ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

গৌরীপুরে চালের কেজি ১০ টাকা!

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:১৭, জুন ৩০, ২০১২
গৌরীপুরে চালের কেজি ১০ টাকা!

ময়মনসিংহ: বিরোধী দলের দাবি, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়ানো। আওয়ামী লীগ তা বরাবরই অস্বীকার করেছে।

তারপরও ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির খবর পাওয়া গেছে।

তবে এ দরে সাধারণ ক্রেতারা চাল পাচ্ছেন না। চাল পাচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় গুটিকয়েক প্রভাবশালী ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) সিন্ডিকেট।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গৌরীপুর উপজেলায় সাধারণ ও বিশেষ কোটায় মে ও জুন মাসে খাদ্য অধিদপ্তর থেকে ৩শ ৫৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়।

বিভিন্ন ধর্মীয়, শিক্ষা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দকৃত এ চাল উত্তোলনের শেষ তারিখ ছিল ২৮ জুন।

নীতিমালা অনুযায়ী, এ চাল উত্তোলন করে প্রকল্প স্থলে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্প কমিটির সভাপতিরা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস থেকে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) সরবরাহের পর তা উপজেলার গুটিকয়েক সিন্ডিকেটের কাছে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন।

এক্ষেত্রে ওইসব প্রভাবশালী সিন্ডিকেট তাদের নির্ধারিত মূল্য প্রতি কেজি ১০ টাকা হিসাবে প্রতিটন চাল সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা প্রকল্প কমিটির হাতে দিয়ে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) হাতিয়ে নিয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলার মাহমুদ নগর মসজিদ কমিটির সভাপতি আ. করিম বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রকল্পের চাল বিক্রির ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সে ক্ষেত্রে খাদ্য গুদাম থেকে যে চাল সরবরাহ করা হয়, তা মানুষের খাবারের সম্পূর্ণ অনুপযোগী। ’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘এ প্রভাবশালী ডিও সিন্ডিকেটকে পাশ কাটিয়ে অন্য কোনো ব্যবসায়ী বরাদ্দকৃত চাল ক্রয় করার সাহস রাখেন না। এ কারণে বাধ্য হয়েই সিন্ডিকেট নির্ধারিত মূল্যে ১০ টাকা কেজি দরে আমার প্রকল্পের চাল বিক্রি করতে হয়েছে। ’

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) সিন্ডিকেটের এক সদস্য প্রতি টন চল ১০ হাজার টাকা দরে ক্রয়ের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘১০ হাজার টাকার সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস খরচ, সরকার দলীয় ফান্ড, খাদ্য অফিস, খাদ্য গুদাম, থানা পুলিশ, পরিবহন, লেবার, মাস্টার রোল প্রভৃতি মিলিয়ে আমাদের টনপ্রতি ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা আরও অতিরিক্ত খরচ করতে হয়। ’

তিনি আরও বলেন, ‘এসব খরচ ও প্রকল্প মূল্য পরিশোধ শেষে তাদের সর্বোচ্চ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫ শ টাকা করে লাভ থাকে। ’
 
এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তারাপদ চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রকল্প সভাপতিরা ডিও উত্তোলনের পর প্রকল্পের চাল কীভাবে ব্যবহার করলেন, তা দেখার দায়িত্ব আমার নয়। ’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে চালের বাজার যে কোনো সময়ের তুলনায় কম থাকায় শুধু প্রকল্পের চাল নয়, সব রকমের চালই সর্বনিম্ন দরে বিক্রি হচ্ছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৭ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১২
সম্পাদনা: আশিস বিশ্বাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।