কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত বাচিক শিল্পী গৌরী ঘোষ আর নেই। বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।
বেশ কিছুদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন এ বাচিক শিল্পী। সম্প্রতি একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন গৌরী ঘোষ। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে কলকাতার আরএন টেগর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় তাকে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টও দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জীবন যুদ্ধে হার মানতে হল এ গুণীজনকে।
গৌরী ঘোষের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আত্মীয়-পরিজন এবং অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনাও জানিয়েছেন তিনি।
এই শিল্পীর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ পশ্চিমবাংলার সাংস্কৃতিক জগৎ। তার মৃত্যুতে বাংলার আরেক বাচিক শিল্পী ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায় স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জানিয়েছেন, চলমান পরিস্থিতিতে যখনই দিদির (গৌরী ঘোষ) সঙ্গে কথা হয়েছে বারবার সচেতন করেছেন। বয়স আশির উপরে, বার্ধক্যজনিত রোগে ভুলছিলেন। তার চলে যাওয়া মানতে পারছি না। দুঃখ এই যে, আমি তার জীবনী নিয়ে একটা কাজ করছিলাম সেটা এখনও শেষ হয়নি। কাজটা তার দেখার ইচ্ছে ছিল। তা আর হল না।
বাস্তব জীবনে গৌরী ঘোষ ও পার্থ ঘোষ, স্বামী-স্ত্রী এই জুটি আবৃত্তির জগতের অন্যতম সেরা জুটি। গৌরী ঘোষের কিছুদিন আগেই মৃত্যু হয় পার্থ ঘোষের।
আকাশবাণী রেডিওতে উপস্থাপক হিসাবে পথ চলা শুরু গৌরী ঘোষ ও পার্থ ঘোষের। আকাশবাণী রেডিওতে দীর্ঘদিন কাজ করা ছাড়াও মঞ্চেও উপস্থাপনা করেছেন গৌরী ঘোষ ও পার্থ ঘোষ। বাংলা কবিতা নিয়ে তাদের একাধিক সিডি-ক্যাসেট রয়েছে। এরমধ্যে ‘এই তো জীবন’সহ বেশ কয়েকটি জনপ্রিয়।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সাংস্কৃতিকভাবে সহযোগিতা করেছিলেন এই জুটি। তৎকালীন সময় কবি সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবী সহায়ক সমিতির সদস্য ছিলেন তারা। দুজনেই বাংলাদেশের যারা কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে কাজ করেছেন। আকাশবাণীতে তাদের বিভিন্ন ভাষ্য আয়োজন করে দিয়েছিলেন তারা।
এছাড়া তারা মুক্তিযুদ্ধে কাজ করার জন্য বারবার ভারত সরকারকে উদ্বুদ্ধ করতেন। এমনকি বাংলার ঘরে ঘরে গিয়ে অর্থ সংগ্রহ করে শরণার্থী শিবিরে দানও করেছেন তারা।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তারা যে ভূমিকা রেখেছিলেন তা স্মরণ করে শোক প্রকাশ করেছে কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২১
ভিএস/জেআইএম