মহর্ষী বাৎসায়নকৃত মাস্টারপিস গ্রন্থ কামসূত্রকে এবার পুরষবাদী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আর শুধু অভিযোগ করেই ক্ষান্ত হননি ভারতীয় লেখিকা কে আর ইন্দিরা, তিনি এর বিপরীতে নারীবাদী কামসূত্র লেখাও শেষ করেছেন।
কামসূত্রের ভিন্নরূপী চরিত্র অর্থাৎ নারীবাদী কামসূত্র রচনার বিষয়ে ইন্দিরা বলেন, আমি গভীর মনোযোগ সহকারে কামসূত্র পড়তে গিয়ে অনুভব করি এটি একটি পুরুষের লেখা গ্রন্থ যেখানে সম্ভোগে নারীদের কিভাবে ব্যবহার করা যায় সে সম্পর্কে বলা হয়েছে।
আর তাই এটা পুরুষালী দৃষ্টিভঙ্গীর পরিচায়ক।
তিনি আরও বলেন, হতে পারে আমার ধারণার সঙ্গে অনেকেই একমত হবেন না, তবে আমার মত হচ্ছে নারীদেরও যৌন স্বাধীনতার দরকার আছে।
ইন্দিরা জানান, তিনি বাৎসায়নের গ্রন্থটি নিয়ে গবেষণা করেছেন।
প্রসঙ্গত, দাম্পত্য সম্পর্কের রোমান্টিক ৬৪ আসনের জন্য ভারfতীয় মাস্টারপিস কামসূ্ত্রের জনপ্রিয়তা বিশ্বজুড়ে। বলা হয়ে থাকে অর্থশাস্ত্রের ক্ষেত্রে মহর্ষী কৌটিল্যের যে স্থান, প্রেমরীতি বা কামকলার ক্ষেত্রে বাৎসায়নের অবস্থান সে পর্যায়ের। ইদানিং পাশ্চাত্যে প্রাচ্যের এ আকরগ্রন্থ বেশ জনপ্রিয়।
উনিশ শতকে প্রাচ্য বিশারদ স্যার রিচার্ড ফ্রান্সিস প্রথম কামসূত্রের ইংরেজি অনুবাদ করেন। প্রাচীন গদ্যরীতিতে অনূদিত এ বইটিতে তখন ছিল শুধু নর-নারীর কামচিত্র আর কামকলার বিবরণের ছড়াছড়ি। সে থেকে বলা যায়, আধুনিক সময় পর্যন্ত খুব কম অনুবাদক বা সম্পাদনাকারী কামসূত্রের চেতনাকে বুঝতে বা প্রকাশ করতে পেরেছেন।
যুগ যুগ ধরে ভালোবাসার ছলাকলা তথা শরীরি সম্পর্কের ক্রিয়া-কৌশল জানার জন্য এই অসাধারণ গ্রন্থটি আদৃত হয়ে এলেও বাস্তবে এটি শুধু কামবিষয়ক ৬৪ কলা’র উৎসগ্রন্থই নয়। এতে আছে আর্থ-সামাজিক বিষয়ে শিক্ষনীয় নানান বিষয়। আছে নর-নারীর পারিবারিক ও সামাজিক জীবনধারার বিবরণ এবং দরকারি নির্দেশিকা ও পরামর্শ। একজন একনিষ্ঠ শিক্ষাগুরুর ন্যায় বাৎসায়ন যুগ-যুগান্তরের মানুষকে দিয়ে গেছেন জীবন যাপন সম্পর্কিত নানান শিক্ষা, নির্দেশনা।
বাৎসায়ন ঠিক কোন সময়ের মানুষ ছিলেন বা কখন তিনি এই মাস্টারপিস গ্রন্থ রচনা করেন তা নিশ্চিত করে বলা মুশকিল। তবে তুলনামূলক নির্ভরযোগ্য ধারণা মতে- খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতকে কামসূত্র লেখেন তিনি। সংস্কৃতে লেখা এ বইটি বাংলাসহ বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, ১০ এপ্রিল,২০১২
সম্পাদনা: আহ্সান কবীর, ২০৪১ ঘণ্টা, ১০ এপ্রিল, ২০১২