‘থার্ড আই অফ নির্মল বাবা’ নামে টিভি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আজব সব তরিকায় সমস্যাক্রান্ত ভক্তদের মুশকিল আসানের তরিকা বলে দিতেন তিনি। এ ধরনের মুশকিল আসানের পরামর্শদানের অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার হয় স্যাটেলাইট চ্যানেলে।
শুধু নিজ দেশ ভারত নয়, দুনিয়াজুড়ে লাখো কোটি মানুষ সেই অনুষ্ঠান দেখে ভক্তিতে গদ গদ হয়ে পড়তেন আর পাঠাতেন তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সামর্থ্যমত অর্থ। এতেই ফুলে ফেঁপে উঠছিল তার অ্যাকাউন্ট।
সেই টাকায় দিল্লি গ্রেটার কৈলাশে কিনেছেন আবাসিক হোটেল অশোরা। তার ইচ্ছা হোটলের একটি চেইন খুলবেন তিনি বিভিন্ন শহরে। ব্যাংকে জমা টাকার ওপর সুদ পান ৮৫.৭৭ লাখ রুপি। অথচ এক যুগ আগেও মাত্র ৩ শ’ টাকা বাসা ভাড়া শোধ করার ক্ষমতা ছিল না তার। ৫ মাসের ভাড়া দিতে না পাড়ায় বাসায় তালা মেরে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
উদ্ভট সব টিপ্স
বাবা নিজেকে কুসংস্কার বিরোধী দাবি করেন। তিনি বলেন, আমি অন্ধবিশ্বাস দূরকারী হিসেবে পরিচিতি। আমি তন্ত্র-মন্ত্রের অশুভ নাগপাশে মানুষকে ফাঁসানোর বিরোধী।
কিন্তু তার সমাবেশে আগতদের সমস্যা সমাধানে বা বিপদ মুক্তির জন্য তিনি যেসব অদ্ভূত আর উদ্ভট পরামর্শ দেন তা কুসংস্কারের চেয় কোনো অংশে কম নয়। এসব পরামর্শের কিছু নমুনা- কালো পার্সে (মানিব্যাগে) টাকা রাখুন, পূজার স্থলে মৃত মুরব্বীদের ছবি উল্টিয়ে রাখুন, আলমারিতে ১০ টাকার নোটের বান্ডিল রাখুন, পেটভরে ফুচকা খান প্রভৃতি। বাবার মতে- উল্লেখিত উদ্ভট কাজ করলে সমস্যা কেটে যাবে। তার নির্দেশিত বিদঘুটে পন্থা অনুসরণ করতে গিয়ে অনেকেই উল্টো ফল পেয়েছেন।
গোমর ফাঁক করে দেয় মিডিয়া
কিন্তু কথিত তৃতীয় নয়নের দাবিদার নির্মল অর্থাৎ ‘ময়লাহীন’ এ বাবার সাম্রাজ্যে চির ধরিয়েছে পত্রিকাওয়ালারা। দেখা গেছে- নির্মল নামের এ ‘বাবা’র চরিত্রে ময়লার ভাণ্ডার বেশ সমৃদ্ধ।
তার বিরদ্ধে একের পর এক যেসব গুরুতর অভিযোগ আসছে তার মধ্যে অন্যতম হলো- টাকার বিনিময়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ভূয়া ভক্তদের মাধ্যমে নিজ গুণকীর্তন-মহিমা প্রচার করা। এর কায়দায় লাখো কোটি সাধারণ ধর্মভীরু মানুষের মনে ভক্তির আসন পাকাপোক্ত করেন তিনি। যার অনিবার্য ফল হচ্ছে- তাদের পকেট থেকে বাবার ভাণ্ডার পূর্ণ করতে কারি কারি টাকা আসার ক্ষেত্রটি দিন দিন বিস্তৃতই হচ্ছিল।
পত্রিকার রিপোর্ট মোতাবেক- শুধু চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত তার নামীয় দুটি অ্যাকাউন্টে এ যাবত জমা হয়েছে ২৩২ কোটি রুপি। তবে মিডিয়ায় তার বিরুদ্ধে চলমান অভিযোগের বিরামহীন শরে ত্যক্তবিরক্ত বাবা এবার পাল্টা জবাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে তিনি আশা করছেন এই জবাব দেওয়ার দায়িত্বটা পালন করবেন তার ভক্তরা। তিনি টিভি মারফত ভক্তদের বলেছেন- মানুষকে সত্যটা বলে দেওয়ার জন্য। তার ভক্ত তালিকায় আছেন একেবারে সাধারণ মানুষ থেকে নিয়ে ঊঁচুস্তরের রাজনীতিক, সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ীসহ অন্যান্য পেশাজীবী।
