ওই প্রাণীটি আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) লাল তালিকাভুক্ত বলে জানা গেছে।
সোমবার (৪ মে) দিনগত রাতে কক্সবাজারের রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের মাঝিরঘাটের জঙ্গল থেকে প্রাণীটিকে ধরা হয়।
গর্জনিয়ার পোয়াংগেরখিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী ও গর্জনিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি হাফেজ আহমদ জানান, তারা দীর্ঘ প্রচেষ্টা চালিয়ে ওই প্রাণীটি উদ্ধার করেছেন।
হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী আরও জানান, ইউনিয়নের বেলতলী গ্রাম থেকে মাঝিরঘাট জঙ্গলে যাওয়ার পথে দুই যুবক প্রাণীটি দেখে উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে তিনি আর গর্জনিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি হাফেজ আহমদ স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. কামাল হোসেনের সহায়তা নিয়ে প্রাণীটি তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করেন। এরপর বনবিভাগের লোকজনকে জানালে তার দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। বাদামি রঙের ঘন পশমযুক্ত প্রাণীটির উচ্চতা পাঁচ ফুট, লম্বায় প্রায় ১২ ফুট। চোখ দু’টি গোল, দেখতে বিড়ালের মতো ঘোলাটে। বিভিন্ন ধরনের খাবার দেওয়া হলেও প্রাণীটি শুধুমাত্র কলা খাচ্ছে। বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এদের লজ্জাবতী বানর হিসেবে ডাকা হয়। এটি লরিসিডি পরিবারের একটি অতিবিপন্ন প্রাণী। বিপন্ন এই প্রাণীটি খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে চলে এসেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটি বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত প্রাণী।
দেশের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে এদের এখনও দেখা যায়। সেখানে বেশকিছু লজ্জাবতী বানর আছে। এরা মূলত নিশাচর।
বাংলাদেশ বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক জহির আকন বলেন, কক্সবাজারের গর্জনিয়া ইউনিয়নের জঙ্গলে একটি লজ্জাবতী বানর ধরা পড়েছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। এটি খুবই বিরল প্রাণী। দেশের ১০টি অতিবিপন্ন প্রাণীর তালিকায় এক নম্বরে আছে। এই দুর্লভ প্রাণী আজকাল দেখা যায় না। খাবারের সন্ধানে এটি লোকালয়ে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের সদরের রেঞ্জ কর্মকর্তা এমদাদুল হক মঙ্গলবার (৫ মে) দুপুরে বলেন, উদ্ধার করা ‘বেঙ্গল স্লো লরিস’ নামে ওই প্রাণীটিকে চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু সাফরি পার্কে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০২০
এসবি/এএটি