মহাকাশে বা চাঁদে মহাকাশযান পাঠানোর মহাযজ্ঞে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা সফলভাবে শেষ হলে আর কিছুদিনের মধ্যে মাত্র ১০০ এমএল (সিসি) জ্বালানি খরচে চাঁদে পৌছাবে রকেট।
মহাকাশে রকেট পরিচালনের জন্য নয়া প্রযুক্তির এই রকেটের ক্ষুদ্র মোটর বৈদ্যুতিক শক্তি ব্যবহার দ্বারা বিদ্যুতায়িত কণিকাকে স্থানচ্যুতিকরণ কৌশলের মাধ্যমে প্রচণ্ড বেগের সৃষ্টি করবে। উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত মহাকাশচারী স্পেসশিপগুলোতে বিশাল ও ব্যয়বহুল ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়।
আশা করা যাচ্ছে অচিরেই এ ধরনের রকেটের প্রথম নমুনাটি উন্মোচন করতে যাচ্ছে সুইজারল্যান্ডের লওসানি তে অবস্থিত ইপিএফএল (École Polytechnique Federale de Lausanne) গবেষণাগারের বিজ্ঞানীরা। তারা আশা করছেন এর ফলে স্বল্প-ব্যয়ে মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে নবদিগন্তের সূচনা হবে। প্রসঙ্গত ইপিএফএল হচ্ছে সুইস ফেডারেল ইন্সটিটিউট্স অফ টেকনোলজির দু’টি আলোচিত প্রতিষ্ঠানের একটি।
বাস্তবিক অর্থে ক্ষুদ্র রকেট বা উপগ্রহ টেকনোলোজি যুগান্তকারী পরিবর্তন এনে দেবে মহাকাশ গবেষণায়। কারণ, এ ধরণের মহাকাশগামী রকেট বা যান এদের জ্ঞাতীভাই বর্তমানে প্রচলিত মহাকাশযানের তুলনায় অনেক অনেক সাশ্রয়ী হবে।
ইপিএফএল এর মতে- তাদের তৈরি মাইক্রো থ্রাস্ট মোটরের ফলে ঘণ্টায় ৪০ হাজার কিলোমিটার বেগে চলমান মহাকাশ প্রদক্ষিণকারী যান তার অক্ষের ওপরেই দিক পরিবর্তনে সক্ষম হবে।
ইপিএফএল কর্মকর্তা হেরবার্ট শেয়া সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এ মুহূর্তে ন্যানো স্যাটেলাইট তার কক্ষপথে স্থির হয়ে আছে। আমাদের কাজ হচ্ছে এর যাত্রা শুরু করিয়ে দেওয়া। ’
প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানী মুরিয়েল রিচার্ড বলেন, ‘আমরা হিসেব কষে দেখেছি- মাইক্রো থ্রাস্ট মোটর সহ ১ কেজি ওজনের একটি ন্যানো স্যাটেলাইট চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছাতে ৬ মাস সময় নেবে আর জ্বালানি খরচ হবে মাত্র ১০০ এমএল(সিসি)। ’
ধারণা করা হচ্ছে এ ধরনের রকেট ‘ক্লিনস্পেস ওয়ান’ প্র্রকল্পে ব্যবহার করা হবে। বর্তমানে এ উপগ্রহ প্রকল্পটির উন্নয়ন চলছে ইপিএফএল গবেষণাগারে। ক্লিনস্পেস ওয়ান এর উদ্দেশ্য হচ্ছে মহাকাশ থেকে আবর্জনা সাফ করা।
এই উপগ্রহ মহাকাশে বিক্ষিপ্তভাবে ঘুরে বেড়ানো আবর্জনা কুড়িয়ে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের দিকে ছুড়ে দেবে। আর বায়ুমণ্ডলে এসে অক্সিজেনের সংস্পর্শে তীব্র ঘর্ষণে সেসব পুড়ে ছাই হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, ০২ মার্চ, ২০১২
সম্পাদনা: আহ্সান কবীর, আউটপুট এডিটর