ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবো: হিলারি ক্লিনটন

অনুবাদ: ফারজানা জামান রুম্পা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:৩৬, মে ৫, ২০১২
ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবো: হিলারি ক্লিনটন

হিলারি ক্লিনটন ২০০৬ সালের ১৪ মে লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দেন। স্বপ্নযাত্রার পাঠকদের জন্য বক্তৃতার অংশবিশেষ অনুবাদ করে দেওয়া হলো।



আমার প্রথম পরিচয় আমি একজন মা। স্বাভাবিকভাবেই সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি চিন্তা করি। একই সঙ্গে আবার আশাবাদীও হই। আমার মা আমাকে  এবং আমার ভাইদের নিয়ে ভাবতেন। ভাবতেন আমাদের বেড়ে ওঠা নিয়ে। এখন আমিও ভাবি।

মা চিন্তা করতেন বাইরের বিশ্বের সঙ্গে আমরা কি করে তাল মেলাবো। আজকে একজন মা হিসেবে আমিও ঠিক সেভাবেই ভাবি। এখন আমরা বিশ্ব নিয়ে অনেক কিছু জানি। কিংবা চাইলেই জানতে পারি। বিশ্বের কোথায় কি ঘটছে তা আমাদের জানাশোনার মাঝে আছে বলেই আমরা এখন কোনো ঘটনাকে উপেক্ষা করতে পারি না। বিশ্ব হাতের মুঠোয় চলে এসেছে।  

সত্যি বলতে কি পৃথিবীটা ছোট হয়ে আসছে। বলা যায়, চেনা জানা সমতল ভূমির মতো। যেন একটি খোলা মাঠ। খোলা মাঠের মতো বিশ্বে আমরা কি করে চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করবো? এমন প্রশ্নই মনের মধ্যে ঘুরপাক খায়।  
প্রায়ই আমি বলি, `ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি চিন্তা করি’। এও বলি, `আমি চাই তরুণরা আরও বেশি পরিশ্রমী হোক’।

আমরা এখন প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে সময় পার করছি। যেখানে আজ তোমরা বসে আছো সেখানে একদিন আমিও বসেছিলাম। এভাবে কাল অন্যরা আসবে। আসতেই থাকবে। দিন বদলাচ্ছে। যুগ পাল্টে যাচ্ছে।

তবে এখনও তেমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যা তোমাদের পথে  বাঁধা তৈরি করতে পারে। তরুণ প্রজন্মকে বিশ্ব সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। তাদের দায়বদ্ধতার মধ্য দিয়ে নিজেকে তৈরি করতে হবে।   সেজন্যই পরিশ্রম করা জরুরী।

আমি চাই তোমার ইচ্ছে আর চাওয়ার সীমান্তকে আরো বিস্তৃত করতে, যেন তুমি ভবিষ্যতকে নিজেই তৈরি করতে পারো। কারণ এই যুগ হলো প্রতিযোগিতার যুগ। এখানে কেউ কাউকে ছাড় দেয় না, এখানে টিকে থাকতে হয় মেধার জোরে। মেধা না থাকলে তুমি প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে যাবে।  

আমি একবার আমার শহরে গিয়ে শুনি চীন ও ভারত নাকি আউটসোর্সিংয়ের বাজারে ভালো কাজ করছে। মজার বিষয় হলো, এটি কোনো প্রতিষ্ঠানের চাকরি নয়। ঘরে বসেই কাজ করা যায়। তারা কেউ প্রকৌশলী অথবা কেউ রেডিওলজিস্ট।  

গতবছর আমি একটি হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম, ইন্টারনেট ব্যবহার করে এক্সরে রিডিং নেওয়া হচ্ছে। এতো দূরে বসে এক্সরে রিডিং নিয়ে ভারতে বসে কাজটি অতি দক্ষতার সঙ্গে করছেন একজন ভারতীয় রেডিওলজিস্ট।

মানে বুঝতে পারছো? আমরা ভবিষ্যতের প্রতিযোগিতার প্রায় মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছি? তোমাদের প্রজন্মে যারা স্মার্ট, কর্মঠ, সামাজিকতায় দক্ষ।    

তোমরাই বিশ্বায়নের এই যুগে বিশ্বকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।   তোমরাই বিশ্বব্যাপী  উষ্ণতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারবে। তোমরাই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে পারবে। তোমরাই সব কিছু পারবে।

সেজন্য আমাদের প্রয়োজন তোমাদের মেধা। সেই সঙ্গে মানুষের সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। যে সম্পর্ক ভবিষ্যৎকে সাজাতে পারবে অতি সহজে।

একটি বিষয় তোমরা জানো। দুঃজনক হলেও সত্যি যে আমরা মাঝে মাঝে নিজেরাই নিজেদের  ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াই। নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করে সময় নষ্ট করি। ভবিষ্যৎ নিয়ে ভেবে ভেবে নিজেরাই ভয় পাই।

কিন্তু আমি তোমাদের বিশ্বাস করি। তোমরাই এসবকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে পারবে। বিশ্বকে এখনই জেগে উঠতে হবে। ধরতে হবে নিজেদের ভবিষ্যতের হাল। তোমাদের জয় হোক।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, মে ৫, ২০১২

সম্পাদনা: শেরিফ আল সায়ার, বিভাগীয় সম্পাদক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।