ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

গান ও গণিতের রঙ্গে

তারুণ্যেই বদলাচ্ছে দেশ: চমক

শেরিফ আল সায়ার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:১৮, মে ২১, ২০১২
তারুণ্যেই বদলাচ্ছে দেশ: চমক

কয়েকদিন আগে ইউটিউবে একটি গান শুনছিলাম। গায়ক অপরিচিত।

গান শুনে এতোটাই মুগ্ধ হয়ে পড়ি যে অপরিচিত মানুষটির সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে উঠি। খুঁজে পেতে খুব একটা বেগ যে পেতে হয়েছে তাও না। খুঁজতে গিয়ে ইউটিউবে পাই ‌‘গণিতের রঙ্গ’ নামে গণিতের উপর বেশ কিছু লেকচার। সহজ ভাষায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় মজা করে অত্যন্ত ভালোবাসার সঙ্গে তুলে দিচ্ছেন গণিতের নানান দিক। মানুষটির নাম চমক হাসান।

আমার কাছে অপরিচিত হলেও জানতে পারলাম বর্তমান সময়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে চমক হাসান গণিতের শিক্ষক হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করেছেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যারোলানাতে পিএইচডি করছেন। গবেষণার পাশাপাশি গণিতের রঙ্গ নিয়ে কাজ করছেন চমক হাসান।

চমক হাসানের সঙ্গে ফেসবুকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। কথা হয় গণিত ও গানের প্রতি তার অন্যরকম ভালোবাসা নিয়েও। স্বপ্নযাত্রার পাঠকদের সঙ্গে ভিন্ন ধরনের এই মানুষটিকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য অনলাইনে নেওয়া সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হলো।

আপনি গণিতে বেশ পারদর্শী। তবে শুরুতেই আমি গান নিয়ে প্রশ্ন করতে চাই। আপনি চমৎকার গান গাইতে পারেন। গানের প্রতি ভালোবাসার বিষয়টি নিয়ে বলেন।  

এইচএসসি পর্যন্ত কুষ্টিয়াতেই পড়ালেখা করেছি। এরপরে বুয়েটে আসা। গান, গণিত দুটোর প্রতিই আগ্রহের শুরু কুষ্টিয়া থেকে।   কুষ্টিয়ার সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল তো দেশখ্যাত। তবে, সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসার শুরুটা বাবার থেকে। উনি সংস্কৃতিমনা মানুষ। প্রতিবছর পহেলা বৈশাখে আব্বু আমাকে নিয়ে যেতেন উদীচীর বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে, তার কিছুদিন পরেই হতো শিলাইদহে রবীন্দ্র জয়ন্তী। সেখানেও আব্বু বন্ধুদের সঙ্গে দল বেঁধে যেতেন, সঙ্গে আমিও থাকতাম- কী যে ভালো লাগত!

স্কুলে আমার দুই বন্ধু তন্ময় আর শোভন খুবই চমৎকার গাইত। আমি অবাক হয়ে শুনতাম। আমার মাঝে মাঝে মনে হতো আমিও মনে হয় গাইতে পারব। ওরা যখন মঞ্চে গাইত আমারও খুব গাইতে ইচ্ছে হতো। কিন্তু সাহস করে মঞ্চে কখনও গাওয়া হয়নি। মঞ্চে না গাইলেও বন্ধুদের সঙ্গে প্রায়ই গাইতাম।

গান ব্যাপারটাকে সত্যিকার অনুভব করতে শুরু করি ক্লাস নাইন-টেন এর দিকে। সন্ধ্যায় রসায়ন স্যারের কাছে পড়তে যেতাম। ফেরার পথে মাঠের মধ্যে বন্ধুরা মিলে বসতাম।   বন্ধু তন্ময় গিটার বাজিয়ে গাইত। আমরা গলা মেলাতাম, রাতে খোলা আকাশের নিচে একটা অদ্ভুত অনুভূতিতে ভাসতাম সবাই! তন্ময়ের কাছ থেকেই গানের স্কেল, সুরের ধারণাগুলো শিখি।

আমি ইউটিউবে দেখেছি। এমনকি বুয়েটের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি আপনি প্যারোডির ছন্দ মেলাতে ওস্তাদ।

হ্যা। ছোটবেলা থেকেই আমি মুখে মুখে প্যারোডি গান বানাতে পারতাম। বুয়েটে আসার পর প্যারোডি দিয়েই গানের শুরু- এরপর বুয়েটের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘মূর্ছনা’র সঙ্গে জড়াই। বুয়েটে যাওয়ার পরই প্রথম মঞ্চে গেয়েছি!






