিই প্রত্যাশা করছেন দেশীয় নাটকের দর্শক ও সমালোচকেরা।
* ‘পালাবি কোথায়’-এর এপিসোড ৩:
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৭
এসও