ঝাড়খণ্ডের পত্রিকা ‘প্রভাত খবর’ নির্মল বাবার থলের বিড়ালটাকে বাইরে নিয়ে আসে। এরপর থেকে বাবাকে জড়িয়ে একের পর এক নেতিবাচক খবরের সূত্রে এখন ইনকাম ট্যাক্সওয়ালারাও তার সম্পদের হিসাব আর ট্যাক্স ফাঁকির ফর্দটা মেলাতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, ভক্তদের কাছ থেকে নেওয়া টাকায় দিল্লিতে বিলাসবহুল হোটেল ব্যবসা চলছে তার নামে।
টিভি চ্যানেলে (সনি টিভিতে সকালের অনুষ্ঠান) বিজ্ঞাপন দিয়ে রীতিমত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মানুষের মুশকিল দূর করেন এই নির্মল বাবা। কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতিতে তার এই মুশকিল সহসাই আসান হচ্ছে না বলা যায়। তার বিরুদ্ধে সমগ্র ভারত জুড়ে বিক্ষোভ দানা বেঁধে উঠছে ক্রমশ। অনুসারীদের মাঝে তার প্রতি ভক্তির ব্যারোমিটার দ্রুত নামছে। আগে শুধু ভারত থেকেই রোজ প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ভক্ত তার অ্যাকাউন্টে নানা অংকে নজরানার টাকা পাঠাতো। কিন্তু গত শুক্রবার তা নেমে এসেছে ১৮০০ এর কোঠায়।
ইটের ব্যবসায়ী থেকে ‘আধ্যাত্মিক বাবা’!
ঝড়খণ্ড রাজ্যের সাবেক স্পিকার ইন্দর সিংয়ের শ্যালক নির্মলজিৎ নারুলার জন্ম ১৯৫০ সালে এক শিখ পরিবারে। এক পুত্র ও এক কন্যার জনক, স্ত্রীর নাম সুষমা। ইন্দরসিং জানান, ১৯৬৪ সলে তিনি নির্মলের chfhনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তখন নির্মলের বয়স ছিল ১৪-১৫। সত্তরের দশকে তার পিতার হত্যাকাণ্ডের পর মা তাকে ডাল্টননগর পাdTঠিয়ে দেন। এসময় নির্মল একটি কাপড়ের দোকান দেন যা কেয়েক বছর পর বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ‘নির্মল ব্রিক্স’ নামে ইটের ব্যবসা শুরু করেন। তবে তাতেও সাফল্য আসেনি। শেষ পর্যন্ত নানান অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে ‘মুশকিল আসান’ ব্যবসায় মনোযোগ দেন- হয়ে ওঠেন অন্যের বিপদাপদ দূরকারী বাবা ওরফে নির্মল বাবা।
ঝাড়খণ্ডের এক পরিবার অভিযোগ করেছেন, ১৯৯৮ সালে এক সঙ্গীসহ নির্মল বাবা তাদের দুটি কামড়া ৩০০ রুপিতে ভাড়া নেন। কয়েক মাস ঠিকঠাকমত ভাড়া দেওয়ার পর শেষের দিকে ৫ মাসের ভাড়া বাকি পড়ে যায়। এ অবস্থায় ১৯৯৯ সালের দিকে তারা দু’জন ঘরে তালা মেরে লাপত্তা হয়ে যান।
অস্বীকার
লক্ষ্ণৌ এর গোমতিনগর থানায় নির্মল বাবার প্রতারণার বিরুদ্ধে অবিযোগ দায়ের করেছেন দুই কিশোর ভাই তান্না ঠাকুর (১৬) ও আদিত্য ঠাকুর (১৩)। এরপর ভূপালের অরেরা কলোনির বাসিন্দা রাজেস সেন অভিযোগ দায়ের করেছেন বাবার বিরুদ্ধে । সেনের অভিযোগ- তার সমস্যার সমাধান চাইলে বাবা তাকে জানিয়েছেন ঘরে কালো মানিব্যাগ রাখলে ফল মিলবে। কিন্তু কথামত কিছুই হয়নি। অপরদিকে নির্মল বাবা টিভি চ্যানেলে এর জবাবে বলেছেন, আমি কখনো অলৌকিকত্বের দাবি করিনি।
কিন্তু বাস্তব হচ্ছে, নির্মল বাবা তার ওপর ঐশ্বরিক কৃপা আছে বলে দাবি করেছেন অনেকবার।
এদিকে, জয়পুর আর ভূপাল পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ দু’টি শহরের বিভিন্ন থানায় অভিযোগ নিয়ে আসছেন বাবার সাবেক ভক্তরা। ভূপাল পুলিশের সিএসপি রাজেশ সিংহ ভাদোরিয়া জানান, নির্মল বাবাকে খুব শিগগির জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধরা হবে।
ব্যাংকের দুই হিসেবে ২৩২ কোটি রূপি!