এবার গণিতের প্রসঙ্গে ফিরে আসি। আপনার পছন্দের বিষয়গুলোর একটি হলো গণিত। ছোটবেলায় সবাই যেখানে গণিতকে ভয় পায় সেখানে আপনার সংখ্যার প্রতি ভালোবাসা জন্মালো কীভাবে?

গণিতের প্রতি ভালবাসার শুরুও নাইন টেন এই সময়টার দিকে। সংখ্যার প্রতি ভালোবাসা ছিল সবসময়ই। কিন্তু গণিতকে গভীরতা দিয়ে দেখার ক্ষেত্রে আমার শিক্ষক অখিল পোদ্দারের (এখন একুশে টিভি-র সাংবাদিক) একটা বড় ভূমিকা আছে। গণিত নিয়ে ওনার সামান্যতমও আগ্রহ ছিল না- ওনার আগ্রহ ছিল চিন্তা করার সৌকর্যে। উনি পড়াতে এসে একটা বড় সময় ব্যয় করতেন ক্লাসের পড়া বাদ দিয়ে দর্শনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গল্প বলতে! এটা আসলেই দারুণ একটা ব্যাপার ছিল।

আমি তখন শিখি- যা কিছু আমরা সহজেই সত্য বলে ধরে নেই, সেখানেও আসলে চিন্তার সুযোগ আছে! গণিতে যাকে সূত্র বলে মেনে নিই, সেখানেও ভাবা যায় – এটা কেন হলো- এটা আসলে কী বলতে চায়, যেই মানুষটা এই সূত্রটা দিলেন, তার মাথায় কীভাবে এই ধারণাটার জন্ম হলো ইত্যাদি।

তখনই জাফর ইকবাল স্যার এবং কায়কোবাদ স্যারের লেখা ‘নিউরনে অনুরণন’ বইটা হাতে পাই। বইটাতে ২০০ টা সমস্যা ছিল, কিন্তু সমাধান ছিল না।   যতটুকু সময় পেতাম বসে বসে সমাধান করতাম। চিন্তা করতাম। একসময় চিন্তার একজন পার্টনার-ও পেয়ে গেলাম। সে আমার বন্ধু শন্তু। শন্তুও খুবই আনন্দ নিয়ে সমাধান করত। আসলে সমস্যা সমাধান করতে শুরু করলে দেখা যায় নানা জিনিস জানি না। সেটা তখন জানাও হয়ে যায়। এভাবেই আসলে নেশা ধরে যায়।  

গণিতের শিক্ষক হিসেবে আপনার একটি জনপ্রিয়তা আছে। সেটা কীভাবে গড়ে উঠলো?

গণিত নিয়ে আমার জ্ঞান অনেক বেশি গভীর না, কিন্তু ভালোবাসা নিয়ে নিজের কোন সন্দেহ নেই। আমার সবসময় মনে হয় এই ভালোবাসাটুকু সবার অনুভব করা উচিত। গণিত বুঝতে এবং বোঝাতে সবসময় ভালো লাগত। ২০০৫ এ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর ২০০৬ এ সুব্রত দা (সুব্রত দেবনাথ) জাতীয় গণিত ক্যাম্পে ক্লাস নেওয়ার সুযোগ করে দেন। ওখানে পড়ানোটা একটা দারুণ ব্যাপার ছিল। ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম।

আমি ভয়াবহ রকম আনন্দ পেয়েছিলাম ক্লাস নিয়ে- কারণ আমি যেটাকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসি ওরাও সেটাকেই প্রাণ দিয়ে ভালোবাসে। ওরাও নাকি আমার ক্লাস বেশ পছন্দ করেছিল। এরপর উদ্ভাস এ ক্লাস নিতে শুরু করি। আমার ছাত্র ছাত্রীরা যদি আমার গণিতটুকু নাও বোঝে, আমার ভালোবাসাটুকু বোধহয় বুঝতে পারে।

যতটুকু জনপ্রিয়তা সেটা এখান থেকেই। একটা ব্যাপার বোধহয় বলা যায়- আমি ছোটবালা থেকেই বিতর্ক, বক্তৃতা, অভিনয়, রচনা প্রতিযোগিতা করতাম- ফলে অনেক মানুষের সামনে কথা বলতে ভয় লাগত না। আমি চেষ্টা করতাম গণিতের আনন্দের অংশটুকু আমার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে।

এটা দুইভাবে করা যায়। মজার খেলা দেখিয়ে আর গল্প বলে অথবা বিষয়টা সত্যিকার অর্থে কী বোঝাতে চাইছে, সেটা বলে। দুটোই একসাথে প্রয়োগ করতাম। আরেকটা ব্যাপারও বলি – হয়তো যারা নতুন শিক্ষক হবে তাদের কাজে লাগবে। আমি সবসময় নিজেকে বিচার করতে থাকি- আমার কোন জায়গায় ভালো করা দরকার, এটা ভাবি- নিজেকে বারবার ভাঙ্গি, এক্সপেরিমেন্ট করি। এটা খুব জরুরী বলে আমি মনে করি।       

সোশ্যাল মিডিয়ার ইউটিউবে গণিতের বিষয়ে আপনার বেশ কিছু লেকচার আছে। কেন এবং কীভাবে এধরনের আইডিয়া নিয়ে কাজ করলেন?

