ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

আনন্দ ঘন একদিন.......

মুহাম্মদ আতাউর রহমান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:০৬, জুলাই ১০, ২০১২

“দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া ঘর হতে দুই-পা ফেলিয়া, একটি ঘাসের শীষের ডগায়, একটি শিশির বিন্দু। ” সত্যিই কবির এই পংক্তির সঙ্গে আমরা মিল খুঁজে পাই সাটুরিয়ার ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়িটি দেখে।

এত চমৎকার হতে পারে এই জমিদার বাড়ী যা বলার নয়।

দনটি ছিল শনিবার- ৭ জুলাই। অগ্রণী ব্যাংক লিঃ  ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের ১০২ ও ১০৩তম ব্যাচের প্রশিক্ষণকালীন সিনিয়র অফিসারদের শিক্ষাসফর। প্রশিক্ষনার্থীরা নবীন সিনিয়র অফিসার হওয়ায় আয়োজন ছিল বেশ জাকালো। নয়াপল্টন ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের সামনে সবাই উপস্থিত হলাম। পুরুষদের গায়ে দিনের নির্ধারিত টি শার্ট এবং মহিলাদের গায়ে রঙ-বে-রঙয়ের পোশাক।

সকলে হৈ-হুল্লোর করে ক্যামেরাবন্দি হলাম। তারপর ধীরে ধীরে গাড়িতে উঠে বসলাম। আমাদের জন্য ছিল ১০২ নাম্বার গাড়ি। গাড়ির ভেতরে সকলের স্বরচিত ধূমধামাক্কা গান এবং বোতলের বাজনার তালে তালে রক স্টাইলের নাচে যেন আমরা হারিয়ে গিয়েছিলাম। দীর্ঘ ৬০/৭০ কিলোমিটার পথের যাত্রা যেন আমাদের আবেগের কাছে দ্রুতই সাড়া দিল। পৌছে গেলাম মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়িতে।

শত বছরের সুবিশাল বাড়ি কালের সাক্ষী হয়ে আজও দন্ডায়মান। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক মহাদয়ের নেতৃত্বে প্রবেশ করলাম জমিদার বাড়িতে। প্রবেশদ্বারের বাহারি পিলার দেখে সবার শরীর-মনে শীতল আবেশ মেখে গেল।

সকলেই ভিতরে প্রবেশ করলাম। বাড়িটির ভিতরের বাহারী শৈলি আর নজরকাড়া সব প্রতœতাত্ত্বিক নির্দশনে আমাদের ক্লান্তি দূর হয়ে গেল। ঘুরে ঘুরে সব পোট্রেট ও চমৎকার নিদর্শন দেখলাম। এরমধ্যে তৎকালীন রাজা-রানীর শয়নকক্ষ আমাদেরকে নতুন চমক দিল।

সবাই বলে উঠল, এত চমৎকার কি হতে পারে মানুষের শোবার ঘর! সেগুলো ক্যামরা বন্দি করলাম। তারপর পাশের সব কিছু দেখলাম ও দল বেঁধে ছবি উঠাতে লাগলাম। জমিদার বাড়ির পিছনে সাতঘাটবিশিষ্ট পুকুর দেখে আমরা চমকে গেলাম। তারপর চলতে লাগলাম পরবর্তী স্পট মোহাম্মাদিয়া গার্ডেনের দিকে। পেটে ক্ষুধা থাকলেও দ্বিতীয় স্পটে যাওয়ার আকাঙ্খা একটু আলাদা। দুপুরের পরে সেখানে গেলাম।

ভেতরে প্রবেশ করে সুইমিংপুল দেখে ভ্যাপসা গরমকে বাজিমাত করতে ঝাঁপিয়ে পড়লাম। প্রায় ঘন্টাব্যাপী লাফালাফিতে ও চালতার বল  খেলায় ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। এরপর দুপুরের খাবার শেষে অনুষ্ঠান স্থলে সারিবদ্ধ ভাবে বসে পড়লাম যদু-মধু আর জরিনার গান শুনতে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ বিয়ের বাজারে সরকারি ব্যাংকারের চেয়ে বেসরকারি ব্যাংকারের কদর বেশি” শীর্ষক রম্য বিতর্ক প্রতিযোগিতা। বিতার্কিক আমার সহকর্মী দেবব্রত মল্লিকের টাকমাথার উদাহরণ আমাদের অনুষ্ঠানের সকলকেই অট্রহাসি দেয়।

সবাই তীর্থের কাকের মত অনুষ্ঠান উপভোগ করলাম। ধীরে ধীরে সূর্য তার নিয়মে অস্ত যেতে লাগল আমরাও অনুষ্ঠান শেষ করে গান গাইতে গাইতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। গাড়িতে ক্যামেরার ছবি দেখা আর অনুষ্ঠানের স্মৃতিচারণ আরো আনন্দ দেয়।

বাংলাদেশ সময় : ১২৪৭ ঘন্টা, জুলাই ১০, ২০১২
লেখক : সিনিয়র অফিসার, রাজারহাট শাখা, কুড়িগ্রাম, সম্পাদনা : সুকুমার সরকার, কো-অর্ডিনেশন এডিটর
Kumar.sarkerbd@gmail.com

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।