প্রভাত খবরের মতে, নির্মল বাবার দু’টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। একটি তার আশ্রমের নামে অপরটি তার নিজ নামে। আশ্রমের নামের চেয়ে নিজ নামের অ্যকাউন্টে টাকার পরিমাণ বেশি। নির্মল দরবারের নামে যে অ্যাকাউন্টে (এই নম্বরটি টিভি বিজ্ঞাপনে দেখানো হয়) চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত ১০৯ কোটি রূপি জমা হয়েছে। পক্ষান্তরে নির্মলজিৎ সিং নারুলা নামে তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত জমা হয়েছে ১২৩ কোটি ২ লাখ ৪৩ হাজার ৯৭৪ টাকা জমা হয়েছে। এটি ছিল তার গুপ্ত অ্যাকাউন্ট। আর সাড়ে ৩ মাসের হিসেবে ওই অ্যাকাউন্টে যেভাবে টাকা জমা হয়েছে সেভাবে বেড়িয়েও গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৩ এপিল সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই হিসাবে জমা ছিল ১৭.৪৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ বেড়িয়ে গেছে ১০৫.৫৬ কোটি টাকা।
জানা গেছে, নির্মল দরবারের নামে জমা হওয়া টাকা পরে বাবার নিজ নামের অ্যাকউন্টে ট্রান্সফার করা হয়। তার নিজ নামের ওই অ্যকাউন্টের নমিনি সুষমা নারুলা তার স্ত্রী।
এছাড়া বাবার নামে ২৫ কোটি রূপির ফিক্স ডিপোজিট রয়েছে। ভক্তদের কাছে থেকে পাওয়া দানদক্ষিণায় বাবার সম্পদের আসল পরিমাণ কত হতে পারে তা এ দুটি হিসেবেই অনুমান করা যায়।
নিবন্ধন শুল্ক ও দাসবন্ধ শুল্ক নামে ভক্তদের কাছ থেকে নির্মল বাবার অর্থ গ্রহণের দুটি খাত আছে। তার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে নিবন্ধন শুল্ক হিসেবে মাথাপিছু গ্রহণ করা হয় ২ হাজার রূপি করে। প্রতি সমাবেশে প্রায় ৫ হাজার লোক হয়। প্রতি মাসে এ ধরনের ৫ থেকে ৭টি সমাবেশ হয়। সমাবেশগুলো প্রায় ৩৬টি চ্যানেলে সম্প্রচার করা হয়। অপরদিকে দাসবন্ধ শুল্কের খাতে ভক্তদের আয় করা অর্থের এক দশমাংশ প্রতি পূর্ণিমা তিথির আগে বাবার কাছে জমা করতে হয়। বাবা ভক্তদের বলেন, নিজ আয়ের এক দশমাংশ তাকে দান করলে তাদের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
ব্যক্তিগত সাক্ষাৎপ্রার্থীদের কাছ থেকে ১০ হাজার রুপি পর্যন্ত নেওয়া হয়।
কিন্তু বাবার গোমর ফাঁস হয়ে যাবার পর থেকে ভক্তদের নজরানা কমতে শুরু করেছে। এর মধ্যে আইসিআইসিআই ব্যাংকে নির্মলের নিজ অ্যকাউন্টে গত শুক্রবার মাত্র ৩৪ কোটি রূপি জমা পড়েছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে পত্রিকায় খবর বের হওয়ার আগ পর্যন্ত এ অ্যাকাউন্টে প্রতিদিন প্রায় ১ কোটি রূপি জমা হতো।
এফআইইউর নজর
