সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে : বোনের বিয়ের কেনাকাটা করছেন নারায়নগঞ্জের সোহাগ নামের এক যুবক। মোস্তফা সেন্টারে একটি সোনার হারের ওজন দেখলেন তিনি।
সিঙ্গাপুরের সেরানগুন রোডের মোস্তফা সেন্টার জুড়ে শত শত বাংলাদেশির সমাগম। এ যেন এক খণ্ড বাংলাদেশ। সপ্তাহের প্রতি রোববার সেরাংগুন রোডের মোস্তফা সেন্টারকে ঘিরে সিঙ্গাপুরে কর্মরত বাংলাদেশিদের ভিড় জমে। কেউ আসেন কেনাকাটা করতে। কেউ আসেন আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে। আবার কেউ বাংলাদেশি বিভিন্ন সুস্বাদু খাবার খেতেও চলে আসেন এখানে।
নয়ন নামের এক যুবক ফখরুদ্দিন রেস্টুরেন্টে ঢুকেই হাঁক দিয়ে বলেন, ‘ও দেশি ভাই এক প্লেট খিচুরি আর ইলিশ দেবেন?’
নয়নের সঙ্গে আলাপ পরিচয়ের এক ফাঁকে তিনি বললেন, ‘এখান থেকে অনেক দুরে থাকেন। শুধু দেশের পছন্দের খাবার খাওয়ার জন্যে চলে এসেছেন। ’
তিনি পাঁচ বছর আগে সিঙ্গাপুর আসেন। এর মধ্যে একবার দেশে গিয়েছেন। বাড়ি নরসিংদীতে। একটি শিপইয়ার্ডে চাকরি করেন। মাসে প্রায় ২ হাজার সিঙ্গাপুর ডলার আয় করেন। সিঙ্গাপুরে জীবন নির্বাহ খুবই ব্যয়বহুল। তারপরও প্রতি মাসে পরিবারের জন্যে টাকা পাঠান তিনি।
এদিকে ফখরুদ্দিনের সামনে মোহাম্মদী রেস্টুরেন্টেও বাংলাদেশিদের ভিড়। খাবার মেন্যুতে রয়েছে পাবদা মাছ, কই, ইলিশ, মুরগি, গরু, সবজিসহ আরও অনেক আইটেম। এসব এলাকায় বাংলাদেশি রেষ্টুরেন্ট’র পাশাপাশি ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টও রয়েছে। এলাকাটি ‘লিটল ইন্ডিয়া’ নামেও সমধিক পরিচিত।
এ এলাকায় বাংলাদেশি মনোহারি পণ্যের একটি দোকান চোখে পড়ল। ওই দোকানের পাশে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক কালের কন্ঠসহ আরও কয়েকটি পত্রিকা। বিদেশেও প্রবাসীরা জাতীয় দৈনিক পড়ার স্বাদ পাচ্ছে । অনেককে আগ্রহ নিয়ে এসব দৈনিক কেনেন দেশের খবর জানতে।
সিঙ্গাপুরে যে কয়দিন ছিলাম আমার আবাস নিউটন রোডের রয়েল হোটেল থেকে সকাল বিকেল দিনে দু’বার ছুটে এসেছি সেরাংগুন রোডে কি যেন এক অপার্থীব আকর্ষণে। এ যেন নাড়ির টান। বিদেশ-বিভূঁইয়ে এতগুলো বাংলদেশির অবস্থানের কারণেই বোধহয় মনের ওপর এতটা প্রভাব তৈরি করেছে সেরানগুন। ওখানে খুঁজে পেয়েছি আমার প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের একটি ছোট্ট আদল।
বাংলাদেশ সময় : ১৩১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১২
সম্পাদনা : আরিফুল ইসলাম আরমান, নিউজরুম এডিটর; আহ্সান কবীর, আউটপুট এডিটর