পড়াতে অনেক ভালোবাসি। একটা সময় দিনে ১০ ঘণ্টাও ক্লাস নিয়েছি এবং বাধ্য হয়ে কিংবা অর্থাভাবে না, বেশি রকম ভালো লাগত বলেই নিয়েছি। বাইরে আসার পর এই ব্যাপারটাকে খুব মিস করছিলাম। তখন মনে হলো এমন একটা উপায় দরকার যেন আমি কোথায় আছি সেটা কোন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার না হয়ে দাঁড়ায়, যেন যেকোন জায়গা থেকেই শেখাতে পারি।  

তখনই সিদ্ধান্ত নিই ইউটিউবে ভিডিও করার। তবে এটা ভাবার তিন চার মাসের মধ্যেও কাজটা শুরু করতে পারছিলাম না।   প্রথমে ভেবেছিলাম খান একাডেমীকে অনুসরণ করব। কিন্তু তার জন্য টাচপ্যাড জাতীয় কিছু দরকার। সেটা ছিল না।   একটা সাধারণ মানের ছবি তোলার সনি সাইবারশট ক্যামেরা আছে, সেটা দিয়ে ভিডিও করা যায়। ভাবলাম সেটা দিয়েই শুরু করি। কিন্তু আবার ঝামেলা। গণিত পড়াতে গেলে সমীকরণ লিখতে হবে, বোর্ড লাগবে। সেটাও তো নেই। তখন মনে হলো ভিডিও এডিটিং দিয়েই তো উপরে লেখা বসিয়ে নেওয়া যাবে। এবার সমস্যা ভিডিও করবে কে? আরেকজন মানুষ পাওয়া ঝামেলা। বাসায় ট্রাইপডও ছিল না। তখন লাইটের স্ট্যান্ডের সাথে স্কচটেপ দিয়ে ক্যামেরা বেঁধে শুট করে ফেললাম। ব্যস! একেবারে কিছু ছাড়াই শুধু একটা সাধারণ ছবি তোলার ক্যামেরা দিয়ে গণিতের রঙ্গে শুরু হয়ে গেল!

তবে দুটো পর্বের পরে এখানে একজন বড় ভাই তার আরেকটু ভালো মানের ক্যামেরা ধার দিয়েছেন, আরেকজন দিয়েছেন ট্রাইপড। এখন সেগুলো দিয়েই ভিডিও করছি।   ইচ্ছেটাই আসলে অনেক বড়।



বাংলাদেশ তরুণ প্রজন্ম বদলে দেবে। এমন কথা সবাই বলে। তরুণ প্রজন্ম নিয়ে এখন রাজনীতিও তৈরি হয়েছে। সবাই তরুণদের জন্য কাজ করার আগ্রহ দেখায়। আসলেই কী তরুণদের জন্য দেশে ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে? নাকি তরুণরাই নিজেদের ক্ষেত্র তৈরি করে নিচ্ছে বলে আপনি মনে করেন?

আমি অনেক আশাবাদী মানুষ। তরুণ প্রজন্ম বাংলাদেশকে বদলে দেবে- এটা আমি বলি না। আমি বলি তারা বাংলাদেশকে বদলে দিচ্ছে!! এই প্রক্রিয়াটা আসলে শুরু হয়ে গেছে! একসময় শঙ্করের লেখা ‘জানা দেশ অজানা কথা’ পড়ার সময় মনে হতো আমেরিকা থেকে বাংলাদেশ কত বেশি পিছিয়ে! কিন্তু এখন আমেরিকা থেকে দেখে আমার দেশকে অতটা পেছনে মোটেই মনে হয় না।

আমি দেশ থেকে আসার আগে আমার গ্রামের বাড়ি থেকেও ইন্টারনেট ব্যবহার করেছি। আমি এখানে যে স্পিডের ইন্টারনেট লাইন ব্যবহার করছি, ঢাকাতে আমার বন্ধুদের অনেকেই একই স্পিডের কানেকশন ব্যবহার করছে। সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমেরিকার ছেলেমেয়েদের সবচেয়ে জনপ্রিয় সাইট হলো ফেসবুক, আমাদেরও তাই। যেকোন কিছু জানতে তারা প্রথমেই খোঁজে গুগল। আমরাও তাই। এটা এগিয়ে যাওয়ার মাপকাঠি না, তবে এগিয়ে যাওয়ার একটা শুভ সংকেত।  

