ঢাকা : রমজান এলেই রাজধানীর পাঁচতারকা হোটেল রূপসী বাংলায় ইফতারের মেলা জমে ওঠে। নানা রকম জনপ্রিয় আর সুস্বাদু ইফতারের পসরা নিয়ে সাজানো রূপসী বাংলার বুফে সবার কাছেই বেশ জনপ্রিয়।
কেবল খাবারের মান নয়, আয়োজন আর আতিথেয়তায় এ হোটেলের বেশ নাম ডাক রয়েছে। হোটেলটির অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিকেশন ম্যানেজার জিয়া মহিউদ্দিনের কাছ থেকে এ বিষয়ে জানা গেলো।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, “আমরা উন্নত ও জনপ্রিয় খাবার পরিবেশনের পাশাপাশি ক্রেতাদের সময়টা সুন্দর করে তোলার সর্বোত্তম চেষ্টা করি। এ জন্য প্রতিবছরই রোজা এলে ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় রূপসী বাংলার নামই সবার আগে আসে। ”
রমজান উপলক্ষে হোটেল রূপসী বাংলায় আকর্ষণীয় অফার রয়েছে বলেও জানায় হোটেল কর্তৃপক্ষ। এখানকার সবচেয়ে বড় মিলনায়তন উইন্টার গার্ডেন বুকিং দিয়ে হল ভাড়ায় পুরোপুরি ছাড় পাওয়া যাবে, সঙ্গে কেবল ৩০০ জনের বেনকুইট খাবার অর্ডার দিলেই। একই সুবিধা পাওয়া যাবে বলরুমের ক্ষেত্রেও। তবে বলরুমের আসন অনুযায়ী ২০০ জনের জন্য খাবার অর্ডার দিতে হবে।
জিয়া মহিউদ্দিন জানান, “ ‘বেনকুইট’ খাবারেই আমাদের বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠে। এ খাবারের মাধ্যমে সহজেই অন্য হোটেলের সঙ্গে আমাদের পার্থক্যটা তুলে ধরা যায়। আর এ খাবারটির জন্য সর্বাত্মকভাবে আমাদের শেফরা প্রয়াস চালান। ”
ইফতারের আয়োজনে রূপসী বাংলায় প্রতিদিন কমবেশি ১০০ প্রকার খাবার থাকে। দেশীয় ইফতারের সঙ্গে এখানে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ‘বড় বাপের পোলা খায়’ এবং শরবত ‘কামারুদ্দিনের’ ব্যবস্থাও রয়েছে। বাদ পড়েনি বিদেশি ইফতারও। মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব, ইরান আর অ্যারাবিক দেশগুলোর মত এখানেও তৈরি হয় সে সব দেশের জনপ্রিয় নানা ইফতার সামগ্রী। তবে দেশি বিদেশি সব আইটেমের মধ্যে ইরানি কাবাবের চাহিদা সবচে’ বেশি রয়েছে বলে জানান হোটেলটির সিনিয়র সুশেফ পিন্টু রোজারিও।
তিনি বলেন, “সম্পূর্ণ ইরানি নিয়মে এ কাবাবটি তৈরি করা হয়। কাবাবটি বেশ টেস্টি। এ জন্যই এ কাবাবের প্রতি সবার চাহিদা অনেক বেশি। ”
হোটেল রূপসী বাংলায় তৈরি পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবার ‘বড় বাপের পোলা খায়’ এরও চাহিদাও প্রচুর রয়েছে বলে জানা যায়। এখানে এ খাবারটি তৈরিতে এখানে মশলা ছাড়াও ২৪ প্রকার খাবরের মিশ্রণ হয়। এ খাবারটি কিনতে প্রতিদিন ক্রেতাদের ব্যাপক সমাগম ঘটে রূপসী বাংলায়।
রূপসী বাংলায় ইফতার করতে আসা রোটারী ক্লাব অব ঢাকা পাইওনিয়ারের আব্দুল্লাহ আল মারুফ রনি বাংলানিউজকে বলেন, “এখানকার ইফতারে একটা আনন্দ পাওয়া যায়। ইফতারের সময় ঘনিয়ে এলেই ইফতারের উৎসব আমেজটা ফুটে উঠে। সারাদিন রোজার ক্লান্তি নিমিষেই দূর হয়ে যায় বলেই ইফতার করতে এখানেই চলে আসি। ”
আলমগীর হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে বলেন, “আসলে রূপসী বাংলায় ইফতারে ঘরোয়া তৃপ্তি পাওয়া যায়। এখানকার পরিবেশটাও চমৎকার। সব মিলিয়ে এখানে ইফতারের আমেজটাই ভিন্ন। ”
রূপসী বাংলার পক্ষ থেকে জানানো হয়, বুফে ইফতারের পাশাপাশি এখানে তিনটি ভিন্ন প্যাকেজেও ইফতার পাওয়া যায়। বিভিন্ন মূল্যে এসব প্যাকেজের প্রচুর ক্রেতাও রয়েছে। তবে বুফে ইফতারের জন্য প্রতিদিনই অনেক ক্রেতার আগমন ঘটে। হোটেলে ‘বীথিকা’য় ইফতারের এ আয়োজন করা হয়ে থাকে।
রূপসী বাংলার ইফতার সামগ্রীতে অন্য সব আইটেমের পাশাপাশি ১০ এর অধিক প্রকারের হালিম, দুই প্রকারের শর্মা, শাহী জিলাপী ও অ্যারাবিক খাবারের সমাহার থাকে। অ্যারাবিক খাবারগুলোর মধ্যে উমালি, মাহ্লাবিয়া, বাসবুসা, বালাশাম ও অ্যারাবিক সুইটস্ সবার কাছে বেশ জনপ্রিয় বলে জানান অ্যাসিস্টেন্ট কমিউনিকেশন ম্যানেজার জিয়া মহিউদ্দিন।
এছাড়াও এখানকার সুইট শরবত, সল্ট শরবত, তরমুজ ও কমলার শরবত এবং কামারুদ্দিনের স্পেশাল শরবতের প্রতি সবারই একটা আকর্ষণ রয়েছে। ইফতারের সঙ্গে রূপসী বাংলায় এসব শরবত না হলে যেন অপূর্ণই থেকে যায়।
রমজানের প্রথম সপ্তাহের পর থেকে রূপসী বাংলার ইফতারের জন্য কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর দৌড় ঝাপ প্রতিবছরই বাড়ে। এবারেও ক’দিন পরেই এমনটি শুরু হওয়ার আশা করছেন হোটেলটির কর্তৃপক্ষ। তবে প্রতিদিন ইফতার করতে আসা মানুষের উপস্থিতি আশাব্যাঞ্জক বলেও মন্তব্য করেন হোটেল কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ সময় : ১৮৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১২
এমএ/ জেডএম