ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৯ মে ২০২৫, ২১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

এবার কাদা দিয়ে তৈরি হবে ইউরিয়া সার

মামুন খান, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:৩২, জুলাই ১৬, ২০১২
এবার কাদা দিয়ে তৈরি হবে ইউরিয়া সার

ময়মনসিংহ: কাদাকে আর অবহেলা নয়। কারণ এবার পাঙ্গাস মাছের খামারের কাদা দিয়ে তৈরি হবে ইউরিয়া সার।



সম্প্রতি এটি উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল হক। তিনি এ প্রযুক্তির নাম দিয়েছেন ‘ব্যাগ গার্ডেনিং’।

বিশ্বের সর্বোচ্চ পাঙ্গাস উৎপাদনকারী দেশ ভিয়েতনাম ইতোমধ্যে এ প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেছে বলে তিনি জানান ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে পাঙ্গাস মাছের উৎপাদন প্রায় ৫ লাখ টন। তবে ব্যবসায়ীদের মতে, বর্তমানে এ মাছের উৎপাদন ৮ লাখ টনের কাছাকাছি।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল হক জানান, প্রথমে পুকুরে পাঙ্গাস চাষের পর ওই পুকুরের কাদাকে জমির পাড়ে নিয়ে আসতে হবে। পরে এটি শুকানোর পর প্লাস্টিকের ব্যাগে তা ভর্তি করে বাজারজাত করার উপযোগী করতে হবে।

তবে তিনি জানান, এসব মাটি সবজি চাষের জমিতে ব্যবহার করলে ফলন আরও ভালো হবে।

তথ্য মতে, বাংলাদেশের খামারে সবচেয়ে বেশি নিবিড় প্রক্রিয়ায় পাঙ্গাস মাছ চাষ করা হয়। আর প্রতি কেজি পাঙ্গাসের জন্য প্রতিদিন দুই কেজি পিলেট খাবার প্রয়োজন। প্রতি হেক্টরে ৬০ থেকে ৭০ হাজার পোনা ছাড়া হলে প্রতি বর্গমিটারে ১০ থেকে ১২ কেজি খাবার মাটিতে পড়ে থাকে। এছাড়া মাছের বিষ্ঠা ও অন্যান্য জৈব সার, মাছের খাদ্যের অব্যবহৃত অংশ পুকুরের তলায় গিয়ে জমা হয়।

এ উদ্ভাবক আরও জানান, এসব খাবারের ৩০ শতাংশ নাইট্রোজেন মাছের দেহে ব্যবহার হয়। বাকি ৭০ শতাংশ পুকুরের তলানিতে গিয়ে জমা হয়। সেটি নষ্ট হয়না। সেখানে জমা থাকে। এ হিসেবে এক হেক্টর জমির তলানিতে ৮ হাজার ৭০০ কেজি ইউরিয়া সার তৈরি হয়।

পাঙ্গাস মাছের পুকুরে প্রচুর পরিমাণ নাইট্রোজেন থাকে। এক হেক্টর পাঙ্গাসের পুকুরে প্রায় ১৫ টনের মতো ইউরিয়ার সমপরিমাণ সার পাওয়া যায়। যার বাজারমূল্য প্রায় ৩ লাখ টাকা।

ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল হক জানান, এসব কাদা থেকে জৈব সারও তৈরি করা যায়। সেই জৈব সার ব্যবহার করে বসতবাড়িতে সবজি চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে। এছাড়া খামারে পরিবেশ বিপর্যয় অনেকাংশেই ঠেকানো সম্ভব।

তিনি বলেন, ‘সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে এলে এ প্রযুক্তির মাধ্যমে বসতবাড়িতে সবজি চাষে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৬,২০১২
সম্পাদনা: মাহাবুর আলম সোহাগ ও রোকনুল ইসলাম কাফী, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।