ঢাকা: গ্যালারিতে চিল্লিয়ে গলা ফাটানো, উত্তেজনার বশে পিটিয়ে ড্রাম ফাটানো বা লাফাতে লাফাতে আচমকা হুমড়ি খেয়ে কারো গায়ে পড়ে ঝগড়া বাঁধানো- ফুটবল পাগলদের এমন ঘটনা বিরল নয়। কিন্তু টেলিভিশনে খেলা দেখতে দেখতে জীবন বলি দেওয়ার ঘটনা সম্ভবত একটিও নেই।
জিয়াং জিওশান (২৬), চলতি ইউরো ফুটবল ম্যাচের একটি কিকও মিস করতে চাননি। তাই টানা ১১ রাত ঘুমাননি তিনি। অবশেষে যা হবার তাই হলো- অতিরিক্ত ক্লান্তিতে বেঘোরে প্রাণ দিলেন।
ব্রিটিশ পত্রিকা ডেইলি মেইল জানিয়েছে, জিয়াং ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স দলের অন্ধ ভক্ত। একটানা খেলা দেখতে গিয়ে মাত্রাতিরিক্ত ক্নান্তিতে গত মঙ্গলবার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।
জানা যায়, সময় পার্থক্যের কারণে খেলা দেখার জন্য প্রতি রাতেই জেগে থাকতে হতো। দিনের বেলা কাজে বের হতেন আর রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রাত জেগে হুইহুল্লোর করে খেলা দেখতেন জিয়াং।
জিয়াংয়ের বন্ধুরা জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার আয়্যারল্যান্ড ও ইতালির মধ্যকার ম্যাচটি দেখার পর ভোর ৫টার দিকে চাংশায় (হুনান প্রদেশের রাজধানী) নিজ বাড়িতে ঘুমাতে যান তিনি। এর পর আর জেগে ওঠেননি।
ফুটবল পাগল এ বন্ধুর মৃত্যুতে তারা চরমভাবে মর্মাহত। তারা জানান, জিয়াং খুব ভাল স্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন। মাত্র কয়েক বছর আগেও তিনি তার বিশ্ববিদ্যালয় টিমের হয়ে ফুটবল খেলতেন নিয়মিত।
তবে শুধু না ঘুমানোর কারণে জিয়াংয়ের মৃত্যু হয়েছে এমনটা বিশ্বাস করতে পারছেন না অনেকে। ডেইলি মেইল জানিয়েছে, একটি সূত্র মতে খেলা দেখার সময় অ্যালকোহল, তামাক সেবন এবং অবিরাম ক্লান্তি এসব মিলিয়ে তিনি অত্যন্ত দূর্বল হয়ে পড়েছিলেন। এতে করে তার প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হয়।
তবে ফুটবল পাগলদের এমন করুণ পরিণতির ঘটনা আরো আছে।
২০০৬ সালে জার্মানি বিশ্বকাপ ফুটবল এবং ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা ফুটবল কাপ চলাকালীন না ঘুমিয়ে স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ায় অনেক মানুষ হাসপাতালের স্মরণাপন্ন হয়েছে।
নিদ্রাহীনতা সমস্যা অবশ্য নতুন প্রজন্মের শিশু তরুণদের মধ্যেও ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, অনলাইন ভিডিও গেমস খেলার নেশায় পড়ে নিদ্রাহীনতায় আক্রান্ত হওয়ার সমস্যা এখন দক্ষিণ কোরিয়ার মাথাব্যাথার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে তাইওয়ানে এক তরুণ সাইবার কেফেতে ভিডিও গেমস খেলা অবস্থায় মারা যায়। আর ওই অবস্থায় সে টানা নয় ঘণ্টা পড়ে ছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১২
সম্পাদনা: জাহাঙ্গীর আলম, নিউজরুম এডিটর