ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

কাণ্ডটা উদ্ভট, তবে যুক্তিটা সরেস!

সত্যি বিচিত্র ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:০২, এপ্রিল ১২, ২০১২
কাণ্ডটা উদ্ভট, তবে যুক্তিটা সরেস!

ভাঙা চীনেমাটির তৈজসপত্র দিয়ে একটি ব্রান্ড নিউ রেঞ্জ রোভার গাড়িকে বিদঘূটে কায়দায় আবৃত করে দুনিয়ার তাবত মোটরপ্রেমির আক্কেল গুড়ুম করে দিয়েছেন চীনা নাগরিক ঝাং লিয়ানঝি। তার দাবি, এই উদ্ভটকাণ্ডে খরচা পড়েছে সব মিলিয়ে (গাড়ির দামসহ) ১ লাখ পাউন্ড।



এই কর্ম সাধনের জন্য পছন্দের চীনেমাটির তৈজসপত্র সংগ্রহে উত্তর চীনের তিয়ানজিন এলাকার এই বাসিন্দা মাসের পর মাস সময় লাগিয়েছেন। কাঁচামাল সংগ্রহ শেষে সেগুলো খেয়াল-খুশীমত ভেঙে-চুড়ে টুকরো টুকরো করেন।

এরপর তার গাড়ির সারা শরীর জুড়ে ওই ভাঙ্গা বাসন-কোসনের টুকরোগুলো মনের মাধুরী মিশিয়ে লাগিয়েছেন। একাজে তিনি আরও ব্যবহার করেন সিমেন্ট, রং আর আঠা। চাকা আর আয়না ছাড়া পুরো গাড়িকে চীনি-টিকরির প্রাগৈতিহাসিক এক হুলিয়ায় লেপ্টে দেন ঝাং (বাংলাদেশে চীনেমাটির বাসন-কোসনের ভাঙ্গা টুকরোয় দালান-মসজিদ নকশা করার প্রাচীন রীতিকে বলা হয় চীনি-টিকরির কাজ। ঐতিহ্যবাহী তারা-মসজিদসহ পুরান ঢাকা এবং দেশজুড়ে চীনি-টিকরির কাজের সমৃদ্ধ স্বাক্ষরবাহী অনেক মসজিদ-মন্দির-গির্জা-দালান রয়েছে)।

ঝাং তার এই লা-জওয়াব শিল্পকর্মের সবশেষে, ফিনিশিং পর্যায়ে এসে বনেটের ওপর কিছুটা বামদিক ঘেঁষে পৃথিবীর একটি ক্ষুদ্রাকার প্রতিরূপ স্থাপন করেন।

সম্পতি নিজের এই অচিন্তনীয় কর্ম সম্পর্কে তিনি বলেন- আমার কাছে মনে হয়, হাল দুনিয়ার এতসব প্রাযুক্তিক উন্নতি আর মানুষের এত ক্ষমতাবান হয়ে ওঠার পরও পৃথিবী খুবই এছ খুবই ভঙ্গুর অবস্থায়, খুব সহজেই একে ভেঙ্গে চুরমার করে দেওয়া যায়।

আর তাই আমরা সবাই যদি ভঙ্গুর কোনও জিনিস দিয়ে আবৃত এরকম গাড়ি চালাই, তাহলে পৃথিবীর প্রতি আমাদের দরদ তৈরি হবে যাতে করে তার প্রতি আরও যত্নশীল হয়ে উঠবো আমরা।

বলতেই হয়, ঝাং সাহেবের কাণ্ডটা যত উদ্ভটই হোক না কেন, একে ধোপে টেকাতে যুক্তিটা কিন্তু দাঁড় করিয়েছেন লাগসই।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, ১২ এপ্রিল, ২০১২

সম্পাদনা: আহ্‌সান কবীর, আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।