প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও আমি সাধুবাদ জানাব। তারা মানসম্মত শিক্ষা দিতে পারুক বা না পারুক, তরুণদের একটা বড় অংশকে তারা হতাশা থেকে বাঁচিয়েছে। যে যেভাবেই দেখুক , এটা নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ।

এখন মানুষ আউটসোর্সিং সম্পর্কে জানছে। আমাদের ছেলেমেয়েরা ফ্রি-ল্যান্সিংয়ে কাজ করছে।   ক্রিকেটে, আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে, প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় আমরা নিয়মিতভাবে এখন ভালো করছি। ব্লগ, ফেসবুক, ইউটিউবের মতো সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলোর কল্যাণে জ্ঞানের এবং তথ্যের প্রবাহ বেড়েছে।

রাজনৈতিক সচেতনতা বেড়েছে। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের দল কারা এটা যেমন তরুণেরা জানে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হওয়া কতখানি জরুরী এটা যেমন তারা বোঝে, তারা এটাও জানে মুক্তিযুদ্ধ কোন একটা দলের একার সম্পত্তি না!     

সমৃদ্ধ দেশ গড়তে বর্তমান প্রজন্মকে কি করতে হবে বলে আপনি মনে করেন?

তাদেরকে প্রথমে ঠিক করে ফেলতে হবে, তারা কী করতে চায়। এবার অনেক বেশি এক্সপ্লোর করতে হবে। তারা যা করতে চায় তাদের সেই কাজটা আমাদের দেশে এবং সারা পৃথিবীতে কোথায় কিভাবে হচ্ছে সেটা জানতে হবে, বুঝতে হবে। আগে যারা এই জাতীয় কিছু করেছে তারা কিভাবে শুরু করেছে, তাদেরকে কী কী সমস্যায় পড়তে হয়েছে, কিভাবে সমাধানগুলো এসেছে এগুলো বিশ্লেষণ করতে হবে। তাহলে ধীরে ধীরে নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়বে। ‘আমি কেন পারব না’ -এই আত্মবিশ্বাস যখন চলে আসবে তখন একটু পরিকল্পনা করে উদ্যোগ নিয়ে নিতে হবে। কোন অবস্থাতেই হতাশা বেশিক্ষণ ধরে রাখা যাবে না।   তাদের ছোট ছোট উদ্যোগ এবং সেখানে ছোট ছোট সাফল্য দেশকে সমষ্টিগতভাবে বহুদূর নিয়ে যাবে বলে আমি মনে করি।

এখন আপনি পিএইচডি করছেন। ভবিষ্যতে নিজ দেশে ফেরত এসে কি করবেন? কিছু কি ভেবেছেন?
 
এখন আমি মাইক্রোওয়েভ ইঞ্জিনিয়ারিং-এ পিএইচডি করছি। নিজ দেশে ফেরত এসে জীবিকার জন্য হয়তো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করব। যদি সরকারী কোনটিতে শিক্ষক হিসাবে যোগ দেওয়ার সুযোগ পাই তাহলে খুবই ভালো। নয়ত বেসরকারীতে হলেও অসুবিধা নেই। যেখানেই যাই, গবেষণা ব্যাপারটা সেখানে আরও উজ্জীবিত করব। আর আমার সময়ের একটা বড় অংশ ব্যয় করব আমার স্বপ্নগুলোর পিছনে।

পড়ালেখা ব্যাপারটাকে কিভাবে অনেক বেশি আনন্দময় করে তোলা যায় সেটা নিয়ে কাজ করব। আরেকটা ইচ্ছে আছে। ইন্টারনেটে বাংলাদেশের উপর তথ্য খুব কম। একটা তথ্য আন্দোলনের মতো চালাতে চাই, যেন বাংলাদেশ সম্পর্কে যেকোন কিছু জানতে চাইলেই গুগলে খুঁজে পাওয়া যায়।  

আর গান নিয়ে খুব বড় কোন পরিকল্পনা আসলে নেই। এটা আমার হৃৎপিণ্ডের একটা অংশ, নিজের মত করে গান করে যাব। একটা শখ আছে – একটা অ্যালবাম বের করব কোন এক সময়। নিশ্চয়ই সেটা ফ্লপ অ্যালবাম হবে! তবে আমার পরিবারের পরের প্রজন্ম নিশ্চয়ই অনুপ্রাণিত হবে  । আমি স্বপ্ন দেখি বড়, খুশি হই অল্পতেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০২ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।