ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

শিশু মকবুল ও তার মা

ইলিয়াস সরকার, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:২৩, মে ১৩, ২০১২
শিশু মকবুল ও তার মা

ঢাকা : আমার আম্মুর খোঁজ খবর রাখে না কেউ। আমার আব্বাও রাখে না অনেক দিন।

এ কারণে আমাকেই আম্মার সব দায়দায়িত্ব নিতে হয়। কারণ আম্মুকে আমি খুব ভালোবাসি। আম্মুর জন্য মরতেও পারি।

শনিবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে নির্মাণাধীন ভবনের রঙের কাজ করা আট বছরের শিশুশ্রমিক মকবুল হোসেনের অনুভূতি এটা।

মকবুলের বাড়ি রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায়। ঢাকায় থাকে শাহজাহানপুর কলোনিতে। প্রিয় মায়ের সঙ্গে।

মকবুল জানায়, তারা দুই ভাই। তার বড় ভাই গ্রামে রিকশা চালায়। আর সে আম্মুকে নিয়ে ঢাকায় থাকে। প্রতিদিন সকালে রঙের কাজে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। ফেরে সন্ধ্যায়। আর তখন মা বসে থাকেন বালতি ভর্তি পানি নিয়ে। সারাদিন রঙের কাজ করে তার জামাকাপড় ময়লা হয়ে যায়। তা পরিষ্কারের জন্য তার মা পানি নিয়ে মকবুলের জন্য অপেক্ষা করেন।

রোববার বিশ্ব মা দিবস সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই মকবুলের। ‘মায়ের জন্য আজ এ বয়সে রঙের ব্রাশ হাতে নিয়েছি। সারা দিন কাজ করি। প্রতিদিন সন্ধ্যায়ই বাসায় মায়ের কাছে ফিরে আমার ভালো লাগে। ’
 
‘আমি আম্মুকে বাইরে কাজ করতে দিই না। যা রোজগার করি তাই নিয়ে আমাদের ছোট্ট সংসারটি চলে। দৈনিক ১২০ টাকা পাই। এতে আমাদের চলে। ’

রাজধানীতে মকবুলের মতো অনেক শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হিসেবে মোটর ওয়ার্কশপ, ওয়েল্ডিং, গ্লাস কারখানা, বেলুন কারখানা, লেদ মেশিন, রিকশা চালানো, মাদক বাহক, বিড়িশ্রমিক, বাস-ট্রাকের হেলপার, নির্মাণশ্রমিক, গৃহ শিশুশ্রম, এমব্রয়ডারি, চিংড়ি হ্যাচারি, শুঁটকি তৈরি, লবণ কারখানা, কৃষিকাজ, বেডিং স্টোরের শ্রমিক, ইট ভাঙা, কুলি হিসেবে কাজ করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৬ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।