সিরাজগঞ্জ: ‘নুন আনতে পানতা ফুরায়’ এমনই অবস্থা লতার পরিবারের। ওর বাবা মোখলেস মিয়া রিকশা-ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করে যা আয় করেন, তা দিয়েই চলে সংসার।
অথচ এই দরিদ্রদশা দমাতে পারেনি লতাকে। কঠিন অধ্যাবসায় আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে সে চালিয়ে গেছে লেখাপড়া। সাফল্যও ধরা দিয়েছে। সিরাজগঞ্জ টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়েছে লতা খাতুন।
তার এ সাফল্য দরিদ্র পরিবারটিতে যেন প্রাপ্তির উচ্ছ্বাস বয়ে আনে। লতার গৃহিণী মা ফুয়ারা বেগম সে অনুভূতিই ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি মেয়ের উচ্চশিক্ষা নিয়েও রয়েছে তাদের মনে নানা শঙ্কা।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চন্দ্রকোণা পূর্বপাড়া (কুশাহাটা) গ্রামে লতাদের বাড়ি। চার ভাইবোনের মধ্যে লতা তৃতীয়। বাবা-মায়ের পাশাপাশি মামা ও অন্যান্য স্বজনরাও তার লেখাপড়ার জন্য সাহায্য করেছেন। সবাই বুঝতে পেরেছিলেন মেয়েটি ভালো ফলাফল করবে।
লতার স্বপ্ন প্রকৌশলী হয়ে দেশের সেবা করার। সে পরিবারের হাল ধরবে, ঘুঁচাবে দারিদ্র্য। এজন্য তাকে পাড়ি দিতে হবে আরও অনেকটা পথ। কিন্তু লতার বাবা মোখলেস মিয়া মেয়ের কলেজে ভর্তি নিয়েই অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। এতো ব্যয়ভার তিনি কীভাবে বহন করবেন সে চিন্তায় দিশেহারা।
কারণ তার নিজের কোনো জায়গা-জমি নেই। সন্তানদের তিনবেলা পেটপুরে খেতে দিতে পারেন না। যে কারণে লতাও পুষ্টিহীনতায় ভুগছে।
তারপরও আশা ছাড়েনি পরিবারটি। যদি সমাজের সহৃদয়-বিত্তবানরা একটু এগিয়ে আসেন। সবার সহযোগিতায় তার মেধাবি মেয়েটি জীবনের ইপ্সিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে এমনই বিশ্বাস লতার দরিদ্র বাবার।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৬ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১২
সম্পাদনা: রোকনুল ইসলাম কাফী, নিউজরুম এডিটর/সাইফুল ইসলাম, কান্ট্রি এডিটর