ভারতের ফাইনেন্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (এফআইইউ) নির্মল বাবার বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখতে পারে। এছাড়া একই সঙ্গে তার নামে আর কি কি হিসাব আছে, বিদেশি ভক্তদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ এবং এসব সূত্রে প্রাপ্ত অর্থ কোথায় কিভাবে বিনিয়োগ করেছেন, বিদেশে কোনও বিনিয়োগ করেছেন কি না তারও খোঁজ নিতে পারে আয়কর বিভাগ।
আমার এখানে কোনো গড়বড় নেই
তাকে নিয়ে চলমান এসব অভিয়োগের ব্যাপারে গত শুক্রবার নিরবতা ভেঙ্গেছেন নির্মল বাবা। আজতক টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমার এখানে কোনো গড়বড় নেই। আমি চ্যালেঞ্জ করছি আন্তর্জাতিক কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তদন্ত করা হোক। আমার বাৎসরিক টার্নওভার ৮৫ কোটি না, এটা ২৩৪ থেকে ২৩৮ কোটি রুপি যার আয়কর পরিশোধ করা হয়। এ টাকায় আমি একটি ভব্য মন্দির বানাতে চাই।
সর্বশেষ নির্মল বাবার বিরুদ্ধে দিল্লি, আজমির, ঝাড়খণ্ড, বিহার, ভূপালসহ সর্বত্র বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন তার এক সময়ের ভক্তরা। আজমিরে তার কুশপুতুল দাহ করে বিক্ষুব্ধরা। নির্মল বাবার নামে ধোঁকাবাজীর অভিযোগে মিরাট আদালতে মামলা করেছেন হরিশবীর সিং নামে তার সাবেক এক ভক্ত। ১ মে হরিশের আর্জির ওপর আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
পেশায় লেকচারার হরিশ অভিযোগ করেন- অসুস্থতা থেকে মুক্তি পেতে ১০ হাজার রুপি খরচা করে বাবার সাক্ষাৎ পান। নির্মল তাকে বলেন- ক্ষির খেতে। মিষ্টি স্বাদের ক্ষির বেশি পরিমাণে খাওয়ার পর তার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। এরপর চিকিৎসকের কাছে গেলে জানা যায়, তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।
চিকিৎসার পর যখন তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন তখন নির্মল বাবার কাছ থেকে ফোন আসে। ফোনে বলা হয়- বাবার সমাবেশে এসে নিজের সুস্থতার ব্যাপারে বলতে হবে। অর্থাৎ নির্মল বাবার কল্যাণেই তিনি সুস্থ হয়েছেন এটা বলতে বলা হয় হরিশকে।
ভূপালেও তার বিরুদ্ধে ধোঁকাবাজির অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়। সিটি এসপি জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশকে পুরো বিষয়টি তদন্ত করতে বলা হয়েছে। এরপর নির্মল বাবার বক্তব্য জানার জন্য তাকে নোটিশ দেওয়া হবে। প্রয়োজনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হবে। আমাদের জন্য এটা জানা জরুরি হয়ে পড়েছে যে নির্মল বাবা সত্যিই লোকজনের সঙ্গে ধোকাবাজি করছেন কি না?
এখন সামনের দিনগুলোই বলে দেবে নির্মলজিৎ সিং নারুলা এই পরিস্থিতি সামাল দিয়ে তার ‘বাবাত্ব’ টিকিয়ে রাখতে পারবেন নাকি আইনের চোখে অপরাধী সাব্যস্ত হয়ে শাস্তি ভোগ করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, ১৬ এপ্রিল, ২০১২
সম্পাদনা: আহ্সান কবীর, আউটপুট এটির