ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

বাগিচার বুলবুলি প্রেসক্লাবে

রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২:৫৪, জুন ৩, ২০১২
বাগিচার বুলবুলি প্রেসক্লাবে

বাগিচায় বুলবুলি তুই গুল শাখাতে দিসনে আজি দোল,
আজো তাই ফুল কলিদের ঘুম টুটেনি তন্দ্রাতে বিলোল-

বাগিচার গুল শাখাতে আজ আর বুলবুলিদের দোল খেতে দেখা যায় না। নাগরিক জীবনে আজ ফুল-কলিদের ঘুম টুটে যায় যান্ত্রিক কোলাহলে।



কবি নজরুলের প্রিয় এই বুলবুলি পাখি আজ প্রায় হারিয়ে গেছে দৃষ্টি থেকে, হয় তো বা খানিকটা আমাদের স্মৃতি থেকেও। ব্যস্ত নগর জীবনে, জীবনের প্রয়োজন মেটানোর লড়াইয়ে ব্যস্ত লোকেদের কারই বা আর অবসর আছে বুলবুলিদের খবর নেওয়ার!

তবে এতসব বৈপরীত্যের পরও নজরুলের গানে-কবিতায় বারবার জীবন্ত হয়ে ওঠা সেই বুলিবুলি কিন্তু একেবারে হারিয়ে যায়নি, এমনকি ইট-পাথর-কংক্রিটের কর্কশ এই জঙ্গল- রাজধানী ঢাকায় তারা রীতিমমত ঘরসংসার পেতে বসবাস করছে। কোনো গাছের খোড়লে, ডালের ফাঁকে, হঠাৎ রমনার মত কোনো মরুদ্যানে ঘন সবুজ পল্লবের স্নিগ্ধ মায়ায় দেখা পাওয়া যায় গানের পাখি বুলবুলিদের।

সেখানে তারা এখনও বাঁধে নীড়, ডিম দেয়, ছানা ফোটায়। সেই ছানারা বড় হয়ে হয়ত ঠিকই দোল খায় কোনো না কোনো গুল শাখায়।

এ রকমই এক বুলবুলি পাখি বাসা বেঁধেছে জাতীয় প্রেসক্লাবের ছায়া সুনিবিড়, সবুজ ঘন পল্লবের ফাঁকে, পরম নিশ্চিন্তে। সেই বাসার পাশে কান পাতলে এখন শোনা যায় বুলবুলির ছোট্ট ছানাদের কিচির মিচির। bird

বাংলানিউজের চিফ ফটো করেসেপন্ডেন্ট জীবন আমীরের ক্যামেরার অনুসন্ধানী চোখে ধরা পড়েছে বুলবুলির বাসা বোনা, ডিমপাড়া আর তা দিয়ে ছোট্ট তুলতুলে ছানা ফোটানোর বিভিন্ন মুহূর্তের কিছু চিত্র।

গত প্রায় ১৫ দিন আগে ৩টি ডিমসহ বুলবুলির বাসাটি জীবন আমীরের চোখে প্রথম ধরা পড়ে। ডিম ফুটে ছানা ফুটে বের হওয়ার অপেক্ষায় সেই থেকে জীবন আমীর চোখ রাখছিলেন বাসাটির ওপর। অবশেষে ১৫ দিন অপেক্ষার পর ডিম ফুটে ছানা বের হলে ক্লিক করে ওঠে তার ক্যামেরা।

যান্ত্রিকতার বেড়াজালে যেখানে মানবিক অনুভূতিগুলো আজ ভোতা হয়ে যাচ্ছে, যেখানে সকালে পত্রিকা মেললে চোখে পড়ে ১৮ টুকরো লাশের ছবি। সেখানে হঠাৎ করে সবুজের মায়ায় লালিত বুলবুলি মায়ের পরম স্নেহে পালিত কয়েকটি ফুটফুটে ছানার দৃশ্য হয়ত আমাদের মনে এনে দিতে পারে এক পশলা ভালো লাগা, এক পশলা ভালোবাসা।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৪ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০১২
সম্পাদনা: আহ্সান কবীর, আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।